দুই বছর ধরে ভগ্ন সেতু, প্রশাসনের উদাসীনতায় বিপাকে শতাধিক পরিবার
Broken bridge for two years, hundreds of families in trouble due to administration's indifference

Truth Of Bengal: সৌরভ নস্কর, গঙ্গাসাগর: দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মধ্যপাড়া এলাকায় সূর্য বৃন্দা খালের ওপর অবস্থিত একটি কাঠের সেতুর দুরবস্থা ঘিরে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে ওই সেতুটি ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তার ওপর দিয়েই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন এলাকার সাধারণ মানুষ, স্কুলপড়ুয়া শিশু, গর্ভবতী মহিলা সহ শতাধিক পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সূর্য বৃন্দা খালের ওপরে থাকা কাঠের সেতুটিই দুই পাড়ের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। সেতুর অন্যপ্রান্তে রয়েছে আইসিডিএস সেন্টার, যেখান থেকে শিশুদের খাবার সংগ্রহ করা হয়। গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসা ও পুষ্টির দিক থেকেও এই কেন্দ্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেতুর জীর্ণ অবস্থার কারণে সেখান পৌঁছানো প্রতিনিয়ত দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেতুর কাঠের পাত ও খুঁটি ভেঙে পড়ছে, কোথাও কোথাও সম্পূর্ণ গর্ত হয়ে গিয়েছে। পায়ে হেঁটে চলা তো দূরের কথা, সাইকেল বা মোটরসাইকেল নিয়েও চলাফেরা করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। দিনের পর দিন তারা স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান মেলেনি। মাঝে মাঝে কিছু অস্থায়ী মেরামতির চেষ্টা হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
বাধ্য হয়ে অনেককে বিকল্প ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে, যার ফলে সময় ও খরচ দুটোই বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষার সময় জল বাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসীরা। তাঁরা দ্রুত সেতু সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা আর পারছি না। প্রতিদিন ভাবতে হয়, পার হবো কি না। দুর্ঘটনার ভয় থেকেই যায়।”
এই প্রসঙ্গে গঙ্গাসাগর বকখালি ডেভেলপমেন্ট অথোরিটির ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ কুমার পাত্র জানিয়েছেন, “আমরা ইতিমধ্যেই অনেক সেতুর কাজ করেছি। এই সেতুটি আমাদের নজরে এসেছে। খুব শিগগিরই সংস্কারের কাজ শুরু হবে। এলাকার মানুষ যেন আর সমস্যায় না পড়েন, সেটা আমরা দেখব।” এই প্রতিশ্রুতির বাস্তব রূপ কত দ্রুত দেখা যাবে, এখন সেটাই দেখার বিষয়। তবে আপাতত জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ওই সেতুর ওপর ভরসা করে চলছে মধ্যপাড়ার শতাধিক পরিবারের দৈনন্দিন জীবন।