রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ আন্দোলনকারীরা, কাজে ফিরুন আবেদন সন্তানহারা মায়ের
Agitators at the door of the President and Prime Minister, return to work appeal of childless mothers

Truth Of Bengal : জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা কাটাতে রাজ্য সরকার আলোচনার পথ খুলে রেখেছে। তবুও আন্দোলনকারীরা,লাইভ স্ট্রিমিংয়ের নাম করে আলোচনা ভেস্তে দেয় বলে অভিযোগ। বাংলার স্বাস্থ্য পরিষেবার অচলাবস্থা কাটাতে এবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডাকে ই-মেল করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এদিকে,বিক্রম ভট্টাচার্যের মা প্রেসক্লাবে দাবি করেন,তাঁর ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী চিকিত্সকদের কর্মবিরতি। ,বৃহত্তর স্বার্থে চিকিত্সকরা কাজে যোগ দিন,আবেদন রাখেন দেশবাঁচাও গণমঞ্চের সদস্যরাও।
জটিলতা কাটাতে আলোচনা চায় রাজ্য সরকার।দরজা খুলে রাখলেও নবান্নের দরজা থেকে ফিরে আসছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অবস্থান থেকে একচুল নড়ছেন না আন্দোলনকারীরা।অনড় অবস্থানের জন্য প্রশাসনের সদর দফতরে গিয়েও ফিরে আসতে হয় তাঁদের।খোলামেলা আলোচনা,বক্তব্য রেকর্ড করার আশ্বাস দেওয়া হলেও লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবিতে নবান্ন থেকে ফিরে আসেন তাঁরা।এরপরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,হাসপাতালে রোগী মৃত্যু র অধ্যায়ের অবসান ঘটানোর জন্য ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি র স্বার্থে আলোচনার পথ খুলে দিচ্ছে বাংলার সরকার। তবুও প্রশাসনিক তত্পরতা,তদ্বির,সবকিছুকে ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছে জুনিয়র ডাক্তারদের লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সিঙ্গল পয়েন্ট অ্যাজেন্ডা। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের আবেদনে সাড়া দেওয়ার বদলে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
শুক্রবার আন্দোলনকারী চিকিত্সকরা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ,উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়,প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি,স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডাকে ই-মেল করে হস্তক্ষেপের আর্জি জানান। স্বাস্থ্য ভবনের কাছে ধর্না মঞ্চ থেকেই শুক্রবার সকালে রাষ্ট্রপতিকে মেল পাঠান। ৭০ঘন্টার ওপর পেরিয়ে গেলেও নিজেদের দাবিতে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে এবার রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা চাইছেন তাঁরা। শুক্রবার সকালেই চিকিৎসক ফোরামের তরফে মেল পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যপাল সিভিআনন্দ বোসকে মেল করা হয়েছে বলে জানা গেছে। জুনিয়র ডাক্তাররা একই অবস্থানে থাকায়,কাজে যোগ না দেওয়ায় রোগীদের মাসুল দিতে হচ্ছে বলে সরব স্বজন হারানো মানুষগুলো। বুকে বেদনা নিয়ে কবিতা ভট্টাচার্য চাইছেন,সবকিছু ছেড়ে,একরোখা অবস্থান ছাড়ুন,এবার ভাবুন রোগীদের কথা।
একই দাবি,রিষড়ার রাজীব দেব ওরানাঘাটের নন্দ বিশ্বাসের পরিবার। শুক্রবার গণমঞ্চের সদস্যরা দাবি তোলেন, আন্দোলকারী চিকিত্সকদের কাছে কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ? লাইভ স্ট্রিমিং, না সমস্যার সমাধান। জুনিয়র ডাক্তারদের বৃহস্পতিবারের আচরণের পর সাধারণ মানুষের মনেও তাঁদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অনেকেই বলছেন, রাজ্য সরকার এমনকি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নমনীয় আচরণ দেখানোর পরও জুনিয়র ডাক্তাররা এতটা অনমনীয় কেন?একই সঙ্গে গণমঞ্চের সদস্যরা বলেন,বিভিন্ন সূত্র থেকে আমাদের কাছে খবর আসছে যে, জুনিয়র ডাক্তারদের একটা বড় অংশ এবার কর্মবিরতি থেকে সরে এসে কাজে ফিরতে চাইছেন। নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতেও তাঁরা রাজি ছিলেন।
কিন্তু কতিপয় জুনিয়র ডাক্তারদের নেতারা চাপ দিয়ে তাঁদের কর্মবিরতি করতে বাধ্য করাচ্ছেন। আমরা জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে অনুরোধ জানাই, কারও প্ররোচনায় বা কারও অঙ্গুলি হেলনে না চলে আপনারা এবার সাধারণ মানুষের স্বার্থে কাজে ফিরে আসুন। তিলোত্তমার নৃশংস হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে আন্দোলন চলুক। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পরিষেবাও অব্যাহত থাক।