ভ্রমণরাজ্যের খবর

বাংলার এক রহস্যময় গ্রামের সফর করবেন নাকি?

Tourism of West Bengal

The Truth of Bengal: এই বাংলার বুকে এমন এক গ্রাম রয়েছে, যার ইতিহাস অনন্য। পয়লা বৈশাখ থেকে ১৫ বৈশাখ পর্যন্ত এই গ্রামে কোনও সন্তানসম্ভবা মহিলা থাকেন না। এই গ্রামে সারা বছর দেবীর পাথরের মূর্তিকে ডুবিয়ে রাখা হয়, মন্দির সংলগ্ন একটি পুকুরে। রয়েছে এমন অদ্ভুত লোকাচার। এমনই একটি রহস্যময় গ্রামে একদিনের সফরে কাটিয়ে আসতে পারেন কলকাতা থেকে।

বর্ধমানের ক্ষীরগ্রাম। এখানেই রয়েছে এক জাগ্রতদেবীর অধিষ্ঠান। মা যোগাদ্যাদেবীর বাস। কিংবদন্তী রয়েছে, সতীর ৫১টি পীঠের অন্যতম এই যোগাধ্যাদেবী। এই দেবীর পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামে রয়েছে একাধিক লোকাচার। যার নজির এই বাংলাতো দূর অস্ত, সারা ভারতেও বিরল। পয়লা বৈশাখ থেকে ১৫ বাশাখ পর্যন্ত গ্রামে কোনও বিবাহ, উপনয়ন, এমনকী সধাভক্ষণের অনুষ্ঠান পর্যন্ত হয় না। বাড়ির উত্তরদিকের ঘরে কেউ বাস করেন না। সমস্ত বৈশাখ মাস জুড়ে যা লেখালেখির কাজ চলে তা লাল কালি দিয়ে। কেউ সলতে পাকায় না, অনেন কাঠি দেয় না, এমনকী ধানও ভানা হয় না। আর এই সব লোকাচার পালিত হয়, দেবী যোগাদ্যাকে ঘিরে।

কথিত রয়েছে, সতীর ডান পায়ের আঙুল পড়েছিল এখানে। যোগাধ্যা দেবীর বিগ্রহ সারা বছর মন্দিরসংলগ্ন পুকুরের জলের তলায় সমাধিস্থ করা থাকে। প্রতি বছরে বৈশাখ সংক্রান্তিতে জল থেকে তুলে পুজো করা হয়। এই সময় গোটা গ্রামে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় হয়। দেবীর আগে যে মূর্তি ছিল, সেটি হারিয়ে যাওয়ার পর, নতুন বিগ্রহ তৈরি করানো হয়। বর্তমানে যে মূর্তিটিতে পুজো হয়, সেটি তৈরি করেছিলেন দাঁইহাটের নবীনচন্দ্র ভাস্কর। চাইলে একটা সপরিবারে ঘুরে আসতেই পারেন এই প্রাচীন গ্রামে।

কীভাবে যাবেন- কাটোয়া-বর্ধমান রেলপথে কাটোয়া থেকে ১৭ আর বর্ধমান থেকে ৩৬ কিলোমিটার দূরে কৈচর স্টেশন। কৈচর স্টেশন থেকে বাস বা রিকশায় কৈচর পৌঁছে সেখান থেকে ক্ষীরগ্রামের পশ্চিমে দেবী যোগাদ্যা মায়ের মন্দির।

Related Articles