কলকাতা

জমজমাট জামাই ষষ্ঠী পার্বণ,বাজারে বাজারে ভিড়,ভুরিভোজের এলাহি আয়োজন

Jamai Sasthi Parivahan

The Truth of Bengal: ষষ্ঠীতে কব্জি ডুবিয়ে জামাইরা যাতে খেতে পারে,সেজন্য বাজারে বাজারে ভিড় করেন শ্বশুর-শাশুড়িরা।পঞ্চব্যাঞ্জনে জামাই আদর করার জন্য এলাহি আয়োজন করা হয়। ব্যাগভর্তি করে-মিষ্টি-ফলের মতোই মাছ-মিষ্টি কিনে আনেন তাঁরা।জৈষ্ঠমাসের এই অন্যতম পার্বণ ঘিরে ঘরে ঘরে ধুম লেগে যায়। বাঙালির এই ঘরোয়া অনুষ্ঠান নিয়েই একটি বিশেষ প্রতিবেদন।

বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ।আর সেই পার্বণের মধ্যে  আলাদা জাঁকজমক করা হয় জামাই ষষ্ঠীতে।ফেসবুক-হোয়াট্যসঅ্যাপেও স্টেটাস দেওয়া হচ্ছে এই জামাই বরণ অনুষ্ঠানের। শুভ অনুষ্ঠানে জামাইয়ের সুখ-সমৃদ্ধি কামনার চেষ্টা জারি আছে।  জামাইদের আদর করার  জন্য শাশুড়িরা যে আয়োজন করেন তাতে বেশ চমকও থাকে। কেন এই জামাই ষষ্ঠীর আয়োজন করা হয় ? কেন বাঙালির ঘরোয়া মহলে এই উত্সবের বিশেষ কদর রয়েছে জানেন কী? কথিত আছে, আঠেরো-উনিশ শতকে যখন বিধবাদের জীবনে ছিল সতীদাহের যন্ত্রণা, সেই পরিস্থিতিতে বাঙালি মা ও মেয়েদের কাছে জামাই ও স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনার জন্য মাঙ্গলিক পথ গ্রহণ করার চেষ্টা হয়।

বলা যায়, সেসময়ে বিয়ের পর মেয়েরা ইচ্ছা করলেই বাপের বাড়ি যেতে পারতেন না। তাই মেয়ের বাপের বাড়ি আসার পথ তৈরি করতে এই অনুষ্ঠানকে বেছে নেওয়া হয়।  ষষ্ঠী উপলক্ষে জামাইকে নিমন্ত্রণ করলে মেয়েরাও এই দিন অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে বাবা-মায়ের কাছে যাওয়ার সুযোগ পান। জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষে তাই এই জামাই ষষ্ঠীর প্রথা বড় জায়গা করে নিয়েছে দাম্পত্য জীবনে।সামাজিক বাঁধনের মতোই ভোজনরসিক বাঙালি তাই খাওয়া-দাওয়ায় বেশি অগ্রাধিকার দেয়।সেজন্য জামাইষষ্ঠীতে দেখা যায় দেদার ফল-মিষ্টি থেকে মাছ-মাংস কেনার হিড়িক। দেখা যায়,জামাই ষষ্ঠী স্পেশাল মিষ্টি।আমের সময় বলে  আমের চমচম,জামাইষষ্ঠী সন্দেশ,রেনবো সন্দেশ,নৌকো বিলাস সন্দেশও নতুন আইটেমে জায়গা করে নেয়।

জামাইষষ্ঠীর ফলাহারে যেমন থাকে আম-কাঁঠাল-জাম-লিচু-সহ নানা ফল। হিমসাগর আমের দাম ১৫০থেকে ২০০টাকার মধ্যে ছিল।কাঁঠাল,লিচুর দরও একশ পেরিয়ে যায়।ফল মিষ্টির মতোই দুপুরের পাতে রাখা হয় ইলিশ, চিংড়ি-ভেটকি মাছের রকমারি পদ। যাঁরা আবার মটনপ্রিয় তাঁরা  কচি পাঁঠার মাংস সহযোগে জামাইকে আপ্রায়ণের চেষ্টা করেন।মূলতঃ জামাই বাবাজি যাতে কব্জি ডুবিয়ে অতুলনীয় স্বাদের খাবার খেতে পারে সেজন্য পকেটের টান পড়লেও ঝুঁকতে রাজি হননি। রুই-কাতলা মাছের দর ৩০০টাকা পেরিয়ে যায়।ইলিশের দর হাজার-বারোশোর ঘরেই ছিল। তাতে মধ্যবিত্তের পকেটে ছ্যাঁকা লাগার অবস্থা হয়।তবু পঞ্চ ব্যাঞ্জনে জামাই আদরে কেউ খামতি রাখে নি।আহারে বাহার ছিল নজরকাড়া। আর জামাইয়ের নামে এই জমজমাট ভোজের আয়োজনে শুশুরবাড়ির লোকেরাও যে পাত পেড়ে খান তা বলাই যায়।

Related Articles