রাজ্যের খবর

সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত বর্ধমানের ঐতিহাসিক ক্ষেত্র মোহন্ত অস্থল

A unique example of harmony is Mohant Asthal, the historic site of Burdwan

The Truth Of Bengal : শহর বর্ধমানে অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহাসিক ক্ষেত্রটি হল মোহন্ত অস্থল ৷ মোহন্ত অস্থল হল নিম্বার্ক সম্প্রদায়ের আশ্রম বা মঠ এবং বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাচীনতম হল নিম্বার্ক সম্প্রদায়৷ বর্ধমান জেলায় দুটি মোহন্ত অস্থলের অস্তিত্ব আছে। বর্ধমানের মোহন্ত অস্থল ১৯৮০ -র দশকে বন্ধ হয়ে যায়৷ দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকা স্থলটি বর্তমানে ধ্বংসের মুখোমুখি ৷

জানা যায়, জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে (১৬০৫ -১৬২৭ খ্রি .) পাঞ্জাব প্রদেশের খাড়া নামক স্থান থেকে শ্রীনরহরি দেব বর্ধমানে আসেন এবং রাজগঞ্জের কাছে বাঁকা নদীর তীরে অবস্থান করেন৷ তিনি সঙ্গে নিয়ে আসেন তাঁর আরাধ্য দেবতা দামোদর জিউ শিলা৷ আরাধ্য দেবতাকে ওই স্থানে প্রতিষ্ঠা করে বর্ধমান মোহন্ত অস্থলের ভিত্তি স্থাপন করেন৷

কথিত আছে বর্ধমানের মহারাজা কীর্ত্তি চাঁদ মাহাতাব বিষ্ণুপুর পুরাধিপতির সহিত সংগ্রামার্থে গমন করেন , তখন কাঞ্চন নগর এলাকায় বারো দুয়ারী নামক আম্রকাননে একজন সন্ন্যাসী উক্ত বিগ্রহটি লইয়া অবস্থান করিতেছিলেন৷ ভক্তি সহকারে , রঘুনাথজীউ ও সন্ন্যাসীকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করিলে সন্ন্যাসী তাহাকে কহিলেন , আপনি যে সংগ্রামার্থে গমন করিতেছেন , তাহাতে নিশ্চয়ই জয়লাভ করিবেন৷ কীর্ত্তি চাঁদ মাহাতাব কহিলেন , প্রভু! যদি আমি এই যুদ্ধে জয়লাভ করি, তাহা হইলে এখানে প্রত্যাগমন করিয়াই আমি আপনার রঘুনাথজীউ ও সাধু সন্ন্যাসীদিগের সেবার্থে যথোপযুক্ত সম্পত্তি প্রদান করিব৷ দৈবানুগ্রহে তিনি যুদ্ধে জয়লাভ করিলেন এবং বর্ধমানে প্রত্যাগমন করিয়াই রাজগঞ্জে উক্ত দেবতার জন্য একটি উৎকৃষ্ট বাটী প্রস্তুত করাইয়া দিলেন এবং দেবতা ও অতিথিদিগের সেবার্থে কয়েকটি নিষ্কর মহল ও দেবত্র ভূমি প্রদান করিলেন৷ অদ্যাবধি উক্ত মোহান্তের আশ্রমে যে নিত্য শত শত সাধু সন্ন্যাসী প্রসাদ প্রান্ত হইয়া পরিতৃন্ত হইতেছে তাহাও কীর্ত্তিচন্দ্রের একটি অতুল কীর্ত্তি৷ ’ কীর্তিচন্দ্রের জমিদারিত্ব ছিল ১৭০২ থেকে ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।

Related Articles