এক কম এক কোটি দেবতার দেশ ত্রিপুরার ঊনকোটি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর,পর্যটকদের মুগ্ধ করবেই
Tripura, the land of one crore gods, has nine crores

Truth of Bengal, স্বপন কুমার দাসঃ ত্রিপুরার ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির, কসবা কালীবাড়ি, নীরমহল শহরের মধ্যে অবস্থিত ত্রিপুরা রাজবাড়ী দেখাহয়ে গিয়েছিল আগেই। এবার ত্রিপুরার বিখ্যাত ঊনকোটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থলের পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্র ঘুরতে গেলাম। শিয়ালদহ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ট্রেন ধরে নামলাম ধর্মনগর স্টেশনে। উত্তর ত্রিপুরার অন্যতম জমজমাট শহর হল ধর্মনগর। এমনকি আগরতলা ও শিলচর করিমগঞ্জের মধ্যে এই ধর্মনগরেই প্রচুর যাত্রী ওঠানামা করে। ধর্মনগর থেকে একটি গাড়ি নিয়ে চললাম ঊনকোটি দর্শনে। তবে আপনি ইচ্ছে করলে অটো বুক করেও যেতে পারেন। এই সফরে আপনার বাড়তি পাওনা হল দিঘিরপাড়, স্থানীয় একটি পার্ক ও ধর্মনগরের বিখ্যাত কালীবাড়ি। এগুলো এক সফরে ঘুরে নিতে পারবেন ধর্মনগর থেকে। রাস্তা বেশি দূরে নয়, প্রায় ২০ কিলোমিটার।
যাবার পথে দেখা মিলবে ত্রিপুরার আদিবাসী প্রধান গ্রাম গুলি । রাস্তার পাশে দেখতে পাবেন অর্গানিক সবজি বিক্রি করছে আদিবাসী মহিলা পুরুষরা। যাত্রাপথে বাড়তি পাওনা বালিডুম এলাকার বালির পাহাড়। বৃষ্টির জল নামায় এমন দৃশ্য তৈরি হয়েছে যেন শিল্পীর হাতে আঁকা কোন পটচিত্র। মুগ্ধ নয়নে অবাক হয়ে দেখতে ভালো লাগে। ধর্মনগর থেকে গাড়ি ব্রিটিশ আমলে পুরনো একটি লোহার ব্রিজ পেরিয়ে সামান্য এগিয়ে যেতেই চায়ের বাগান নজরে এল। আমরা রাস্তা ছেড়ে দিলাম কৈলাস শহরের ডানদিকে। এগিয়ে যেতেই ঝকঝকে জাতীয় সড়ক পেলাম। যেখানে এই জাতীয় সড়ক সেই স্থানটির নাম হাফলং। রাস্তা ধরে এগিয়ে যেতে যেতে চা বাগান জেলখানা দেখতে দেখতে আমরা পৌঁছে গেলাম আদিবাসী প্রধান গ্রামের একমাত্র বাজার আনন্দবাজার। তারপর আরো এগিয়ে যেতে যেতে চলে এলো ডানদিকে ঊনকোটির রাস্তা। জাতীয় সড়ক ছেড়ে আমরা সেই রাস্তায় ঢুকলাম।
মোড়ের মাথাতেই রয়েছে উনকোটি সম্পর্কিত লোহার বোর্ডে ব্যানার। ঊনকোটির মূল স্থানে প্রবেশদ্বারের আগেই পার্কিংস্থল রয়েছে। ছোট তবে এখনো ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠেনি এখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে। তাই কোন পার্কিং ফি লাগে না। গেট সংলগ্ন ছোট্ট অফিসে নাম ঠিকানা কোথা থেকে এলাম এন্ট্রি করে ঢুকে গেলাম রাস্তা ধরে ঊনকোটির অপূর্ব দৃশ্য দেখতে। অফিসের মহিলা কর্মী জানালেন কোন রকম খাবার নিয়ে যেতে পারবেন না। কোন প্লাস্টিক নিয়ে ভিতরে যাওয়া যাবে না। তবে জল নিয়ে যাবার অনুমতি দিল অনুরোধ করায়। তবে বলে দিল প্লাস্টিক বোতল ফেলবেন না ব্যাগে করে নিয়ে আসবেন। সামান্য এগিয়ে যেতেই থমকে দাঁড়ালাম। কী অপূর্ব দৃশ্য ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। পাথরের মধ্যে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি আঁকা। সিঁড়ি ধরে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি দেখতে দেখতে নীচে গেলাম যেখানে প্রচুর মানুষ রয়েছে।
