রাজ্যের খবর

Malda: সত্তরের কোঠাতেও কলমের জোর অটুট! রাত-দিন এক করে গ্রামের মানুষের SIR ফর্ম পূরণ করে চলেছেন

জানা যায় মালদার চাঁচল ২ ব্লকের চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুর বুথের বাসিন্দা মোহাম্মদ হাকিমুদ্দিন বর্তমানে এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা।

অভিষেক দাস,মালদা: বয়স তার সত্তরের কোঠায়, তবুও হাতে এখনও কলমের জোর অটুট। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তিনি থামেননি। অবসর জীবনের শান্ত দুপুরেও একের পর এক SIR ফর্ম পূরণ করে দিয়ে মানুষকে সাহায্য করেছেন গ্রামের হাকিম চাচা । অন্যের কাজ করেই তিনি খুঁজে পান নিজের তৃপ্তি। হাকিম বাবুর এই কর্মকাণ্ড কে কুর্নিশ জানালো গ্রামবাসীরা। জানা যায় মালদার চাঁচল ২ ব্লকের চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুর বুথের বাসিন্দা মোহাম্মদ হাকিমুদ্দিন বর্তমানে এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা। এসআইআর নিয়ে যখন গ্রামের সাধারণ মানুষ আতঙ্কে, সেই দুঃসময়ে আশার আলো হয়ে দাড়িছেন তিনি। সকাল বিকেল গ্রামের মোড়ে টেবিল পেতে তিনি বাসিন্দাদের ইউনিওমারেসেন ফর্ম পূরণ করে চলেছেন।

দিনভর ব্যস্ততা পেরিয়ে রাতেও তার বিশ্রাম নেই। বাড়িতেও ভিড় জমাচ্ছেন এলাকার খেটে খাওয়া মানুষজনেরা। এলাকার বহু শ্রমিক ভিনরাজ্যে কর্মরত। বাড়িতে পরিযায়ী শ্রমিকদের সদস্যরা ফর্ম পেয়ে হতাশায় পড়লেও সেই অসুবিধে কাটাচ্ছেন হাকিম চাচা। শুধু নিজের বুথ নয়, পাশের চন্ডীপুর ও কানাইপুর এলাকার বাসিন্দারাও ছুটে আসছেন তার কাছে বলে। স্থানীয় সূত্রে জানাগিয়েছে, গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা শিক্ষায় পিছিয়ে। কেউ দিনমজুর, কেউ চাষি, আবার অনেকে ভিনরাজ্যে কাজ করেন। ফলে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য জটিল ফর্ম পূরণে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। সেই অসুবিধা কাটাতেই নিজ উদ্যোগে কাজ শুরু করেন হাকিম চাচা।মানুষজনকে ফর্ম নিয়ে ছুটোছুটি করতে দেখেই সহায়তা করার উদ্যোগ নেন তিনি। তিনি বিনা পারিশ্রমিকে ফর্ম পূরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় বিএলওর কাছ থেকে নিয়মাবলী জানার পাশাপাশি ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখে ফর্ম পূরণে নিজেকে আপডেট রাখছেন তিনি। দৈনিক প্রায় ৩০ জন মানুষের ফর্ম তিনি পূরণ করছেন বলে জানিয়েছেন। তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গোয়ালপাড়া হাইস্কুল। সেখানে ১৯৭২ সালে মাধ্যমিক পাশ করেছেন। স্কুলে শিক্ষাগতার পাশাপাশি তিনি এলাকায় একসময় টিউশন পড়াতেন। নার্সারি স্কুলের শিক্ষকদের পরামর্শ দিতেন। এমনকি নাইট স্কুল চালিয়ে এলাকার নিরক্ষর মানুষদের সাক্ষর করাতেন। বয়সের ভারে বর্তমানে তেমন দৌড়ঝাঁপ করতে না পারলেও, গ্রামের মানুষদের বিভিন্ন আবেদনপত্র, সরকারি নথি ও অভিযোগপত্র লিখে দিতে সহায়তা করেন।

Related Articles