জীবনের কথা না ভেবে মাদকের নেশায় বুঁদ যুবকরা
Young people addicted to drugs without thinking about life

Truth Of Bengal:সুমিত দে, কলকাতা: খাস কলকাতায় চলছে ড্রাগের রমরমা কারবার। জীবনের কথা না ভেবেই মাদকের নেশায় বুঁদ যুবকরা। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে কেউ শরীরে নিচ্ছে সাপের বিষ, কেউ আবার সেবন করছে হেরোইন। শিয়ালদা থেকে ট্যাংরা, সর্বত্র ড্রাগের এই ভয়ঙ্কর কারবার চোখে পড়ছে।
যুবসমাজের একাংশ বিপথগামী হয়ে নেশাগ্রস্ত হচ্ছে। খাস কলকাতায় রয়েছে নেশার কারবারীদের গোপন ডেরা। শিয়ালদা ও ট্যাংরার অন্ধকারের কারবারীদের গোপন আস্থানায় গিয়ে দেখা যায় কীভাবে তরতাজা যুবকরা নেশায় বুঁদ হয়ে থাকছে। কীভাবে নিজেদের জীবনের কথা না ভেবে তিল তিল করে জীবনকে নিঃশব্দ ঘাতকের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
রাজ্য সরকার যুবদের রোজগারের নানা ব্যবস্থা করছে। প্রচারও চলছে, তবু কে শোনে কার কথা।
বলা যায়, রাজ্যে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজা, চোলাই মদ, দেশি মদ, বিদেশি মদ, বিয়ার, রেক্টিফাইড স্পিরিট, ডিনেচার্ড স্পিরিট, তাড়ি, প্যাথেডিন, বুপ্রেনরফিন (টেমজেসিক ইঞ্জেকশন), ভাং, কোডিন ট্যাবলেট ও সিরাপ, ফার্মেন্টেড ওয়াশ (জাওয়া), বুপ্রেনরফিন (বনোজেসিক ইঞ্জেকশন), মরফিন, আইচ পিল, ভায়াগ্রা, টলুইন, পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট ও মিথাইল-ইথাইল কিটোন-সহ নানা মাদক দ্রব্য রয়েছে। এর বাইরেও আরও নানা ধরনের মাদক রয়েছে। সেইসব নেশাতেও কিছু হচ্ছে না পাঁড় নেশাখোরদের। শিয়ালদা ও ট্যাংরায় দেখা গেল নেশা করতে সাপের বিষ নিতেও দ্বিধা করছে না যুবকরা।
যাদের উপর এখন কোনও মাদকই প্রভাব ফেলতে পারছে না, তারা এখন সাপের বিষ ব্যবহার করছেন। সাপের বিষ নেশার কাজে ব্যবহার করার আগে প্রথমে একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়, যাতে সাপের বিষ প্রাণঘাতী না হয়। সেই ইনজেকশন নেওয়ার পর ইঞ্জেকশনের মাধ্যমেই সাপের বিষ শরীরে প্রবেশ করাচ্ছে নেশাখোররা। এই বিষ মানবদেহে পাঁচ থেকে ছয় দিন কার্যকর থাকে। বাজারে ১ মিলি কোবরা বিষের দাম ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত, যা গোপনে বিক্রি হয়। কেউ কেউ আবার হেরোইন আসক্ত হয়ে জীবনের জ্বালা জুড়ানোর চেষ্টা করছে।
আমাদের দেশে কিছুদিন পর পর একেকটি মাদকদ্রব্য নিয়ে হুজুগ ওঠে। আলোচিত হয়। আটের দশকে বিখ্যাত ছিল ফেনসিডিল, তারপর হেরোইন। গত কয়েক বছর ধরে চলছে ইয়াবা ও এলএসডি।
কলকাতার যেই অঞ্চলে সাপের বিষ প্রধানত নেওয়া হচ্ছে নেশার জন্য এলাকাটির পোশাকি নাম ট্যাংরা, পোস্ট অফিসের ঠিকানা অনুযায়ী ১৫ নম্বর জিকে রোড পিন ৭০০০৪৬। ট্যাংরা থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে জায়গাটির অবস্থান। পাশেই এন্টালি থানা, উঁচু জমি রেলের আরপিএফ-এর দখলে। আসলেই জায়গাটি একটি নেশার স্বর্গরাজ্য। অবাধে বিক্রি হচ্ছে হিরোইনের পাউডার, ক্রেতাদের তো সাতখুন মাপ। তবে এই রমরমা কারবার দেখেও রেল পুলিশ কেন নির্বিকার তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।