পাহাড় থেকে একটি ঝরনা নেমে এসেছে। সবাই সেখানে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখছে এবং পাহাড়ের গায়ের মূর্তিও। ঝরনার পাশেই দেবতার স্থান। সেখানে পুজো করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ঝর্ণাটির নাম সীতাকুন্ড। জল কোথা থেকে আসছে তা জানাতে পারলেন না স্থানীয় বাসিন্দারা যারা এই ঊনকোটি দেখতে এসেছিলেন। ঊনকোটি কথার মধ্যেই রয়েছে এক কোটির একজন কম দেবতার স্থান এই ঊনকোটিতে।ভাস্কর্য এবং পাথরে খোদিত ঊনকোটি তীর্থ স্থান রূপেও পরিচিত। এই এলাকাটি ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার মধ্যে ঊনকোটি পর্বতমালায় অবস্থিত। ঊনকোটি বিখ্যাত তার প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড পাথরের ক্ষোদিত হিন্দু দেব দেবীদের আকৃতির জন্য। অন্যভাবে বলা চলে ঊনকোটি মানে হলো কঠিন থেকে এক কম যার খুব গুরুত্ব আছে স্থানীয় শৈব ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে।
কিংবদন্তি সূত্রে জানা যায় যে ভগবান শিব কাশি যাবার পথে এখানে রাত্রিবাস করেছিলেন এবং তার সঙ্গে আসা অন্যান্য দেবতাদের বলেছিলেন সূর্যোদয়ের পূর্বে নিদ্রা ভঙ্গ করে বারানসী তথা কাশীপথে যাত্রা শুরু করবো আমরা। বাস্তবে দেখা গেল একমাত্র ভগবান শিব ছাড়া আর কারো নিদ্রা ভঙ্গ হয়নি। তিনি ক্রোধে অস্থির হয়ে উঠলেন। অভিশাপ দিলেন বারবার বলা সত্ত্বেও ওহে দেবতাগণ তোমরা ঘুমিয়ে রইলে, তাই তোমাদের অভিশাপ দিলাম তোমরা পাথরে পরিণত হয়ে থাকো এখানে। এই কিংবদন্তির স্মৃতি রক্ষার্থে ঊনকোটি একটি পবিত্র তীর্থ স্থানে পরিণত হয় পরবর্তীকালে। এখানে পর্বতমালার গাত্রে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি গ্রোথিত আছে। উল্লেখ্য এখানে আছে শ্রেণীবদ্ধ ভাবে অনুতপ্ত ভগবান শিব ও পার্বতীর মূর্তি। রয়েছে, গঙ্গা দেবী বিশাল আকৃতি বিশিষ্ট মাথা। এখানে শিব এবং পার্বতী যেন কিরীট এবং কিরীটির মতো আকৃতি বিশিষ্ট। এখানে রয়েছে বিষ্ণুদেব এবং হিড়িম্বা প্রতিমার প্রতিকৃতিও।
