চাঁদের মাটিতে পৌঁছল বাংলার মেয়ের ফ্যাশন ডিজাইন, শুভেচ্ছাবার্তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের

Truth Of Bengal: রাকেশ চক্রবর্তী, হুগলি: চাঁদের মাটিতে নতুন মাইল ফলকের সঙ্গে নাম জড়াল বাংলার। আমেরিকার বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেস-এর ব্লু ঘোস্ট মিশন ১-এর সঙ্গে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করল বাংলার মেয়ের ফ্যাশন ডিজাইন। যুগান্তকারী অবদানের জন্য হুগলির ফ্যাশন ডিজাইনার প্রিয়াঙ্কা মল্লিককে ‘ইউনিভার্সাল ফ্যাশন ডিজাইনার’ স্বীকৃতি দিল নাসা।

‘ব্লু ঘোস্ট’ বেসরকারি সংস্থার মহাকাশ যান হলেও এই অভিযানের সহযোগী ছিল নাসা। আগামীতে চাঁদে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতিতে এই অভিযান সাহায্য করবে মনে করা হচ্ছে। তবে মানুষ পৌঁছনোর আগেই সেখানে পৌঁছে গেল এই বাংলার হুগলি জেলার কন্যার ডিজাইন করা পোশাক। এই দারুণ কীর্তির জন্য হুগলির ফ্যাশন ডিজাইনার প্রিয়াঙ্কা মল্লিককে স্বীকৃতি দিয়েছে নাসা। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষরিত শুভেচ্ছাবার্তা পেয়েছেন তিনি। ওই শুভেচ্ছাবার্তায় প্রিয়াঙ্কার ডিজাইনের প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে।

হুগলি জেলার দাদপুর থানার বাদিনান গ্রামের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা মল্লিক। ইতালির মিলান থেকে ফ্যাশন ডিজাইন ডিগ্রি করার মাধ্যমে তাঁর ফ্যাশন দুনিয়ায় পা রাখা। বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন সংস্থায় তাঁর ডিজাইন ইতিমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৬ মে ব্রিটেনের রাজা চার্লস ও রানির রাজ্যাভিষেকের সময় প্রিয়াঙ্কার ডিজাইন ‘দ্য ইটারনাল রোজ ড্রেস ফর হার ম্যাজেস্টি কুইন ক্যামিলা’ এবং রাজা চার্লস থ্রি-এর জন্য  প্রজাপতি ব্রোচ (কসমিক বাটারফ্লাই) খুবই প্রশংসিত হয়েছিল। রাজা, রানি, বাকিংহাম প্যালেস-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁর কাছে শুভেচ্ছাবার্তা এসে পৌঁছয়।

এবার প্রিয়াঙ্কার তৈরি করা সেই দু’টি ডিজাইন চাঁদের মাটিতে পৌঁছে গেল। রবিবার ভারতীয় সময় দুটো চার মিনিটে নাসা-র সহযোগিতায় ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেশ-এর ব্লু ঘোস্ট লুনার ল্যান্ডার পা রাখে। গত ১৫ জানুয়ারি পৃথিবী থেকে রওনা দেয় ‘ব্লু ঘোস্ট’। সেই মিশনের লাইফশিপ পিরামিডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে প্রিয়াঙ্কা মল্লিকের দু’টো ডিজাইন।

প্রিয়াঙ্কা মল্লিক হলেন প্রথম ফ্যাশন ডিজাইনার, যাঁর সৃষ্টি ডিজাইন প্রথম চাঁদে পৌঁছল। গত ১৫ জানুয়ারি মিশন শুরুর পরেই নাসা থেকে ইউনিভার্সাল ফ্যাশন ডিজাইনার স্বীকৃতি পান প্রিয়াঙ্কা। ডোনাল্ড ট্রাম্প সাক্ষরিত শুভেচ্ছা বার্তা ই-মেল মারফত এসে পৌঁছয় অজ পাড়াগায়ের বাড়িতে। তাতে প্রিয়াঙ্কার ডিজাইনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। এর আগে বাকিংহাম প্যালেস থেকেও ডাকযোগে শুভেচ্ছাবার্তা এসেছিল তাঁর আবেদনের জন্য।

প্রিয়াঙ্কা জানান, ‘এই ডিজাইনগুলি আমি ভার্চুয়ালি কোম্পানিকে পাঠাই। এর পর তারা জানায় এটা লাইভ শিপ পিরামিডের মধ্যে একটা টেকনোলজির সাহায্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যেটা হাজার হাজার বছর অবধি চাঁদের মাটিতে রয়ে যাবে। এটা হিউম্যান কালচার হিউম্যান ফ্যাশন আর্টকে সারা ব্রহ্মাণ্ডে ছড়িয়ে দেবে। আমাদের সমাজ শেষ হয়ে গেলেও পরবর্তী সমাজ এসে দেখতে পাবে পৃথিবীর সংস্কৃতি, ফ্যাশন কী ছিল।’ এই ঐতিহাসিক সাফল্যে উচ্ছ্বসিত প্রিয়াঙ্কা। তিনি আরও বলেন, ‘আমি কতটা খুশি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। এটা এমন একটা স্বপ্ন সফল হল, যেটা আমি জীবনে কল্পনাও করতে পারিনি।’