খেলা

মৃত ‘জানা’র জন্যই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে চান এনরিকে

Enrique wants to win the Champions League for the dead 'Jana'

Truth of Bengal:  সালটা ছিল ২০১৫ সাল। সেবারই প্রথম কাতালানদের শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন লুইস এনিরেকে। বার্সেলোনার দায়িত্ব নিয়েই এনিরেকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন শুধু দায়িত্ব নেওয়াই নয়, দলকে ট্রফি দেওয়াও তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে তিনি এনরিকে সফল হয়েছিলেন। কেননা ক্যাম্প ন্যুর দলের দায়িত্ব নিয়েই বার্সাকে করেছিলেন ইউরোপের সেরা। এরপর উয়েফাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকরে এনিরেকে বলেছিলেন, ‘আমি এমন ব্যক্তি নই যে, তিন-চার বছর পর ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখি।’

চিত্রঃ সংগৃহীত

চটজলদি শিরোপা জয়ের এবার ধারাবাহিকতায় মাত্র দু বছরেই তাঁর বর্তমান দল পিএসজিকে শিরোপা জয়ের দোরগড়ায় এনে দিয়েছেন এনরিকে। যে খেতাব জয়ের স্বপ্ন পিএসজির কাছে বহুদিনের অপেক্ষা। আর যদি তাই সম্ভব হয়, তাহলে তো প্যারিসের নতুন হিরো হয়ে উঠবেন তিনি। তবে এই পথটা পাড়ি দেওয়া এনরিকের কাছে সহজ ছিল না।ইতিহাসের পাতা উল্টে ফিরে যাওয়া যাক ২০১৯ সালে। এনরিকের জীবনে নেমে আসে এক বিশাল ধাক্কা। যা হয়ত সামলে ওঠা যে কোনও মানুষের পক্ষেই অত্যন্ত কঠিন। এনিরিকেও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না। ৫৫ বছর বয়সী এই ফুটবল কোচের জন্ম উত্তর ফ্রান্সের আস্তুরিয়াস শহরে। যে শহর পৃথিবীর কাছে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে তার দাপুটে বৃষ্টির জন্য। এনরিকের কাছেও তাই ফুটবলার কোচ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে লড়াই করতে হয়েছে সেই বৃষ্টির সঙ্গে। তাঁর কোচিং জীবনের ইতিহাসও তাই সাক্ষ্য বহন করে কখনও রোদ আবার কখনও বৃষ্টি।

চিত্রঃ সংগৃহীত

জীবনের উত্থান ও পতন থাকবেই, কিন্তু এমন একটা ঝড়ের সামনে এনরিকেকে একবর পড়তে হয়েছিল যে, সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা মোটেই সহজ ছিল না। মনের অজান্তেই তাঁকে পড়তে হয়েছিল সেই ঝড়ের সামনে। সেই অজানা ঝড়টি হল তাঁর কন্যা ‘জানা’র চির ঘুমের দেশে পাড়ি দেওয়া। সেই সময় ‘জানা’র বয়স ছিল মাত্র ন বছর। ফুটফুটে সোনার মত হাস্যময় ‘জানা’-র শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণ রোগ ক্যান্সার। বাবার কঠোর পরিশ্রমের বাণী উদ্বুদ্ধ হয়েও ‘জানা’-ও বেঁচে থাকার জন্য অক্লান্ত লড়াই করেছিল মারণ রোগের সঙ্গে। কিন্তু না শেষ পর্যন্ত সে সফল হয়নি। তাঁর প্রিয় বাবা ও মা কে ছেড়ে ‘জানা’ এখন পাড়ি দিয়েছে অজানা এক দেশে।

আর মেয়ের এই চলে যাওয়ার ধাক্কাটা বেশ কিছুটা বেসামাল করে দিয়েছিল এনরিকেকে। কিন্তু এর মধ্যেও জয়ের নেশা থেকে হারিয়ে যাননি এনরিকে। জীবনের আনন্দের মুহূর্তগুলিতে ‘জানা’-র কথা ভাবেন। শনিবরাও এমন এক রাতের অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন এনিরেকে। যদি তাঁর দল পিএসজি ফাইনালে ইন্টার মিলানকে হারাতে পারে, তাহলে জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় রাতটা কাটাবেন হয়তো তিনিই।

এই প্রসঙ্গে এনরিকে জানান, ‘আমার মেয়ে জানা-র সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো আমি খুব মিস করি। ও আনন্দ করতে ভালবাসত। এখন জানা আমাদের মধ্যে নেই। তবুও চাইব জানা যেখানেই থাকুক ভাল থাকুক। আমি এখনও ভুলতে পারিনি, বার্লিনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেই ফাইনাল ম্যাচের স্মৃতি। বার্সকে চ্যাম্পিয়ন করার পর বার্সার পতাকা হাতে আনন্দে মেতে ওঠার দৃশ্য। আজ হয়ত জানা আমাদের কাছে স-শরীরে থাকবে না। তবে মনে মনে হয়ত এই ম্যাচেও দূর থেকে আমাকে সমর্থন করবে।’

Related Articles