সমর্থকদের জন্যই জামশেদপুরকে হারাতে চান মোলিনা

Truth Of Bengal: সোমবার আইএসএলের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মোহনবাগান ফের মুখোমুখি হবে জামশেদপুর এফসির। ফাইনালে যেতে গেলে এই ম্যাচে বাগানের কমপক্ষে দুই গোলে জেতা ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা নেই। তবুও এই ম্যাচে জেতার ব্যাপারে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী বাগান হেডস্যার। ম্যাচের ২৪ ঘন্টা আগে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে সেই আত্মবিশ্বাসের শুরু মোলিনার গলায়।

রবিবার সা়ংবাদিক সম্মলনে এসে মোলিনা বলেন,‌ ‘সমর্থকরা আমাদের আবেগ,  ওরাই আমাদের দলের সম্পদ। আমি চাই সোমবার বিপুল সংখ্যক মেরিনার্স সমর্থক ম্যাচে মাঠে আসবেন আমাদের হয়ে গলা ফাটাতে। তাঁদের সামনেই আমরা ম্যাচটা জিততে চাই।’

প্রথম সেমিফাইনালে  দল হারলেও তার নেহাতই অঘটন বলে মনে করেন বাগান কোচ। ওই ম্যাচে হারের পরও মোলিনা বলেন, ‘আমরা ম্যাচটা হেরেছি ঠিক কথাই। কিন্তু খারাপ খেলেনি আমার ছেলেরা। যথেষ্ট লড়াই করেছে। সুযোগও তৈরি করেছে। কিন্তু আমরা গোল করতে পারিনি। এটা হতেই পারে। কিন্তু ঘরের মাঠে আমার ছেলেরা তৈরি আছে, ম্যাচ জেতার ব্যাপারে।’

আগের ম্যাচে আশীষ রাইয়ের দিক থেকেই দ্বিতীয় গোল হজম করেছে মোহনবাগান। তবুও নিজের দলের রাইট ব্যাকের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন বাগানের হেডস্যার। আশীষের সম্বন্ধে বলতে গিয়ে মোলিনার গলায় যেন ঝড়ে পড়ল আত্মবিশ্বাস। মোলিনা বলেন, ‘আশীষ যথেষ্ট ভাল খেলেছে পুরো আইএসএল-এ। ওর পারফরম্যান্স নিয়ে কোনও কথাই যথেষ্ট নয়। এক একদিন ভুল হতেই পারে। মানুষ মাত্রেই ভুল হয়। কিন্তু তাই বলে ওকে কাঠগড়ায় তোলা কখনই ঠিক হবে না।’

এএফসি এশিয়ান কাপের ম্যাচে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন বাগানের মাঝমাঠের স্তম্ভ আপুইয়া। চোটের কবলে পড়ে ছিটকে গিয়েছিলেন দলের অন্যতম স্তম্ভ মনবীর সিং-ও। প্রথম ম্যাচে তাঁদের ছাড়াই মাঠে নামতে হয়েছে মোলিনার দলকে।

সোমবারের ম্যাচে তাঁকে পাওয়া যাবে কি না জানতে চাইলে মোলিনার সাফ উত্তর, ‘আমরা চেষ্টা করব এই দুইজনকে সোমবারের ম্যাচে মাঠে নামানোর জন্য। এখনও কিছুই ঠিক করিনি। ওদের কন্ডিশন দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নেব।’ অপর দিকে ম্যাকলারেনের চোট থাকার কারণেই আগের ম্যাচে ওকে রিজার্ভে রাখা হয়েছিল। এই ম্যাচে হয়তো শুরু থেকেই ম্যাকলারেনকে পাওয়া যাবে বলেই আশাবাদী মোলিনা।

মতি নন্দীর বিখ্যাত উপন্যাস কোনির একটা সংলাপ ছিল ফাইট, ফাইট আর ফাইট। রবিবার সেই শব্দেই যেন ফের একবার শোনা গেল বাগান কোচের মুখে। মোলিনা বলেন, ‘আমি আমার ছেলেদের বলেছি, সোমবারের ম্যাচ জেতার জন্য নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে ফাইট, ফাইট, ফাইট… করতে হবে। এ ছাড়া আর অন্য কোনও পথ খোলা নেই। খেতাব জয় থেকে মাত্র দু ধাপ দূরে দাঁড়িয়ে থামার কোনও জায়গায় নেই।’

জামশেদপুর এই ম্যাচে পাবে না তাদের ডিফেন্সের অন্যতম স্তম্ভ স্টিফেন এজে, আশুতোষ মেহতাকে। এর ফলে মোলিনার দল কতটা অ্যাডভান্টেজ পাবে জানতে চাইলে বাগান কোচ জানান, ‘স্টিফেন এবং আশুতোষ যথেষ্ট ভাল খেলোয়াড়। ওদের অভিজ্ঞতাও আছে। সুতরাং ওদের না থাকাটা আমাদের কাছে অ্যাডভান্টেজ হবে।’

অপর দিকে প্রতিপক্ষ দলের মিডফিল্ডার জ্যাভি হার্নান্ডেজের প্রশংসাও শোনা গেল মোলিনার গলায়। বাগান কোচ বলেন, ‘জ্যাভি যে কোনও দলের সম্পদ। এই বছর আইএসএল-এ ভাল ছন্দে আছে। কিন্তু তাই বলে ওকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে এমন কোনও ব্যাপার নয়।’

কোচের মত ঘরের মাঠে ম্যাচ জিততে মুখিয়ে আছেন বাগানের স্ট্রাইকিং জোনের হার্টথ্রব জেমি ম্যাকলারেনও। সোমবারের ম্যাচ সম্বন্ধে বলতে গিয়ে ম্যাকলারেন বলেন, ‘আগের ম্যাচে আমরা হেরেছি ঠিক কথাই, কিন্তু লড়াই ছাড়িনি। প্রতিপক্ষ দল ডিফেন্সে অর্ধেক খেলোয়াড় নামিয়ে আমাদের যাবতীয় আক্রমণ রুখে দিয়েছিল। কিন্তু এই ম্যাচে এটা করতে পারবে না।

আমরা সকলে মিলে ম্যাচ জিতেই ফাইনালে খেলার ছাড়পত্র আদায় করব। দলের খেলোয়াড়রাও ম্যাচ জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। তবে স্টিফেন না থাকাতে আমাদের কিছুটা হলেও সুবিধা হয়েছে। সব শেষে আমি বলতে পারি আমরা এই ম্যাচ জেতার ব্যাপারে আমরা নিজেদের সর্বস্ব দেব।’