আরো বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে এখানে। তার মধ্যে অন্যতম হল দুটি দন্ডায়মান হাতির মস্তিষ্কের মাঝে অবস্থিত গণেশ মূর্তি। এখানকার গণেশ দেবতার বৈশিষ্ট্য হল শারীরিক গঠন। গণেশের শারীরিক গঠন অপেক্ষাকৃত অনেক ছোট যা পূরাণের বর্ণনা অনুসারে মেলানো যাচ্ছে না। এছাড়াও ঊনকোটি পরুক মালা ঘিরে রয়েছে অনেক টুকরো টুকরো ভাস্কর্য এবং পাহাড়ের শীর্ষ দেশে বেশ কিছু দেবদেবীর স্থাপত্য মূর্তি নিয়ে একটি ছোট সংগ্রহশালা। যদিও এই স্থানটি দেখভালের জন্য থাকা দুজন কর্মচারী একে সংগ্রহশালা বলেন নি। তবে একটি ঘরের মধ্যেই মুহূর্তগুলি রাখা তালা দেওয়া অবস্থায়। বাইরে থেকে দেখতে হয়। এইসব মূর্তি দেখতে দেখতে অনুমান করা যায় সহজে যে প্রাচীনকালে এখানে একটি পৌরাণিক কোন মন্দিরের অবস্থান ছিল।
এখানে পাওয়া গেছে চতুর্মুখ লিঙ্গ কল্যাণ সুন্দর মূর্তি, বিষ্ণু মূর্তি, হরগৌরী মূর্তি, হরিহর মূর্তি, নরসিংহ মূর্তি, গনেশ মূর্তি, হনুমান মূর্তি সহ ভাস্কর্য গুনে গুণান্বিত বহুমূর্তি। ভাস্কর্য গুলি সংরক্ষিত স্থানে রাখা হয়েছে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব জরিপ বিভাগের অধীক্ষক প্রত্নতত্ত্ববিদ, আইজল মন্ডল এর পক্ষ থেকে। স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য ঊনকোটিকে শৈবতীর্থ বলেই চিহ্নিত করেছেন। তাই প্রতিবছর পৌষ সংক্রান্তিতে এখানে উৎসব ও মেলা বসে। তবে সবচাইতে বড় মেলা বসে চৈত্র মাসের অশোকা অষ্টমী তিথিতে। সেদিন এখানে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। বাঙালিদের পাশাপাশি ত্রিপুরার আদিবাসীরা এখানে সেই উৎসবে অংশগ্রহণ করে থাকেন।
ঊনকোটি দর্শনে জন্য যেখান থেকে সিঁড়ি শুরু হয়েছে তার বাম দিকে গেলে গণেশ মূর্তি দেখা যাবে। একটি নির্দেশিকা বোর্ড রয়েছে। সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে যেতে হবে। নিচে নেমে গেলে ডান দিকে একটি ভিউ পয়েন্ট রয়েছে। সেখান থেকে গণেশ মূর্তি দেখে নিতে পারেন। গণেশ মূর্তির পাশেই রয়েছে আবার একটি ফলস বা ঝরনা, যা গণেশ কুন্ড নামে পরিচিত। তবে ভিউ পয়েন্টের থেকে আরও ভালো করে মূর্তি দেখতে হলে আরেকটু নিচে নেমে গিয়ে সোজাসুজি তাকান তাহলে পাহাড়ের গায়ে গণেশের মূর্তি স্পষ্ট দেখতে পাবেন। গণেশ মূর্তি দেখে ফিরে আসতে পারেন অথবা এখান থেকে একটি রাস্তা সেই পাহাড়ের উপরে চলে গেছে। যেখানে মূর্তিগুলি সংগ্রহ করা আছে সেখানেও যেতে পারেন।
আমরা অবশ্য গিয়েছিলাম যেখানে সীতাকুণ্ড রয়েছে তার বাম দিকে সিঁড়ি ধরে। উপরের সংরক্ষিত মূর্তিগুলি দেখে নামার সময় পাহাড়ের গা বেয়ে যে সিঁড়ি নেমে এসেছে সেই সিঁড়ি ধরে নামবেন । কারণ এই সিঁড়ির পাশেই পাহাড়ের গায়ে মূর্তিগুলি একেবারে কাছ থেকে দেখা যায়। এই ঊনকোটির যে সমস্ত ভাস্কর্য দেখা যায় সেগুলি ভার্টিক্যাল পাহাড়ের গায়ে তৈরি করা হয়েছে শিবের। যে মূর্তিটি রয়েছে সেটির ৬ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট। পাথর কেটে গণেশের যে মূর্তি তৈরি করা হয়েছে তার দুপাশে দুটি হাতি রয়েছে। এগুলি সব অষ্টম ও নবম শতাব্দীর। এখানে যে চতুর্মুখ লিঙ্গ কল্যাণ সুন্দরী মূর্তি ও অন্যান্য কয়েকটি মূর্তি রয়েছে যেগুলি একাদশ ও দ্বাদশ শতাব্দীর। এগুলি এই ঊনকোটি পর্বতমালা থেকেই পাওয়া গেছে। এছাড়াও অন্যান্য ভাস্কর্য গুণ সম্পন্ন মূর্তিগুলিও বহু প্রাচীন বলে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অভিমত।
