কলকাতা

চোরবাগানের শীলবাড়ির প্রকৃতিরূপে দুর্গার পুজো হয়! ১০ দিন ধরে পুজোর সমাগমে মেতে ওঠে পুজোর দালান

Durga Pujo 2023

The Truth of Bengal: চোরবাগান শীল বাড়ির পুজোর প্রচলন করেন রামচাঁদ শীল মহাশয়। প্রথম দিকে রামচাঁদ মহাশয় এবং তার স্ত্রী, কুল-গুরুর বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেন। এর পর ১৯৫৬-এ কলকাতার চোরবাগান শীল বাড়িতে মহা সমাগমে শুরু করা হয় দুর্গাপুজো। আজও রীতি মেনে চলছে তার ধারা। শক্তির উৎস প্রকৃতি। শক্তিরূপেণ দশভুজাও। চোরবাগানের শীলবাড়িতে তাই প্রকৃতিরূপে দুর্গার পুজো। নবজাগরণের বাংলায় ধর্ম আর সমাজ নিয়ে জোর তর্কাতর্কি। দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রেখেই ব্যবসায়ী রামচাঁদ শীল পুজো শুরু করেছিলেন। তারপর থেকেই পুজো এলেই ধুমধামে সরগরম শীলবাড়ি।

লাল বেনারসীতে মোহময়ী তিনি… টানা চোখ, সোনালি আভায় ঠাকুরদালান আলো করে আছেন দশভুজা। দুলে দুলে ঘণ্টাটা জানায়, পুজোর বাদ্যি বেজেছে। চোরবাগান শীলবাড়িতে দুর্গার আরাধনা শুরু দেড়শো বছরেরও আগে।ব্যবসায়ী রামচাঁদ শীল চন্দননগর থেকে কলকাতায় এসে গঙ্গার ধারে বাড়ি তৈরি করেন। রাজা রামমোহন রায়ের সময়ে তখন বাংলায় নবজাগরণের হাওয়া। নিরাকার না সাকার? দোটানা আর বিতর্কের মাধেই পুজো শীলবাড়িতে পুজো শুরু রামবাবুর। ষষ্ঠী থেকে দশমী.. হাজারো উপাচারে ঐতিহ্যগুলো নতুন হয় শীলবাড়ির অন্দরে। প্রকৃতিরূপে উমার আরাধনা করছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। আটপেড়ে শাড়ি, সোনার গয়নায় সেজে ওঠেন শীলবাড়ির মহিলারা। মুছে যাওয়া বাবুয়ানি যেন এ-কটা দিন আবার গর্জে ওঠে। নবমীতে প্রথমে গাভী পুজো দিয়ে শুর হয়।

এরপর হয় সন্ধিপূজা। ১০৮ টি প্রদীপ ও পদ্মফুল মা দুর্গাকে উৎসর্গ করা হয়।এরপর, মহা নবমীতে শীল বাড়িতে সধবা এবং কুমারী পুজো করা হয়। পুজোর দিনগুলোতে শীলবাড়িতে পেটপুজোও জম্পেশ। দুঃস্থ পরিবার মেয়ের বিয়েতে সাহায্য চাইলে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতীর বেনারসী আশীর্বাদের মত দিয়ে দেয় শীলপরিবার। নবজাগরণের ইতিহাস আর বনেদিয়ানার বহমানতায় পুজো জমজমাট চোরবাগানের বিশাল বাড়িটাতে। পুজোর ভোগের বিপুল আয়োজনে করা হয় থাকে। লুচি, কচুরি, মিষ্টি-সহ থাকে আরও অনেক কিছু। নবমীর দিনে শীল বাড়ির সংলগ্ন সকল দুস্থ পল্লিবাসীর জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।

Free Access

Related Articles