শিল্পীসত্ত্বার কাছে ফিকে বয়স! স্বামীর স্মৃতি আঁকড়ে পটচিত্রে তুলির টান রেবা দেবীর
Age to return to artistry! Reba Devi's tulir pulls on her husband's memory

Truth Of Bengal: নদিয়া,মাধব দেবনাথ: কথায় বলে নারী মানে অসীম ধৈর্যের এক অন্যতম নাম। মহিষাসুরকে বধ করার জন্য যেমন মা দুর্গার আবির্ভাব হয়েছিল, এখনো যুগ যুগ ধরে দেবী দুর্গা রয়েছে বিরাজমান। হ্যাঁ, এমনই এক নারী শক্তির কথা না বললেই নয়, বয়স প্রায় ৭৫ বছর ঊর্ধ্বে হলেও মনের শক্তি এবং অদম্য ইচ্ছেতে সূক্ষ্ম নিপুন কাজের সাথে এখনো পটচিত্র এঁকে চলেছেন নদীয়ার কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির বক্সি পাড়ার বাসিন্দা রেবা পাল।
করেন ভাঙা ঘরে বসবাস, বয়স প্রায় ৮০ ছুই ছুই, স্বামীর কাছ থেকে পটচিত্রের কাজ শেখা, এরপর স্বামী পরলোক গমন করলে সম্পন্ন সংসারের দায়ভার তার কাঁধে এসে পড়ে। আর অন্য কোন কাজ জানা ছিল না তার, তাই স্বামীর শিল্পত্বকেই ধরে রেখেছেন তিনি। এরপর সংসারের অনেকটাই হাল ফিরিয়ে নিয়ে আসেন, প্রত্যেক বছর দুর্গাপুজো আসতেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে কাজের বরাত আসতো, আর দিনরাত এক করে পটচিত্রর কাজ করতে হতো তাকে।
যত দিন গেছে ততই তার হাতের কাজের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এখন বার্ধক্য জনিত কারণে কমেছে দৃষ্টিশক্তি,, কিন্তু হাল ছাড়তে নাড়াজ তিনি। তার নিপুন কাজের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পেয়েছেন শংসাপত্র,, এখনো কলকাতা সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুজো উদ্যোক্তারা ছুটে আসেন তার কাছে পটচিত্রর জন্য। এক কথা বলা যেতেই পারে এই বয়সেও এখনো তার লড়াইটা থেমে থাকেনি।
শিল্পী রেবা পালের কথায়, তিনি যতদিন বাঁচবেন এই শিল্পত্বকে বজায় রাখবেন, কিন্তু এবছর ঠিকঠাক কাজের বরাত না পাওয়ায় অনেকটাই মন ভার রেবা দেবীর, কারণ বলে মনে করছেন আর জি করেন নৃসংস ঘটনা। বলাই বাহুল্য,, নদীয়ার কৃষ্ণনগর ঘুর্নির মোড় মাটির প্রতিমা এবং পুতুল তৈরিতে এক খ্যাতনামা জায়গা। মৃৎ শিল্পীদের অতুলনীয় প্রতিভা ফুটে ওঠে সূক্ষ্ম কাজের সাথে, কম যায় না রেবা দেবীও, দিন রাত এক করে পটচিত্র এঁকে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে দেশে বিদেশে।
রেবা দেবী আক্ষেপের সুরে বলেন,, বয়স তো অনেক হলো, কমেছে দৃষ্টিশক্তি কমছে মনবল, আর পেশির শক্তিও দিনদিন কমতে থাকছে, জানিনা ভবিষ্যতে কি হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো একজন দয়ালু, সরকারিভাবে যদি কিছু আর্থিক সহযোগিতা পেতেন তাহলে হয়তো যেমন বাঁচিয়ে রাখতে পারতেন তার এই শিল্পত্বকে, তেমনি আরো হয়তো স্বাবলম্বী হতে পারতেন।