অফবিটরাজ্যের খবর

লোকগানের মাধ্যমে ডাইনি প্রথা বিলোপের প্রচার

District News

The Truth of Bengal: ডাইনি বলে আসলে কিছু নেই। কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ এই প্রথাকে সমাজে বাঁচিয়ে রাখছে। কুসংস্কারের মন্ত্রে সমাজের নিরীহ সদস্যদের নির্যাতন করছে। সমাজকে এই বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে মাটির সুর বেঁধেছেন শিল্পী স্বপন দত্ত। অন্ডালের দক্ষিণখণ্ড এলাকায় যেভাবে আদিবাসী মহিলাকে অমানবিক অত্যাচার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধেই একতারা ধরেছেন তিনি। আধুনিকতার শিক্ষা দেওয়ার দীক্ষা নিয়ে পথে পথে ঘুরছেন। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরাও বাউলের এই বলিষ্ঠ প্রচারকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

অচলায়তন ভেঙে এই বাংলায় প্রথম নবজাগরণের উন্মেষ ঘটে। রামমোহন-বিদ্যাসাগরের চেতনার পথে এই রাজ্য এগিয়েছে অনেকটাই। তবু কিছু অংশে এখনও কুসংস্কারের ধারণা রয়েই গেছে। স্রেফ ডাইনি প্রথার মতো অবাস্তব ধারণাকে আঁকড়ে ধরে কেউ কেউ সমাজের দুর্বল অংশের মানুষদের অবলীলায় নিষ্ঠুর আচরণ করছে। সেরকমই একটি ঘটনা সামনে আসে কয়েকদিন আগে। সামাজিক প্রগতির স্বার্থে আমরা অণ্ডালের দক্ষিণখণ্ডের সেকথা ২১ জুলাই  বাংলা জাগোর ক্যামেরায় প্রথম তুলে ধরি। তাতে প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেয়। এবার বাউল গানের সুরে ডাইনির মতো নিষ্ঠুর প্রথার নিরসন চেয়ে পথে নামলেন এক শিল্পী। বাউলের প্রাণের ভাষায় প্রাণ ছুঁয়ে যাচ্ছে কুসংস্কারবিরোধী প্রচার।

হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষ, এ ডাইন বা ডাইনি অর্থ নির্ণয়ের কথা উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, জাদুবিদ্যাবলে দৃষ্টিমাত্রে শিশুর অনিষ্টকারিণী মহিলাকেই মোড়ল বা মাতব্বররা   ‘ডাইনি’ বলে তকমা দেন। যুগ যুগ ধরে ডাইনি প্রথা চলছে।অন্যায় অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন সাঁতেপাঁচে না থাকা সরল মহিলারাও। তাই সমাজ সংস্কারের বহমান ধারার ঢেউ তুলে এই শিল্পীর একটাই কথা, নির্দোষ নারীদের অত্যাচার কখনই করবেন না। কোনও আঙ্গিকেই নয়,কোনও কিছুকে ঢাল করে নয়।

পূর্ববর্ধমানের শিল্পী স্বপন দত্ত সমাজকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে মেঠো ভাষায় গান বাঁধেন। সুরের জাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ করে ভ্রান্তিবিলাসের পথ পরিহার করার বার্তা দিচ্ছেন তিনি। পূঃবর্ধমান থেকে পেশার তাগিদে পঃবর্ধমানে এসেছেন। স্থানীয়রা এই প্রচারে প্রভাবিতও হচ্ছেন।অনেকেই স্বেচ্ছায় যানগুরু আর গুণিনদের সবক শেখানোর প্রতিও জোর দিচ্ছেন। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরাও লাগাতার প্রচারে পথহারা মানুষদের ঠিক পথে নিয়ে যেতে চান। দুর্গাপুরের মানুষও প্রত্যন্ত গ্রামের এই পিছিয়ে পড়া ধারনার আমূল বদল চান।আর সেই  নিঃশব্দ বিপ্লবের কাজে এই লোকসঙ্গীত, লোকসাধারণের চেতনার দুয়ারে নাড়া দেবে বলে অনেকের ধারণা।

Related Articles