জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্গতদের পাশে মমতা, মানবিক রাজনীতির সহজপাঠ দেখল উত্তরবঙ্গ
Compassion on the side of those who risked two lives

The Truth of Bengal: বাংলার রাজনীতিতে মমতাই মডেল।তাঁর রাজনীতির স্টাইল অন্যরা অনুকরণ করতে পারেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা কখনই সেভাবে সফল হয়নি বিরোধীদের। ঝড়ে বিধ্বস্ত জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়িতে প্রচার ছেড়ে যেভাবে তিনি ছুটে যান তাতে মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক মুখ আরও একবার স্পষ্ট হল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টর্নেডো বিধ্বস্ত এলাকায় যখন যান, ততক্ষণে মমতার নির্দেশে প্রশাসন পাশে দাঁড়ানোর কাজে নেমে পড়েছে।বিপন্নদের পাশে দাঁড়ানোর রাজনীতিতে মমতা যে এগিয়ে তা প্রমাণ হল বলা যায়।রবিবার ১০মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় ময়নাগুড়ি,ধূপগুড়ির একাংশ।টর্নেডোর ধাক্কায় বিধ্বস্ত হয় উত্তরবঙ্গের প্রান্তিক এলাকা। বিধ্বংসী ঝড়ের ধাক্কায় প্রাণ যায় ৪জনের।পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫।আহত হয়েছেন আরও প্রায় শতাধিক মানুষ।কারুর বাড়ির চাল উড়ে গেছে,কেউ স্বজনকে হারিয়ে চোখের জল ফেলছেন।বিপন্নদের কথা জানতে পেরে প্রচারের আসর ছেড়ে সোজা ছুটে যান জলপাইগুড়িতে।রাত জেগে বিধ্বস্ত-ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার উদ্ধারকাজ সামলান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কয়েকদিন আগে বাড়িতে দুর্ঘটনায় তাঁর চোট লাগে।চোট সারতেই ভোট প্রচারে যান।কৃষ্ণনগরে প্রচারে ঝড় তোলেন।আর যখন তিনি শুনলেন দুর্যোগের মাঝে সঙ্কটে মানুষ।তখন প্রচার সংক্ষিপ্ত করেই নেমে পড়েন বিপন্নদের উদ্ধার থেকে ত্রাণ কাজের তত্বাবধানে।সময়ের ডাকে সাড়া দিয়ে বুঝিয়ে দেন কথা দিয়ে কথা রাখার মতোই অসহায়দের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে তাঁর জুড়ি নেই। যাঁরা নিজের মানুষকে হারিয়েছেন তাঁদের আশ্বস্ত করলেন,প্রশাসন পাশে রয়েছে,থাকবে।বাড়িয়ে দেবে মানবিকতার হাত।ভোটের মাঝেও উত্তরবঙ্গবাসীর আপত্কালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি যেভাবে সক্রিয়তাও তত্পরতা দেখান তাতে বলা যায়,তাঁর কাছে রাজনীতির সহজপাঠ হল মানুষের বিপদে পাশে থাকা।অনেক সময় প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা বা মুখ্যমন্ত্রীকে অনেক কিছু ভেবেই কাজ করতে হয়।প্রশাসনিক ব্যস্ততা,বকেয়া কাজের ভার,সামলে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়ার ইচ্ছে বা প্রবণতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে যেভাবে দেখা গেল তাতে বিরোধীরা বেশ পিছনে পড়ে গেল।উনিশের ভোটে উত্তরবঙ্গ থেকে বিজেপি ৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৭টিতে জেতে।
৫বছরে আপদ-বিপদে বিজেপি সেভাবে দাঁড়ায়নি বলে জলপাইগুড়ির মানুষের অভিযোগ।আর ভোটের মাঝে এই ভয়ঙ্কর ধাক্কাতেও তাঁদের রাতের তাণ্ডবে সেভাবে দেখা যায়নি।রাত গড়িয়ে দিনের চড়া আলোয় পৌঁছে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বার্নিশে গিয়ে বিরোধী দলনেতা পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন।এদিকে,কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লি থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন।মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তিনি খোঁজখবর নেন।পাশে থাকার আশ্বাস দেন।এই সব কিছুর ওপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপন্নদের ভরসা দেওয়ার এই ট্রাডিশন প্রমাণ করল তিনি বিরোধী দলে থাকার সময় যেভাবে ছুটে যেতেন এখনও সেভাবেই মানবিক পথেই হাঁটতে চান।অতীত ইতিহাস বলছে,২০১১তে ভবানীপুর উপ-নির্বাচনের প্রচার ছেড়ে কালিম্পংয়ের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় পৌঁছে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবারও সেই মমতাই লোকসভার প্রচারের আসর ছেড়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ালেন। নবান্নের অলিন্দে নিজেকে বন্দি না রেখে মানুষের মাঝে ছুটে গিয়ে অসহায়ের সহায় হয়ে ওঠার ট্রাডিশনও আগামীদিনে বজায় রাখতে চান।তাই অনেকেই বলেন,রাজনীতির এই পাঠ অন্যদল দেখে শিখলে তা সাধারণ মানুষেরই উপকারে লাগবে।