রাজ্যের খবর

জগন্নাথের দুহাতের জাদু! আনন্দ যজ্ঞের আসর মাত    

Jagannath Ghosh continues to perform puja despite the obstacles

Truth of Bengal: একসময় রেল দুর্ঘটনায় কাটা পড়েছিল তাঁর পা। প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে এখনও পুজোর আসর মাতান জগন্নাথ ঘোষ। কোন্নগরে ঢাকের প্রতিযোগিতায় দুহাতের জাদুতে শ্রোতাদের মনজয় করে নেন জগন্নাথ। তালবাদ্য শিল্পের এই জাদুকরের প্যাশন দেখে অনেকেই বলেন, এ এক অন্য শিবমনি,যিনি খ্যাতির আলোকবৃত্তের বাইরে থাকা এক শিল্পী।

ঢাক বাজা, কাঁসর বাজা, উলু দে আর শাঁখ বাজা,বছর পরে আবার এলো মা যে পুজো পুজো গন্ধ নিয়ে। পুজোর গন্ধ ছড়াতে যাঁরা সাহায্য করেন, সেই ঢাকশিল্পীদের নিয়ে কোন্নগরে হয় প্রতিযোগীতা। কার ঢাক কত জোরে বাজে বা কে তালবাদ্যকে শ্রুতিনন্দন করতে পারে তার কেরামতি দেখানো হয় সেখানে। বাদ্যশিল্পীরা বাজনার আসরে নজরকাড়ার চেষ্টা করেন।

আর এই উত্সবের আঙিনায় দেখা মেলে এক অন্যরকম ঢাকির।যিনি রেল দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন পা।হাঁটতে চলতে গেলে প্রতি পদে বাধা। তবু প্রতিবন্ধকতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে ঢাকের উল্লাস ছড়িয়ে দেন। বাদনশৈলীতে শ্রোতাদের মোহিত করেন, মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন আমজনতাকে। সেই শিল্পীর জীবন সংগ্রামের কথা আমরা বাংলা জাগোর প্রতিবেদনে তুলে ধরলাম।

কারণ ঢাকশিল্পী জগন্নাথ ঘোষ,ঢাকের তালকে ভেঙে বাজান, নিজের মতো করে,যা শুনে করতালি আর অভিনন্দনের জোয়ার বয়ে যায়। ১০০শতাংশ প্রতিবন্ধী হয়েও বছর একাত্তরের জগন্নাথ ঘোষ দুহাতে জাদু দেখান। জনতার মনজয় করতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। জাদুকরের বাজনা যাঁরা শোনেন তাঁরা মোহিত হয়ে যান, শারিরীক সমস্যার মাঝেও আনন্দ ষজ্ঞকে নিজেকে মেলে ধরতে পেরে মন খুশিতে ভরে ওঠে তাঁর।

তাই কেউ কেউ মজা করে ডাকেন শিবমনি বলে।সারা দেশে যিনি ড্রামস শিবমনি নামেই পরিচিত। তাঁর শ্রুতিমধুর বাদন দক্ষতা আজও ভূভারতের মানুষকে মুগ্ধ করে। সেই শিল্পীর শিল্পকর্মের তারিফ করেন ৮থেকে ৮০ সকলেই। আর এই আলোর বৃত্তের বাইরে থাকা মেঘে ঢাকা তারাদের মধ্যে এই জগন্নাথ হয়ে উঠেছেন ঢাকের শিবমনি।

তাঁর লড়াইয়ের রসদ জোগাতে বাংলার সরকার এগিয়ে এসেছে। শিল্পীদের মুখে হাসি ফোটাতে রাজ্য সরকারের সাহায্য করায় এইসব শিল্পীদের জীবনের লড়াই  অনেকটাই সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে বলে এই ঢাক শিল্পী জানান। অতীতের কথা বলতে গিয়ে ছোট বয়সে চলে যান। যখন তাঁর তাল-ছন্দ শুরু হয়েছিল।

১৫বছরেই জগন্নাথের হাতের কাজ দেখে ঢাক কিনে দেন হিন্দমোটরের কালী মন্দির কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন ঢাক বাজিয়ে আসর মাত করতেন তিনি। তারপর লড়াই কঠিন হলেও একটি প্রতিবন্ধী গাড়িতে ছোটদের স্কুলের সামনে বাদাম, হজমি, ডালমুড এইসব বিক্রি করেন। আর পুজোর দিনগুলোতে ঢাক বাজিয়ে সবাইকে আনন্দ দেন। ঢাক বাজানোর জন্য তাঁর কাছে ডাকও আসে বহু দূর দূরান্ত থেকে। একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন জগন্নাথ ঘোষ। তবে মানুষের প্রশংসাই তাঁর কাছে বড় পুরস্কার।

Related Articles