ঊনকোটি হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতত্ত্ব বিস্ময়কর স্থান যা শৈব তীর্থ বলে খ্যাত। সেই সপ্তম শতাব্দী থেকে। ঊনকোটি পর্বতমালার পাথর কেটে তৈরি নানা ম্যুরাল পর্যটকদের মুগ্ধ করে। পাশাপাশি এখানকার পার্বত্য পরিবেশ ওয়াটার ফলস পর্যটকদের জন্য বাড়তি বোনাস। এই সমস্ত স্থাপত্য ও ভাস্কর্য রয়েছে এমন একটি স্থানে যেখানে চারিদিকে সবুজের হাতছানি এবং সুন্দর মোহময় পরিবেশের মধ্যে। এখানে মূলত যে সমস্ত মূর্তি রয়েছে তা দুই প্রকারের। একটি হল রক কার্ভড ফিগার এবং অন্য গুলি হল স্টোন ইমেজ বা পাথরের মূর্তি। বিশেষ করে নজর করে শিবের এবং গণেশের মূর্তি দুটি।
এই ঊনকোটি সবচেয়ে আকর্ষণীয় হল ঊনকোটিশ্বরও কালভৈরব মূর্তি যে মূর্তিটি ত্রিশ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট এবং মাথায় কারুকার্য করা। যা আরো ১০ ফুট উঁচু। এখানে রয়েছে দেবী দুর্গার মূর্তি যার পায়ের নিচে সিংহ রয়েছে।
তার পাশেই রয়েছে আরও একটি দেবীর মূর্তি। শিবের বাহন নন্দী তারও মূর্তি রয়েছে এখানে। ঊনকোটি এই রক কাট কার্ভিং মূর্তি গুলি গোটা ভারতবর্ষের মধ্যে বৃহৎ ভাস্কর্য বলে স্বীকৃত। এই তীর্থ ক্ষেত্র ঊনকোটি নাম কেন এ সম্পর্কে জানা যায় শিবসহ এক কোটি দেবদেবী যাচ্ছিলেন কাশীতে কিন্তু বাকিরা সব ঘুমাচ্ছিলেন। একমাত্র শিব চলে গেলেন কাশীতে। তাই এই তীর্থক্ষেত্রের নাম কোটি থেকে একজন দেবতা কম তাই ঊনকোটি। তবে ঊনকোটির স্থানীয় বাসিন্দারা বা সেখানকার কিংবদন্তি অনুসারে জানা যায় এখানে একজন ভাস্কর ও মূর্তি নির্মাতা ছিলেন যার নাম কালু কুমার। উত্তর ত্রিপুরার উপজাতিদের বিশ্বাস এই কালু কুমার ঊনকোটি পর্বতমালায় যে সমস্ত দেবদেবী দেখা যায় সেইসব ভাস্কর্য নির্মাণ করেছিলেন। এখানে একটি মিথ প্রচলিত রয়েছে উপজাতিদের মধ্যে যা থেকে জানা যায় এই কালু কুমার ছিলেন দেবী পার্বতীর পরম ভক্ত।
তিনি শিব এবং পার্বতীকে একসঙ্গে দেখতে কৈলাস পর্বতে যেতে চেয়েছিলেন। সেই কথা তিনি দেবী পার্বতীর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। সেই প্রার্থনা শুনে দেবী পার্বতী শিবের কাছে কালু কুমারের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তা শুনে বলেছিলেন আমি কানু কুমারকে কৈলাস পর্বতে আসার অনুমতি দেব তবে আমার একটা শর্ত রয়েছে। কালু কুমারকে এক রাতের মধ্যে এক কোটি দেবদেবীর মূর্তি বিশেষ করে অধিকাংশ শিবের মূর্তি আঁকতে হবে। কালু কুমার দেবাদিদেব মহাদেবের সেই শর্তে রাজি হয়ে যান এবং এক রাতের মধ্যে ঊনকোটি পর্বত মালার গাত্রে দেব দেবীর ভাস্কর্যমূর্তি তৈরি করা শুরু করেন। এত দ্রুত তিনি কাজ করেন তা সত্ত্বেও তার অজান্তে ভোরের আলো ফুটে ওঠে।
