সরকারি জমির বেআইনি জবরদখল মুক্ত করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করল পূর্ত দপ্তর
The Public Works Department has issued a notification to release the illegal encroachment of government land

The Truth Of Bengal : সরকারের জমি জবরদখল আজকাল একেবারে ট্রেন্ডিং এ চলছে। সে ফুটপাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি জায়গায় বেআইনি নির্মাণ চলছে রমরমিয়ে। সেই রকমই হলদিরাম থেকে শুরু করে কৈখালী ভিআইপি রোডের দুই দিকেই সরকারি জমিকে অসংখ্য মানুষ জবরদখল করে নিজেদের সুবিধার্থে ব্যবহার করছে। কিছুতেই যেন সরকারি জমি জবর দখলে লাগাম টানা সম্ভব হচ্ছে না। অবশেষে, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে জবরদখল রুখতে বৃহস্পতিবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পূর্ত দপ্তর। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ঠিক কি জানানো হয়েছে?
বিজ্ঞপ্তি
ইতিমধ্যে ৪৮ জনকে বেআইনি দোকান ও ছাউনি সরানোর জন্য এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। যেদিন বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে সেদিন থেকে তিন দিনের মধ্যে তাদের ওই সরকারি জায়গা থেকে অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছে। সময়ের মধ্যে যদি তারা নিজেদের যাবতীয় জিনিসপত্র স্থানান্তরিত না করেন তাহলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অপরদিকে, বুধবার রাতে নিউটাউনে জবরদখল সরাতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল নিউ টাউন কলকাতা ডেভলপমেন্ট অথরিটিকে। সঙ্গে পুলিশ ফোর্স নিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসতে হয় তাদের। তবে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাকি সেই জবরদখল সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিরাম থেকে শুরু করে কৈখালী পর্যন্ত রাস্তার দুই দিকে ক্রমশ বেড়েই চলেছে জবরদখল। সরকারের জমির ওপর কোথাও রয়েছে দোকানপাট আবার কোথাও বেআইনি নির্মাণ তো কোথাও রাস্তার উপরে চলে এসেছে ছাউনি। আড়ি জবর দখলের জেরে ক্রমশ বাড়ছে ভিআইপি রোডের যানজট। ফুটপাতের উপর দোকান থাকায় পথ চলতি মানুষদের নানান সমস্যার মুখে পড়তে হয়। শুধু তাই নয় অফিস টাইমে তো রাস্তায় বের হওয়া একেবারে মুশকিল হয়ে পড়ছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তার নির্দেশিকা বের হয়েছিল। তবে এবার বৃহস্পতিবারে পূর্ত দপ্তরের বাগুইআটি হাইওয়ে সাব ডিভিশনের পক্ষ থেকে জবরদখল সরানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এরপর প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জবরদখলকারী সাধারণ মানুষের বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে বুঝিয়ে বলেন। পুলিশের এহেন কথায় সতর্ক হয়ে কয়েকজন দোকানদার তাদের ছাউনি খুলে নেন। কিন্তু কিছুজন তাদের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকেন।
অপরদিকে নিউটনের চকপাথুরিয়া এলাকায় এনকেডিএ’র জমির উপর জবরদখল রয়েছে। সেই জবরদখল সরানোর জন্য এনকেডির পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও কেউ এক চুল জমিও ছেড়ে যায়নি। বুধবার রাতে টেকনো সিটি থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এন্ডি এর আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তাদের অবৈধ দোকান ঘর ভাঙ্গার জন্য জেসিবি ও নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু জায়গা ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে দোকানদাররা উল্টে ওই আধিকারিকদের ওপরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। জবরদখলকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, তারা ১৫ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছেন তাহলে এখন কেন তারা সরবেন? তবে এনকেডিএ হাল না ছেড়ে ফের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
প্রসঙ্গত, উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের ধমকে কাজ না হলে অবশেষে শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমকে সল্টলেকের জবরদখল সরানো সম্ভব হয়। ঠিক তার পরের দিন নিউটাউনের কোল ভবন সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১১ টি জবরদখলকারি দোকান সরাতে সক্ষম হয় এনকেডিএ। এরপর দ্বিতীয় পদক্ষেপ হিসেবে চকপাথুরিয়ায় জবরদখল তোলার কাজ শুরু হল।