কলকাতা

নারকেলডাঙা অগ্নিকাণ্ড: মেয়রকে ঘিরে বিক্ষোভ, উত্তপ্ত পরিস্থিতি

Narkeldanga fire: Protests surrounding the mayor, heated situation

Truth Of Bengal: নারকেলডাঙায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় হাবিবুল্লা মোল্লার (৫২)। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ৩০-এর বেশি ঝুপড়ি, নিঃস্ব বহু পরিবার।

শনিবার গভীর রাতে আচমকা আগুন লাগে নারকেলডাঙা খালপাড়ের ঝুপড়িগুলিতে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। স্থানীয়রা দ্রুত জল ফেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অভিযোগ, ফায়ার ব্রিগেড এক ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছনোয় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়ে যায়।

সারা জীবনের সঞ্চয় নিমেষে পুড়ে ছাই। কেউ এক কাপড়ে সন্তানকে নিয়ে বেরিয়ে এসেছেন, কেউ শেষ সম্বলটুকু খুঁজতে ছাইয়ের গাদায় হাতড়াচ্ছেন। এক বাসিন্দার কান্নায় ভেঙে পড়া স্বর, “৯০ টাকা পেয়েছি, আর কিছু পাইনি।” একজন মা বলছেন, “আমার ছেলে, আমরা এক জামায় বেরিয়েছি। রাত থেকে কিছু খেতে পাইনি।” আরেকজনের বুকফাটা আর্তি, “আমার মেয়েদের সামনে পরীক্ষা, সব বই-খাতা পুড়ে গেছে। আমরা কী করব এখন?”

৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সচিন সিংহের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, তিনি টাকা তুলেছেন, অথচ এলাকার মানুষের জন্য কিছু করেননি। মেয়র ফিরহাদ হাকিম ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষোভ চরমে ওঠে। মেয়র ফিরে যেতেই শুরু হয় উত্তেজনা, পুলিশের সামনেই দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে “চোর” স্লোগান ওঠে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে থানার সামনে শাসক দলের নেতারাই অবস্থান বিক্ষোভে বসেন।

এই অগ্নিকাণ্ড নিয়ে রাজনীতি করতে চান না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “কোনও রাজনীতিতে যাব না। আইন অনুযায়ী সব কিছু হবে।” কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো দিশেহারা। মাথার ওপর ছাদ নেই, খাবার নেই, আগামী দিনের নিশ্চয়তা নেই। তারা চাইছেন, দ্রুত পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণ, যাতে অন্তত মাথার ওপরে একটা ছাদ থাকে।

এই ভয়াবহ বিপর্যয়ে শোকস্তব্ধ নারকেলডাঙার খালপাড়। চোখের সামনে শেষ হয়ে গেছে জীবনভর গড়া সংসার। দগ্ধ ধ্বংসস্তূপের মাঝে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন কতটা সম্ভব, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

Related Articles