রাতে জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি পরিদর্শন করে আড়াইটে-তে হোটেলে প্রবেশ মুখ্যমন্ত্রীর, পৌঁছলেন রাজ্যপালও
After inspecting the situation in Jalpaiguri at night, the Chief Minister entered the hotel at 2:30, the Governor also arrived

The Truth Of Bengal : জলপাইগুড়ি : ঝড়ে আহতদের পাশে দাঁড়াতে জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি পরিদর্শন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর হাসপাতালে পৌঁছে আহতদের সাথেও কথোপকথন সারেন তিনি। শুধু তাই নয়, জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত ময়নাগুড়িতে রবিবার বিকেলের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিও পরিদর্শন করেন তিনি। অবশেষে সমস্ত কাজ শেষ করে রাত আড়াইটা নাগাদ হোটেলের ফিরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আপাতত মালবাজারের চালসার একটি হোটেলে আছেন।
এদিকে খবর পেয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ ভোর ৬ টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছন। কালবৈশাখীর ঝড়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি এবং মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। রাজ্যপাল জানান, “রাত জেগে জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গেও কথা বলেন। জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ির যে যে এলাকা রবিবারের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে সব জায়গায় রাতেই গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিজে খতিয়ে দেখেছেন। পরিস্থিতির তদারকি করেছেন। সব মিটিয়ে তাঁর হোটেলে ফিরতে রাত আড়াইটে বেজে গিয়েছিল। আপাতত মালবাজারের চালসার একটি হোটেলে আছেন মমতা।”
প্রসঙ্গত, রবিবার বিকেলের কয়েক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন জলপাইগুড়ি জেলা। সবথেকে বেশি ক্ষতি হয় ময়নাগুড়ি ব্লকের পুঁটিমারী এলাকায়। এই ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জেলা জুড়ে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। আর এই খবর শোনার পরই রাতেই কলকাতা থেকে জলপাইগুড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার রাতে বাগডোগরা থেকে সোজা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝড়ে মৃত জলপাইগুড়িতে দুজনের বাড়িতে যান।
রাত প্রায় বারোটা নাগাদ জলপাইগুড়িতে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে জলপাইগুড়ি গোশালা মোড়ের বাসিন্দা ঝড়ে মৃত অনিমা রায়ের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেন মৃতের পরিবারের সদস্যদের সাথে। তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর সেখান থেকে সেনপাড়ার বাসিন্দা ঝড়ে মৃত দীজেন্দ্র নারায়ণের সরকারের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেও মৃতের পরিবারের সদস্যদের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে, ময়নাগুড়ি ব্লকের পুঁটিমারী এলাকায় ঝড়ে নিহত ব্যক্তির সাথেও ভিডিও কল মারফত ফোনে কথা বলেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এরপর রাত ১ টা নাগাদ জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে ঢোকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের সাথে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে রাত ২ টা নাগাদ ময়নাগুড়ি ব্লকের পুটিমারির রিলিফ ক্যাম্পে মুখ্যমন্ত্রী পৌছে যান। সেখানে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,” প্রশাসন, ডাক্তার, নার্স ভালো কাজ করেছেন। আহতরা মোটামুটি ভালো আছেন। মৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ও রিলিফ ক্যাম্পে গিয়ে দেখা করেছি। প্রশাসন সম্পূর্ণ পাশে থাকবে। চিকিৎসা, খাবার সমস্ত কিছু দেখা হবে। ইলেকশন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় ইচ্ছে করলেও কিছু করতে পারব না। আশা করি জেলা প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করবে।”
এদিকে ঝড়ে লণ্ডভণ্ড এলাকা পরিদর্শন করে ডুয়ার্সের একটি বেসরকারি হোটেলের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে গভীর রাতে জলপাইগুড়িতে আসলেও মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার জন্য অনেকেই জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়িতে ভিড় করেন।