ভ্রমণ

কলকাতাতেই আছে ‘মিনি চায়নাটাউন’! জানেন কোথায়?

History of achipur mini chinatown

The Truth of Bengal: ‘হিন্দি চিনি ভাই ভাই’ – স্লোগানটা শুনেছেন নিশ্চয়ই? এই কথা কিন্তু ঠিক যে বাংলার সাথে চিনাদের অনেক গভীর সম্পর্ক। জানেন নাকি সেই ইতিহাস? শুনবেন নাকি ইতিহাসের পুরনো গাঁথা? আসুন তাহলে যাওয়া যাক বজবজের অছিপুরে। তারাতলা থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে এই অছিপুর। এখানেই অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে প্রথম বসতি স্থাপন করেছিলেন বাংলায় প্রথম চিনা ব্যবসায়ী টং অ্যাচিউ। তিনিই অর্থাৎ চিনের অ্যাচিউ স্থানীয়দের কাছে ‘অছি’ সাহেব হয়ে উঠেছিলেন। আর সেই থেকেই পরবর্তীকালে জায়গাটির নামকরণ হয় অছিপুর। এখানে অচিরেই একটি চীনা মন্দির গড়ে ওঠে।

১৭১৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় এই মন্দির। ‘খুদা’ ও ‘খুদি’ নামে দুটো মূর্তি এই মন্দিরে স্থাপন করা আছে। প্রতি বছর চীনা নববর্ষের সময়ে এই অছিপুর হয়ে ওঠে মিনি চায়নাটাউন। এখানে মন্দিরের পাশাপাশি ওসি সাহেবের কবরস্থানেও সবাই শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। মন্দির থেকে সামান্য কিছু পথ হেঁটে হুগলি নদীর তীরে আছো সাহেবের কবর। সেখানে সবাই জান তাকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে। নতুন বছর উদযাপন করতে হাজার হাজার চীনা এখানকার মন্দিরে আসেন। প্রায় উৎসব শেষে ফিরে যান। শান্ত,নিরিবিলি হ্যামলেটটি আবার ঘুমিয়ে পড়ে। এটি নামে চীনা মন্দির হলেও সর্বধর্মসমন্বয় লক্ষ্যণীয়।

বেঁটে, ছড়ানো মন্দিরের ভেতরেই দক্ষিণরায়ের ছোট হিন্দু মন্দির। পুরো অঞ্চল দেখভালের দায়িত্বে এক মুসলিম ভদ্রলোক ও তাঁর পুত্র। ওসব ধর্ম,জাতির ভেদাভেদকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এখানে একই সাথে সবাই থাকেন। অছিপুর হুগলী নদীর একদম পাড়ে। এই চীনা মন্দির থেকে বেরিয়ে এসে খানিক দূর এলেই প্রাচীনা গঙ্গা অক্লান্তভাবে বইছে। জল বেশ গভীর। শীতকালে এই মন্দির কলকাতার চায়না টাউনের মতই হয়ে যায়। তাই একে মিনি চায়না টাউন ও বলে হয়ে থাকে। এখানে আসতে হলে আপনাকে প্রথমে আসতে হবে বজবজ। তারপর খানিকটা পশ্চিম দিকে এগোলে এই জনপদ অছিপুর।

Free Access

Related Articles