চা বাগানে ইডি-র অভিযান! আতঙ্ক ও কৌতূহলে শ্রমিকরা
ED raids tea gardens! Workers in panic and curiosity

Truth Of Bengal: শুক্রবার সকাল থেকেই জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা ব্লকের বামনডাঙ্গা ও মাটিয়ালি ব্লকের সামসিং চা বাগান এবং সেখানকার ইয়ংটং ডিভিশনে হঠাৎ করেই একযোগে অভিযান চালায় ইডি-র তিনটি পৃথক দল। সকাল ৮টা নাগাদ একাধিক গাড়ির কনভয় নিয়ে তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে ওই তিন জায়গায় পৌঁছন গোয়েন্দারা। যার জেরে চা বাগান এলাকায় শুরু হয় তীব্র চাঞ্চল্য ও কৌতূহল।
এত বড় মাপের অভিযান এই প্রথম, বলছেন এলাকাবাসী ও শ্রমিকরা। তাদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে নানা দুর্নীতির গুঞ্জন শোনা গেলেও এভাবে বাগানে ইডি হানা দেয়নি আগে কখনও। ফলে, শুক্রবারের অভিযান ঘিরে কর্মরত শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনার পাশাপাশি উদ্বেগের সঞ্চার হয়।
দিনভর চলা অভিযানে বাগানগুলির অফিস ঘেঁটে দেখা হয় বহু নথিপত্র। শুধু তাই নয়, তদন্তকারীরা সরাসরি চলে যান ফ্যাক্টরি পর্যন্ত। বিভিন্ন রেকর্ড খতিয়ে দেখা হয়। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলে এই তল্লাশি অভিযান। তবে অভিযান শেষে ইডির তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। ঠিক কী কারণে এই তল্লাশি, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সাল থেকে বামনডাঙ্গা, ইয়ংটং ও সামসিং চা বাগানগুলির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন প্রসন্ন কুমার রায়। উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারের কয়েক মাস পরেই ২০২২ সালে প্রসন্ন রায়কেও একই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে বাগান পরিচালনার নামে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ ওঠে।
প্রসন্ন রায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর এক আত্মীয় ওই বাগানগুলির দায়িত্ব নেন। তবে নানা প্রশাসনিক জটিলতায় একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় চা বাগানগুলো।
উল্লেখ্য, এই দুটি চা বাগানে প্রায় দুই হাজারেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন। তারা জানাচ্ছেন, “তদন্ত চলুক, আমরা কোনও আপত্তি করছি না। তবে আমাদের একটাই অনুরোধ—বাগান যেন বন্ধ না হয়। আমরা এর ওপরেই নির্ভর করে বেঁচে আছি।”
চা বাগান ঘিরে ডুয়ার্সের বহু মানুষের জীবন-জীবিকা। তাই ইডির হানা নিয়ে যতটা উত্তেজনা, ততটাই উদ্বেগও রয়েছে ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের দিক থেকেও।
এই ঘটনায় এখন নজর রয়েছে ইডি-র পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেই। তারা আগামিদিনে আরও কোনও ব্যক্তিকে তলব করে কিনা বা নতুন কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসে কিনা, সেদিকেই দৃষ্টি সবার।