অফবিটরাজ্যের খবর

আজও জাতীয়তাবোধ জাগায় বোলপুর রেলস্টেশন

Histrory of Bolpur Station

The Truth of Bengal: ব্রিটিশের বেয়াদপির বিরুদ্ধে বাংলা যখন গর্জে উঠেছিল তখন বোলপুরেও তার আঁচ লাগে। ইতিহাস বলছে,মুক্তি আন্দোলনের মন্ত্রপাঠ করে সাম্রাজ্যবাদীদের স্পর্ধার বিরুদ্ধে একসময় এই লালমাটির জেলার মানুষ পথে নামে। ব্রিটিশ প্রভূদের শক্তির পাঁচির ভাঙতে ৪২ এর ২৯ অগস্ট বিকেলে তির-ধনুক, লোহার রড নিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ বোলপুর ডাকবাংলোর মাঠে জড় হন। সাদাচামড়ার ঔদ্ধত্য নিয়ে রাজ্যপাঠ চালানো ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সেদিন গণবিদ্রোহ হয়। বিদ্রোহীদের হাত থেকে বোলপুর স্টেশন রক্ষা করার জন্য  আমেরিকান পুলিশ ২০টি গুলি চালায়। মারা যান দু’জন আক্রমণকারী। চার জন পুলিশ-সহ মোট ১৩ জন আহত হন।

বহু যুগ পর সমকালীন স্বাধীনতা-সংগ্রামীদের স্মৃতিচারণায় পুলিশি তাণ্ডবে নিহত তারাপদ  মোদক, জটা মুর্মু, কৃষ্ণকান্ত হাটিরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করেন।শুধু গণবিদ্রোহ নয়,নেতাজীর মুক্তি সংগ্রামের নীলনকশা কার্যকর করতেও এই বোলপুর ব্যবহৃত হয়।বোলপুরের রেলপথ ব্যবহার করেই এই জেলাশহরে আসেন সুভাষ চন্দ্র বসু। ১৯৩৮এ সেখানে তিনি একটি সভাও করেছিলেন। আরও হাজারো সংগ্রামের সঙ্গে জুড়ে আসে এই বোলপুরের নাম।

ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলে দেখা যায়, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় এই বোলপুর স্টেশনকে ব্যবহার করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো বটেই,  গান্ধীজি সহ অন্যান্য ব্যক্তিত্ব এই বীরভূমির বোলপুর স্টেশনকে ব্যবহার করেছেন। তাই ভারতের মুক্তি আন্দোলনের পাতায় পাতায় জড়িয়ে আছে এই বোলপুর। রবীন্দ্রনাথ যেখান থেকে শান্তিপূর্ণ পথে শিক্ষা-সংস্কৃতির বিশ্বায়ন চেয়েছিলেন সেই লালমাটির প্রাণকেন্দ্রই জাতীয় জীবনকে হার না মানা মন্ত্র শিখিয়ে ছিল,এখনও তা সারা দেশের কাছে শিক্ষণীয় হয়ে রয়েছে বলে ইতিহাসবিদরা মনে করছেন।

 

Related Articles