খেলা

ফুটবল নিয়ে এতদিনের পরিশ্রম স্বার্থক হল : আর্মান্দো কোলাসো

The hard work so far with football has paid off: Armando Colaso

Truth Of Bengal : সৈয়দ নইমুদ্দিন, বিমল ঘোষের পর এবার ফের ফুটবলে দ্রোণাচার্য পুরস্কার পেলেন প্রাক্তন কোচ আর্মান্দো কোলাসো। বৃহস্পতিবার তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। এরপরই একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের অনুভূতির কথা জানালেন তিনি।

প্রশ্ন-আপনাকে এবার দ্রোণাচার্য পুরস্কারে ভূষিত করা হচ্ছে। ফুটবল জীবনে অনেক ট্রফি জয় করেছেন। কি বলবেন?

আর্মান্দো কোলাসো- আমাকে এই সম্মানে ভূষিত করার জন্য সত্যিই আমি অভিভূত। যাঁরা আমাকে এমন সম্মান দেওয়ার জন্য মনোনীত করেছেন তাঁদের কাছে আমি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। আর অনুভূতি, সে তো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

প্রশ্ন-একদমই ঠিক বলেছেন, কিন্তু তবুও যদি কিছু বলেন ?

আর্মান্দো কোলাসো- এককথায় দারুণ। আমি যখন জানতে পারলাম, যে আমাকে ফুটবলের দ্রোণাচার্য সম্মান দেওয়া হচ্ছে, তখন আমার মনে হচ্ছিল যে, যাক এতদিন ধরে আমি ফুটবলকে ভালোবেসে নিরলসভাবে যে কাজ করে এসেছি, তার প্রাপ্য সম্মান পেলাম। আসলে কি জানেন, যবে থেকে ফুটবলকে ভালোবেসে কাজ শুরু করেছি, তবে থেকে ফুটবলই আমার ধ্যান-জ্ঞান সব। আমি এখনও অবধি ফুটবল ছাড়া কিছুই বুঝি না। আর সবচেয়ে বড় কথা হল ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই যে, ফুটবলকে ভালোবেসে নিরলসভাবে, নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করলে কেউ দিক আর না দিক, ফুটবলেই প্রাপ্য সম্মান দেবে।

প্রশ্ন-ভারতীয় ফুটবলে আপনি নজির সৃষ্টি করেছেন। ডেম্পোকে পাঁচবার আই লিগ খেতাব এনে দিয়েছেন।

আর্মান্দো কোলাসো- দেখুন সবাই ডেম্পোর খেতাব জয়ের অন্যতম কারিগর হিসাবে আমার নামটাই বলে। কিন্তু এটা ঠিক নয়। আমার মনে হয়, আমাকে যাঁরা সেই সময় ডেম্পো দলের কোচিং করানোর জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তাঁদেরও কৃতিত্ব কম নয়। পাশাপাশি অবশ্যই কৃতিত্ব দেবো আমার দলের সেই সমস্ত ফুটবলারদের। যাঁরা সেই সময় ডেম্পোর হয়ে মাঠে নেমে লড়াই করে ঘাম ঝড়িয়েছেন। আর একটা কথা ডেম্পোতে আমি সফল হয়েছি ঠিক কথাই, তবে ক্লাব ফুটবলে কিন্তু আমি স্পোর্টিং ক্লাব দ্য গোয়া, চার্চিল ব্রাদার্সেও কোচিং করিয়েছি। স্বল্প সময় হলেও ইস্টবেঙ্গলের মতো ক্লাবের কোচিং দায়িত্বও সামলেছি।

প্রশ্ন-সেই তালিকাটা জানি খুব বড়। তবুও কাউকে ছোট না করে যদি তাঁদের নামগুলো ফের একবার বলেন ?

আর্মান্দো কোলাসো- অবশ্যই তালিকাটা খুব বড়। ব্যক্তিগতভাবে কারোর নাম বলা তো সম্ভব নয়। কেননা তাহলে অনেকেই খারাপ ভাববে। তবুও আমি বলছি, আমার দ্রোণাচার্য পুরস্কার পাওয়াতে অবশ্যই আমার প্রিয় খেলোয়াড় যেমন- অভিজিৎ মণ্ডল, মহেশ গাউলি, সমীর নায়েক, ক্লাইম্যাক্স লরেন্স, রন্টি মার্টিন্স, ক্লিফোর্ড মিরান্ডা, সমীর নায়েকরা খুব খুশি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আমাকে ফোন করে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। আসলে আমার এই পুরস্কার পাওয়ার পিছনে এঁদের অবদানও কম নয়। তবে এঁদের পাশাপাশি আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুলবো না গোয়ার ফুটবল কর্তাদের অন্যতম আলেমাও চার্চিলকে। কৃতজ্ঞতা জানাবো আমার সহকর্মীদের। সেই তালিকায় অবশ্যই থাকবেন মরিসিও আলফানসো।

প্রশ্ন-আপনি শুধু ডেম্পোকে ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। আপনার সময়ই ডেম্পো এএফসি-তে ভাল ফল করেছিল। পাশাপাশি এত সেরা ফুটবলার আপনি দেশকে উপহার দিয়েছেন। তবুও কি মনে হয় না আপনার যে এই পুরস্কারটা পেতে আপনার বড্ড দেরি হয়ে গেল?

আর্মান্দো কোলাসো- দেখুন এই পুরস্কার পাওয়াটা আমার নিজের হাতে নয়। যাঁরা দেবেন, তাঁরা মনে করেছেন যে এইসময়ই আমাকে পুরস্কারটা দেওয়ার উপযুক্ত সময়। তাই দিয়েছেন। আমি আগেই বলেছি। ফুটবলের জন্য আজীবন কাজ করে যে সম্মান পাওয়াতে আমার আর কোনও দুঃখ রইল না। আর সবশেষে বলি, আমার ফুটবল কেরিয়ারে যাঁরা সবসময় আমাকে উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন আমার পরিবারের সেই সদস্যদের অবদানও কম নয়। আমি কৃতজ্ঞ তাঁদের কাছেও।

Related Articles