২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, জানেন কী আফ্রিকার একটি দেশেরও সরকারি ভাষা বাংলা
Do you know that Bangla is the official language of an African country?

The Truth of Bengal: পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ থেকে বহু মাইল দূরে সুদূর আফ্রিকার একটি দেশ হল সিয়েরা লিওন। জানেন কি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সঙ্গে এক অদ্ভুত মিল আছে সিয়েরা লিওনের। আফ্রিকার এই দেশটিরও অফিশিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ বা প্রধান সরকারি ভাষা হল বাংলা। ২১ ফেব্রুয়ারি আপামর বাঙালির কাছে হৃদয়ের কাছাকাছি থাকা এক গৌরবোজ্জ্বল দিন। পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধান ভাষা ছিল উর্দু। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের প্রধান ভাষা ছিল বাংলা। বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার দাবিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অধুনা স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের মাটিতে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন। ১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনরত ছাত্র ও সমাজকর্মীদের ওপর বর্বর পাকিস্তানি পুলিশ গুলিবর্ষণ করলে রফিক, সালাম, জব্বর, শফিউর, বরকত-সহ অনেক তরুণ শহিদ হন।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো প্যারিস অধিবেশনে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০০ সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর রাষ্ট্রসংঘের অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করার প্রস্তাব আনে। এই প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। ঠিক তার ২ বছর পরে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ রিপাবলিক অফ সিয়েরা লিওনে সরকারি প্রধান ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় বাংলা ভাষাকে। ঘটনাচক্রে ভাষা আন্দোলনের ৫০ বছর পূর্তির বছরে আরেকবার বড়ো স্বীকৃতি পায় বাংলা ভাষা।
কীভাবে সিয়েরা লিওনের অফিশিয়াল ভাষা হল বাংলা?
১৯৯১ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ভয়ঙ্কর গৃহযুদ্ধ চলে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশে। শান্তি ফিরিয়ে আনতে যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিয়েরা লিওনে পিস কিপিং ফোর্স বা শান্তি রক্ষা বাহিনী মোতায়েন করে রাষ্ট্রসংঘ। সেই শান্তি রক্ষা বাহিনীর সিংহভাগই ছিলেন বাংলাদেশের সেনারা। তাঁদের প্রচেষ্টায় শান্তি ফেরে পশ্চিম আফ্রিকার দেশে। বাংলাদেশের সেনাদের কর্তব্যকে স্বীকৃতি দেয় সিয়েরা লিওন সরকারও। ২০০২ সালে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশে শান্তি ফিরলে রিপাবলিক অফ সিয়েরা লিওনের অফিশিয়াল প্রধান ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট আহমাদ তেজান কাব্বাহ। সেই থেকে পশ্চিম আফ্রিকার এই ছোট্ট দেশের মানুষ বাংলায় কথা বলে। স্কুল, কলেজ, সরকারি দফতর, আদালতেও অফিশিয়াল ভাষা হিসাবে বাংলাকে ব্যবহার করা হয়।