SIR-এর হাত ধরে বৃদ্ধাশ্রমে আনন্দ? মা-বাবার খোঁজ বাড়াচ্ছেন সন্তানরা
এসব সম্ভব হয়েছে “SIR” চালু হওয়ার জন্যই। রাজ্যের বিভিন্ন বৃদ্ধাশ্রমে এই নতুন দৃশ্যের দেখা মিলছে।
Truth Of Bengal: এক সময় যেসব মা-বাবাকে সমাজের এক প্রান্তে সরিয়ে দিয়েছিল। আজ আবার তাঁদেরই খোঁজ নিচ্ছে সম্পর্ক ‘ভুলে’ যাওয়া সন্তানরা। এই সন্ধান কিন্তু ভালবাসার টানে নয়, নিতান্তই ‘বিপদে’ পড়ে অতীতের মানুষগুলোর খোঁজ করছেন কেউ কেউ। এসব সম্ভব হয়েছে “SIR” চালু হওয়ার জন্যই। রাজ্যের বিভিন্ন বৃদ্ধাশ্রমে এই নতুন দৃশ্যের দেখা মিলছে।
বহু বছর যাদের খবর কেউ নেয়নি, সেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের হঠাৎ ফোন করছে সন্তানরা, কেউ আসছে দেখা করতে, কেউ বা আসছেন কাগজ পত্র নিতে। রানাঘাট পুরাতন চাপড়ায় জগদীশ মেমোরিয়াল বৃদ্ধাশ্রমে এই পরিবর্তন স্পষ্ট। সম্পাদক গৌর হরি সরকার জানান, “আমাদের আশ্রমে প্রায় চুয়াল্লিশজন মা-বাবা রয়েছেন। নদিয়া, বর্ধমান এমনকি কলকাতা থেকেও অনেকে এখানে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু SIR চালু হওয়ার পর থেকেই হঠাৎ করেই সন্তানদের আগ্রহ বেড়েছে। আগে যাদের দেখা মিলত না, এখন তারাই প্রায় প্রতিদিন ফোন করছেন।”
পাঁচ বছর ধরে এই আশ্রমে কর্মরত রুমা দেবনাথও একই চিত্র দেখছেন। তিনি বলেন, “আগে অনেকেই নিজের বাবা-মায়ের খোঁজ নিতেন না। কিন্তু এখন অনেকে এসে জানতে চাইছেন, মা-বাবা কেমন আছেন, কিছু লাগবে কি না।” তবে এই যত্নের আড়ালে যে স্বার্থের গন্ধ লুকিয়ে আছে, তা কেউই অস্বীকার করছেন না। ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের নাম রাখা এখন প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে, সেই নামেই জড়িয়ে রয়েছে সন্তানদের ভবিষ্যৎ বা রাজনৈতিক স্বার্থ। অন্যদিকে বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের মনে মিশ্র অনুভূতি। কেউ আনন্দে চোখের জল ফেলছেন সন্তানদের ফিরে পেয়ে, কেউ আবার চুপচাপ তাকিয়ে রয়েছেন দূরে। তবুও তাদের মুখে একটাই কথা “ছেলেমেয়েরা যেন ভাল থাকে।”
এই দৃশ্য যেন সমাজকে নতুন করে প্রশ্ন ছুড়ে দেয় ভালবাসা কি শুধুই প্রয়োজনে জাগে? নাকি SIR-এর মতো এক নীতিই আমাদের মনুষ্যত্বকে ফিরিয়ে আনবে, যদিও স্বার্থের পথ ধরে।






