ধূপগুড়িতে ভূতের আতঙ্ক, বিজ্ঞান মঞ্চ বলছে — কুসংস্কার
Fear of ghosts in Dhupguri, Vigyan Mancha says — superstition

Truth Of Bengal: ধূপগুড়ির চৌকিদারটারি গ্রামে এক যুবকের ‘ভূতে ধরা’ কাণ্ডে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সি আব্বু আলম হঠাৎই অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকায় ছড়ায় আতঙ্ক।
সোমবার বিকেলে বাজার থেকে ফেরার পথে রাস্তার পাশে একটি পলাশ গাছের তলায় প্রস্রাব করার পর থেকেই আব্বুর আচরণ পাল্টাতে শুরু করে। তাঁর চোখ-মুখ ফুলে যায়, তিনি চিৎকার করতে থাকেন ও ছুটোছুটি শুরু করেন। পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা মিলে ধারণা করেন, তাঁর শরীরে ‘অশরীরী আত্মা’ ভর করেছে।
ঘটনার পরপরই ‘ভূত’ তাড়াতে ডেকে আনা হয় এক ওঝাকে। ওঝা জানান, ১৫ বছর আগে এক পথ দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তির আত্মা নাকি আব্বুর শরীরে প্রবেশ করেছে। ঘণ্টা তিনেক ধরে চলে ঝাড়ফুঁক। ওঝার দাবি অনুযায়ী, আত্মা নাকি রক্তের দাবি জানিয়েছে এবং না পেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে। ফলস্বরূপ, একটি পাঁঠাকে বলি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে পরিবার।
এই ঘটনায় পুরো গ্রামে ভয় ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে মহিলারা সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। অনেকেই জানান, ভয় লাগছে, যেন কিছু একটা পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। আতঙ্ক ছড়াচ্ছে শিশুরা ও বৃদ্ধদের মধ্যেও।
তবে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ এই ঘটনাকে কুসংস্কার বলে উড়িয়ে দিয়েছে। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য ও শিক্ষক গুণময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “ভূত বলে কিছু হয় না। এটি স্পষ্টতই একটি মানসিক সমস্যার লক্ষণ। আব্বুর মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন।” তাঁর মতে, গ্রামের কিছু মানুষের অজ্ঞতা এবং কুসংস্কার থেকেই এই গুজব রটছে, এবং এই ধরনের আচরণ সমাজের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই ঘটনা ফের একবার কুসংস্কারের অন্ধকার দিক ও বিজ্ঞানচর্চার প্রয়োজনীয়তা সামনে তুলে ধরল।