অফবিট

যেদিকে দু চোখ যায় সবুজে ঢাকা পাহাড়! দার্জিলিং-এর কোলে সোরেং গ্রাম

Soreng village at the foot of Darjeeling hills

Truth Of Bengal: তামাং ভাষায় সো হল লম্বা আর রিয়াং হল ঘাস অর্থাৎ লম্বা ঘাসে ঢাকা উপত্যকা সোরিয়াং নামে পরিচিত। সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়ে তার নাম হয়েছে সোরেং। দার্জিলিং জেলার দার্জিলিং পাহাড়ের এক শান্ত নিরিবিলি পাহাড়ি গ্রাম। এই গ্রামের আরও একটি নাম আছে যা হল দারাগাঁও। এই দারা শব্দের অর্থ পাহাড়ের চূড়া। নির্জনতম সেই পাহাড় চুড়ো থেকে খাড়া ঢাল নেমে গিয়েছে নিচের তিস্তায়। চোখের সামনে দূর থেকে দেখা যায় কালিম্পং তস্তা সহ একের পর এক পাহাড় সারি। এই গ্রামের প্রতিটি প্রান্তেই রয়েছে বৈচিত্র্য।

এই নির্জন পাহাড়ি গাঁও সোরিং নামে পরিচিত আর এরই একটা অংশ হল দারাগাঁও। উপর থেকে কিছুটা নিচের দিকে নামলে দেখতে পাওয়া যায় আরেকটা ভিউপয়েন্ট যার নাম লাসো। এই ভিউ পয়েন্ট থেকে দেখা যায় নীচে তিস্তা ও উপরের দিকে ঢেউ খেলানো পাহাড় সারি। এই উঁচু পাহাড় সারি গিয়ে বহু দূরে মিশেছে সমতলের সাথে। এই পাহাড়ি গন্তব্যের কোন এক পাহাড়ের ঢালে দাঁড়িয়ে দূরের দিকে দেখা যায় কালিম্পং যার মাথার উপরে মুকুটের মতো ছোট্ট দুরপিন দারা অবস্থিত। এই গ্রাম তিনটি ভাগে বিভক্ত, আপার, মিডিল এবং লোয়ার। এই পাহাড়ি গ্রামের মানুষ মূলত চাষাবাদ করেই জীবিকা নির্বাহ করে। ভুট্টা, গাজর, বিন্স, কমলালেবু সহ আরও অনেক সবজির চাষ করে স্থানীয়রা।

এই গ্রামে হোমস্টের সংখ্যা অনেক কম, রয়েছে মাত্র ৫ টির মতো। তবে প্রতিটি হোমস্টে ছবির মতো সুন্দর। এখানে খাওয়া দাওয়ার পাশাপাশি কিছু কিছু হোমস্টে তে রাতে বার্বিকিউ বানানোর ব্যবস্থা আছে। সন্ধ্যে নামলেই পাহাড়ের এক অদ্ভুত মায়াবী প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় ঘটবে আপনার। দূরের পাহাড়ের দিকে তাকালে মনে হচ্ছে রাতের আকাশের তারাগুলি সব মাটিতে নেমে এসেছে। সঙ্গে ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ, এমন নিস্তব্দ পরিবেশ পাহাড় ছাড়া আর কোথাও পাবেন না।

সকালের ঘুম ভাঙবে মিষ্টিমধুর পাখিদের কলতানে, ঘুম থেকে উঠেই হাতে চায়ের কাপ নিয়ে ব্যাল্কনির ধারে গিয়ে পাহাড়ের ফাঁক দিয়ে সূর্যোদয় দেখা। কালিম্পং থেকে এই গ্রামের দূরত্ব আধ ঘণ্টার মতো, দার্জিলিং শহর থেকে এই গ্রাম দেড় ঘণ্টার দূরে অবস্থিত। আপনি শিলিগুড়ি থেকে সেবক কালিঝোড়া হয়ে আসতে হবে তিস্তাবাজার। তিস্তাব্রিজের নীচ দিয়ে ডান হাতে যে পথ চলে গিয়েছে সেই পথ ডঃএই গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। আকাশ পরিষ্কার থাকলে এই গাঁও থেকে দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। কিভাবছেন? খুব যেতে ইচ্ছে করছে তো? তাহলে আর দেরি কিসের, সামনেই আসছে বড় দিন আর এই বড়দিনে পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরে আসুন এই সোরেং থেকে।

Related Articles