অফবিট

দূষণ ছড়াচ্ছে প্লাস্টিকের জলের বোতল, এক লিটারের বোতলে ২.৪ লাখ প্লাস্টিক কণা

Plastic water bottles are spreading pollution

The Truth of Bengal,Mou Basu: রণে, বনে, জঙ্গলে, সমুদ্রে, মাটিতে, বাতাসে, খাবারে, সর্বত্র মিশে রয়েছে প্লাস্টিক। পরিবেশ দূষিত করার জন্য সর্বাধিক ভূমিকা রয়েছে প্লাস্টিকের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের করা একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে আরও বেশি চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেই সমীক্ষায় সবচেয়ে বেশি পরিবেশ দূষিত করার জন্য দায়ী করা হয়েছে প্লাস্টিকের জলের বোতলকে। গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে PNAS নামক জার্নালে। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এক লিটারের প্লাস্টিকের জলের বোতলে রয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার প্লাস্টিকের কণা। অর্থাৎ আমরা প্লাস্টিকের জলের বোতল থেকে জল খেলেই এত বেশি পরিমাণ প্লাস্টিকের কণা সরাসরি আমাদের শরীরে মিশেছে। আমেরিকার বাজারে মেলা ৩টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত পানীয় জলের বোতলের ওপর গবেষণা চালানো হয়। বিজ্ঞানীরা দেখেন, প্রতি এক লিটারের প্লাস্টিকের জলের বোতলে গড়ে ১.১-৩.৭ লাখ প্লাস্টিকের কণা রয়েছে। এরমধ্যে ৯০%-ই ন্যানো প্লাস্টিক। বাকি ১০% মাইক্রো প্লাস্টিক। বিজ্ঞানীদের অনুমানের চেয়েও ১০-১০০% বেশি ন্যানো প্লাস্টিকের কণা রয়েছে জলের বোতলে।

সাইজ বা আকারে ১০০ ন্যানোমিটারের চেয়েও কম ছোট ন্যানো প্লাস্টিকের কণা চিহ্নিত করতে বিজ্ঞানীরা stimulated Raman scattering microscopy পদ্ধতি অবলম্বন করেন। গবেষণায় দেখা গেছে, Polyethylene terephthalate বা PET নামক ন্যানো প্লাস্টিক রয়েছে। এছাড়াও polyamide নামে এক ধরনের নাইলন রয়েছে প্লাস্টিকের জলের বোতলে যা জল পিউরিফাই বা পরিশুদ্ধ করার সময় ফিল্টার থেকে আসতে পারে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এছাড়াও কলকারখানায় ব্যবহৃত polystyrene, polyvinyl chloride, polymethyl methacrylate এর মতো নানান রকমের প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে। আশঙ্কার কথা হল, মাত্র ১০% ন্যানো প্লাস্টিককে চিহ্নিত করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। বাকি কী ধরনের ন্যানো প্লাস্টিক বা মাইক্রো প্লাস্টিককে চিহ্নিত করা যায়নি।

সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হল, এসব ন্যানো প্লাস্টিক, মাইক্রো প্লাস্টিকের কণা আকারে একটা চুলের চেয়েও কম সরু ও পাতলা। তাই খোলা চোখে দেখা অসম্ভব। তাই পানীয় জলের মাধ্যমে এসব ন্যানো প্লাস্টিকের কণা সরাসরি আমাদের অন্ত্র, ফুসফুস, রক্তের মাধ্যমে মস্তিষ্ক এমনকি হৃদযন্ত্রে পৌঁছে যেতে পারে। প্লাস্টিক বায়োডিগ্রেডেবল নয়। অর্থাৎ সহজে মাটিতে মিশে গিয়ে ধ্বংস হয় না। প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহার করা হয় Bisphenol A ও phthalates নামক রাসায়নিক যা শরীরে ঢুকলে হরমোনের নিঃসরণে বিঘ্ন ঘটায়। প্রজননের সমস্যা এমনকি ফুসফুসের ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। প্লাস্টিকের কণা শরীরে ঢুকলে ফোলা ভাব, অ্যালার্জি, অ্যাজমা, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

Related Articles