দেখা করে তিনি এক কোটি থেকে মাত্র একটি কম শিবমূর্তি তৈরি করেছেন। শর্ত ভঙ্গ হওয়ায় কালু কুমারকে এখানেই রেখে যান কৈলাসে নিয়ে যাননি। সেই থেকে এই স্থানের নাম হয় ঊনকোটি।ঊনকোটি দেখার পর গেট থেকে বেরিয়েই বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান রয়েছে। এখানে চা ও স্ন্যাক্স খেয়ে নিতে পারেন । আর পাবেন ডাবের জল ও ফলের রসের দোকান। এখানে আগত পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য ঊনকোটি ইকোপার্ক নামে একটি পার্ক তৈরি করা হয়েছে। যে পার্ক সকাল ন’টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। যার প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা জনপ্রতি এবং প্রতি সোমবার বন্ধ থাকে এই ইকোপার্ক।
কিভাবে এখানে আসবেন
আমি ধর্মনগর থেকে এসেছি কিন্তু কলকাতা থেকে আরও বিভিন্নভাবে এখানে আসা যায়। তার মধ্যে অন্যতম হল কলকাতা থেকে বিমান পথে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা চলে আসুন। সেখান থেকে ১৮৬ কিলোমিটার দূরে ঊনকোটির অবস্থান। এই পথটুকু সড়কপথে চলে আসতে পারেন। কৈলাস শহরের ৮ কিলোমিটার দূরে এই ঊনকোটি। সড়কপথে ঘন্টাচারেকের মতো সময় লাগে অথবা আগরতলা থেকে ট্রেন ধরে ধর্মনগর চলে আসুন। সেখান থেকে ঊনকোটি ১৮ কিলোমিটার। ধর্মনগর স্টেশনের বাইরেই গাড়ি পাবেন। অটোরিকশা পাবেন এবং পর্যটক মরশুমে বাসও পাবেন। বিমানবন্দরে পাবেন ত্রিপুরা সরকারের টুরিস্ট ইনফরমেশন সেন্টার । সেখানেও জেনে নিতে পারবেন ঊনকোটি সম্পর্কে এবং ত্রিপুরার অন্যান্য পর্যটক স্থান সম্পর্কে। ত্রিপুরা সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ত্রিপুরা ভ্রমণের জন্য রেসটিক্ট এরিয়া পারমিট বা ইনার লাইন পারমিট কোন কিছুর প্রয়োজন নেই।
অতিরিক্ত কি কি দেখতে পাবেন
ঊনকোটি পর্যটক কেন্দ্রের আশেপাশে আপনি দেখতে পাবেন প্রচুর চা বাগান। তার মধ্যে বিখ্যাত রং রাঙ টি স্টেট, রামকৃষ্ণ মিশন মন্দির, নতুন কালিবাড়ি, কৈলাস শহর। আবার ধর্মনগরে দেখতে পাবেন দীঘিরপাড় কালী মন্দির বিপরীতে জলাশয়ের মধ্যে শিবের মূর্তি।
কোথায় থাকবেন
থাকার জন্য পাবেন কৈলাস শহরে ঊনকোটি টুরিস্ট লজ, ধর্মনগরে জুরি টুরিস্ট লজ, কৈলাস শহরে নির্মলা হোটেল, কুমার ঘাটে দেবরায় এবং কৈলাস শহরে শ্রীকৃষ্ণ হোটেল সহ একাধিক হোটেল।
ধর্মনগর স্টেশন থেকে বেরিয়ে ই ডানদিকে খাবারের দোকান পাবেন। এখানে মিল চুক্তিতে খেতে পারবেন। থাকার জন্য হোটেল আশা, হিতসাধনী গেস্ট হাউস, হোটেল নর্থ কন্টিনেন্টাল আর হোটেল নর্থ ল্যান্ড। এগুলি সবই স্টেশন থেকে পাঁচ মিনিটের পথে।খাবার জন্য ধর্মনগর কুমারঘাট ও কৈলাশ শহরে একাধিক হোটেল রয়েছে। গাড়ি ভাড়া করতে পারবেন ধর্মনগর স্টেশনের বাইরে পার্কিং লটে অথবা ধর্মনগর স্টেশন থেকে মিনিট দশেক হাঁটা পথে পেট্রোল পাম্পের আগে গাড়ি স্ট্যান্ডে।