অধীরের মিথ ম্লান বহরমপুরে, মমতার মাস্টারস্ট্রোকে বোল্ড আউট
Adhir's myth faded in Baharampur, Mamata's masterstroke bowled out

The Truth of Bengal: লোকসভা ভোটে বহরমপুরে অধীর মিথ উবে গেল। মমতা ম্যাজিক আর অধীর চৌধুরীর বিজেপির প্রতি নরম সুর কার্যতঃ তাঁর গড়েই হাত দুর্বল করল বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত। ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ন কবিরকে সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়ার পর তৃণমূল পরিবারে আলাদা জোশ আসে। ইউসুফ পাঠানের মতো ক্রিকেটের ব্যক্তিত্বই এবার বহরমপুরে খেলা ঘোরালেন তৃণমূল কংগ্রেসের।
১০মার্চ ব্রিগেডে মেগা সমাবেশে মহাচমক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।প্রার্থী ঘোষণা করেন কলকাতার গর্বের ময়দান থেকেই। চমকের তালিকায় ছিলেন হুগলিতে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, বহরমপুরে ইউসুফ পাঠান, তমলুকে দেবাংশু ভট্টাচার্য। ২৬জন নয়া প্রার্থী বাংলার লোকসভার লড়াইয়ে নতুন বিন্যাস নিয়ে আসে।এবার রচনা লোকতন্ত্রের শক্তিতে যেমন বলিয়ান হয়েছেন,সংসদে যাওয়ার জন্য জনতার ছাড়পত্র পেয়েছেন,তেমনই আবার বহরমপুরে অধীর চৌধুরীকে বোল্ড আউট করে ইতিহাস গড়েছেন ইউসুফ পাঠান।
স্বাধীনতার পর থেকেই লোকসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করেছিল বহরমপুর কেন্দ্র। ২০ বছর ধরে বহরমপুরে একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালে তিনি পরাজিত হলেন।প্রথমতঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বহরমপুরকে পাখির চোখ করে প্রচারে ঝড় তোলেন।বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে অধীর চৌধুরী আরো জনজীবনে প্রশ্নের মুখে পড়ে যান। তৃণমূল সেই মমতা বিরোধী মন্তব্যকে ভোটের হাওয়া গরমের কাজে পুরোদস্তুর কাজে লাগায়।যার ফসল তারা তুলল ভোট বাক্সে।ইভিএমে পরিবর্তনের ছাপ স্পষ্ট করল তৃণমূল কংগ্রেস। কিভাবে মমতার মাস্টারস্ট্রোক কাজ দিল এই বনেদী কেন্দ্রে ?
তৃণমূল কংগ্রেসে প্রথমে আওয়াজ ওঠে বহিরাগত ইউসুফ পাঠানকে প্রয়োজন নেই।ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ন কবীরকে সংগঠনের দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।হুমায়ুনই ময়দানে নেমে পড়েন হাল ফেরানোর জন্য।হাত দুর্বল করেন অধীররঞ্জন চৌধুরীর।এই জয়ের পিছনে বড় কাজ করেছে অধীরের বিজেপির প্রতি নরম মনোভাব।বলা যায়,২০১৯ সালের নির্বাচনে বহরমপুর কেন্দ্রে অধীর চৌধুরী জয় লাভ করলেও তাঁর ভোটের মার্জিন কমে দাঁড়ায় ৮০ হাজার ৬৯৬। গতবার দ্বিতীয় ছিল তৃণমূল। ৩৯.২৬ শতাংশ ভোট পান ঘাসফুলের অপূর্ব সরকার। যিনি স্থানীয় রাজনীতিতে ‘ডেভিড’ নামেই পরিচিত। অধীরের ‘বিশ্বস্ত অনুগামী’ হিসাবে জেলার রাজনীতিতে পরিচিতি ছিল ডেভিডের। এবার সেই তৃণমূলই দ্বিতীয় স্থান থেকে প্রথমে উঠে এল।অধীর চৌধুরীর মমতা বিরোধিতার মতোই বিজেপির প্রতি নরম মনোভাব তাঁকে ডোবাল বলে মনে করছেন বহরমপুরের বাসিন্দারা। তাই বহরমপুরে অধীর মিথ হাওয়া করে দিয়ে কার্যতঃ ইউসুফ পাঠান ক্রিজে থেকে রান তুললেন।গুজরাটে বাড়ি হলেও তিনি বাংলার হয়ে এখন দিল্লিতে সুর চড়াতে চান।