রাজ্যের খবর

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করলেও, মারণ রোগে প্রাণ কাড়ল চন্দননগরের সুজলির

Despite passing the higher secondary examination, Chandannagar's Sujali dies of a fatal disease

Truth Of Bengal: হুগলি, রাকেশ চক্রবর্তী: চন্দননগর লালবাগান স্কুলের ছাত্রী সুজলি পাত্র মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে পাস করেছিল। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাতেও প্রথম বিভাগে পাশ করেছে। তবে নিজের রেজাল্ট সে দেখতে পেল না।

গত মাসের ২৮ তারিখে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সুজলির। ২০২৩ সালে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। প্রথমে ওভারিতে টিউমার। এরপর সেই টিউমার থেকেই ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে। অপারেশন তারপর কেমো থেরাপি নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল।

স্কুলে বরাবরই ভালো ছাত্রী ছিল সে। পাশাপাশি স্কুলের সব অনুষ্ঠানে অংশ নিত। তাই দিদিমনিদের প্রিয় ছিল। মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগ পায়। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার সময় ভয়ানক অসুস্থ হয়ে পরে। সেইসময়ত নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয় তাকে। এখান থেকেই শেষ চারটি পরীক্ষা দিয়েছিল।

সুজলির বড় হয়ে শিক্ষিকা হতে চাইত বলে জানান তার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অর্পিতা মন্ডল। চন্দননগর কৃষ্ণভাবনী নারী শিক্ষা মন্দিরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছিল সুজলির। সেখানে পরীক্ষা দিতে দিতে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পরে।

হুগলি জেলা জয়েন্ট কনভেনার শুভেন্দু গড়াই বলেন, ছাত্রীর অসুস্থতার খবর পেয়েই তাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। এনআরএস হাসপাতাল থেকে যাতে পরীক্ষা দিতে পারে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি হিসেবে কথা বলে তা ঠিক করা হয়। তবে ওই ছাত্রীটি মেধাবী ছিল। অনেক কষ্ট করে পরীক্ষা দিয়েছিল। কিন্তু রেজাল্ট দেখে যেতে পারল না। খুব খারাপ লাগছে।

সুজলির যখন এগারো দিন বয়স তখন তার মা মারা যান। সেদিন থেকেই মামা সত্যজিৎ রায়ের কাছে মানুষ হয়। মন্ডলপাড়া জুট মিলের শ্রমিক মামা অনেক কষ্ট করে তার ভাগ্নীকে মানুষ করছিলেন। ক্যান্সার ধরা পড়ার পর তার সবরকম চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। স্কুলের শিক্ষিকারা সুজলিকে অনেক সাহায্য করেছেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসকে খন্ডাতে পারে।

কোনভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাটা দিয়েছিল ঠিকই তারপর আর সুস্থ হতে পারেনি। উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরোনোর আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হয় তাকে। বুধবার স্কুলের বড়দি অর্পিতা মন্ডল সুজির মামাকে ফোন করে খবর দেন যে সুজলি পাস করেছে। দু- চোখ জলে ভিজে আসে মামার। প্রথম বিভাগে পাশ করেছে ভাগ্নি তা সে দেখে যেতে পারল না।

Related Articles