বিলের দায়ে ২ বছর ধরে হাসপাতালে স্ত্রীকে রেখে নিরুদ্দেশ স্বামী!
Husband leaves wife in hospital for 2 years due to bill, goes missing!

Truth Of Bengal: দুর্ঘটনার পর প্রতিবন্ধী হয়ে পড়া এক গৃহবধূকে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে অ্যাপোলো মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে “পরিত্যক্ত” অবস্থায় রাখা হয়েছিল। কেউ তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়নি। এছাড়াও ওই মহিলাকে তার স্বামী যত্ন নিতে চায়না বলে আমহার্স্ট স্ট্রিট পুলিশ স্টেশনে এই অক্ষমতার কথাও জানান। এদিকে এই দুবছরে ওই প্রতিবন্ধি স্ত্রীর শরীরে বহু অস্ত্র পচার চলেছে। সেই খরচের ১ কোটি ছাপিয়ে গিয়েছে।
#Kolkata | A housewife disabled from an accident has been abandoned at Apollo Multispeciality Hospitals for over two years.
Her husband claims he is unable to care for her, and the outstanding hospital bill is Rs 1 crore.
Details 🔗 https://t.co/bRrgkulpqD pic.twitter.com/Zua9HBRAWE
— The Times Of India (@timesofindia) April 3, 2025
এই বিষয়ে আরও জানা যায়, মহিলাটি তার বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন এবং তার শরীরের নিচের অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এই বিষয় নিয়ে কোর্টেও মামলা জারী হয়। সেই নিয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহার স্বামীকে জিজ্ঞাসা করেন যে তিনি তার স্ত্রীকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে চান না কেন? সেই নিয়ে তিনি জানান, সে একজন দোকানদার এবং তার প্রতিবন্ধী স্ত্রীর যত্ন নেওয়ার সামর্থ্য নেই।
তিনি আরও জানান, যে হাসপাতালটিতে তার চিকিৎসা হয়েছে ও একাধিক অস্ত্রোপচার করেছে সেখানেই তার ৬ লক্ষ টাকার বীমা হয়ে গেছে। সাথে হাসপাতালটি রোগীর দায়িত্ব আর নিতে নারাজ হয়। সেই নিয়ে তিনি আদালতে আবেদনও করেন।
এরপর আদালতে যখন হাসপাতালের আইনজীবীকে ডাকা হয় তিনি বলেন যে, স্বামী একটি “বিকল্প পরিবার” শুরু করেছেন। বিচারপতি সিনহা অবশ্য পারিবারিক বিষয়ে জড়াননি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন যে রাজ্যে বিনামূল্যে পরিষেবা সহ আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালিত আশ্রয় কেন্দ্রের কর্মীদের অসুস্থ রোগীদের যত্ন নেওয়ার দক্ষতা নেই।
এরপর এই নিয়ে বিচারপতি সিনহা ৯ এপ্রিল অ্যাডভোকেট-জেনারেলকে এই বিষয়ে হাজির হতে বলেন। এবং এই ধরনের ব্যক্তিদের জন্য রাজ্যের কোনও নিয়ন্ত্রণ আছে কিনা তা জানাতে এবং প্রতিকারের পরামর্শ দিতে নির্দেশ দেন। আদালত স্বামীকে সেদিন আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশও দেয়।
সূত্র অনুসারে, ৪০ বছর বয়সী ওই মহিলাকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মাথায় আঘাতের কারণে তার স্বামী হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। তার জীবন রক্ষাকারী নিউরোসার্জারি সহ অসংখ্য অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন কিন্তু আঘাতের কারণে তিনি অচল এবং ট্র্যাকিওস্টোমি করেছিলেন। তার অবস্থা স্থিতিশীল থাকা সত্ত্বেও, তার স্বামী জয়প্রকাশ গুপ্ত তাকে বাড়িতে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানান।
গুপ্তকে বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরেও কোনও সাড়া না পেয়ে হাসপাতালটি গত বছরের মে মাসে পশ্চিমবঙ্গ ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনের দ্বারস্থ হয়। গুপ্তা স্বাস্থ্য প্যানেলের শুনানিতে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হওয়ার পর, বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) অসীম কুমার ব্যানার্জি অ্যাপোলোকে বলেছিলেন যে আদালতে যাওয়া উপযুক্ত।
বর্তমানে, রোগীকে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে একটি সাধারণ বিছানায় রাখা হয়েছে এবং নার্সরা পালাক্রমে তার দেখাশোনা করছেন। হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের নার্সদের প্রতি সালাম যারা তাদের আত্মীয় স্বজনের মতো তার দেখাশোনা করছেন কারণ আঘাত তাব্দে অচল করে রেখেছিল। কিন্তু এই মহিলার তার পরিবারের উষ্ণতা, ভালোবাসা এবং যত্ন প্রয়োজন”।