মায়ের হাতে মেয়ের মৃত্যু, চাঞ্চল্যকর ঘটনা ব্যারাকপুরে
Daughter's death at the hands of mother, sensational incident in Barrackpore

Truth Of Bengal: ব্যারাকপুরের আনন্দপুরীর একটি আবাসনে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। ১১ বছরের নাবালিকা রাজন্যা ঘোষকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার নিজেরই মায়ের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘুমানোর সময়, রাজন্যাকে গলা টিপে হত্যা করা হয় বলে পুলিশের অনুমান। এই ঘটনা এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক এবং শোকের সৃষ্টি করেছে।
ব্যারাকপুর আনন্দপুরীর ডি রোডের একটি আবাসনে বাস করেন ইন্দ্রজিৎ ঘোষ এবং তার স্ত্রী, যিনি স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। বৃহস্পতিবার রাতে একমাত্র মেয়ে রাজন্যাকে নিয়ে ঘুমাতে যান তার মা। শুক্রবার দুপুর গড়ালেও দরজা খুলে না দেওয়ায় ইন্দ্রজিৎ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। প্রতিবেশীরা অনেক চেষ্টা করেও দরজা খুলতে পারেননি, শেষে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে দেখতে পায় রাজন্যা মৃত অবস্থায় বিছানায় শুয়ে রয়েছে।
ঘটনার পর তদন্তকারীরা মায়ের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলে বিষয়টি তদন্ত করেন। জিজ্ঞাসাবাদে মা বলেন, “বড় হচ্ছে। ওর উপরে অন্যেরা অত্যাচার করবে, এটা হতে পারে না। আর কেউ ওর কিছু করতে পারবে না।” এই কথা শুনে তদন্তকারীরা হতবাক হয়ে যান। ব্যারাকপুরের নগরপাল অলোক রাজোরিয়া বলেন, “আমরা সংবেদনশীলতার সঙ্গেই তদন্ত করছি। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলব। ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।”
ইন্দ্রজিৎ ঘোষ জানান, কয়েক বছর আগে শ্যামনগরের গাঙ্গুলিপাড়ায় তাদের বাড়ি ছাড়েন তারা। স্ত্রী অস্বাভাবিক আচরণ করলেও মেয়ে রাজন্যার প্রতি তার ভালবাসা ছিল অপরিসীম। মেয়ের সামান্য অসুস্থতাতেও তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তেন।
মনোবিদ কৌস্তভ চক্রবর্তী এই ঘটনা সম্পর্কে বলেন, “স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা কাজ করে প্রতিনিয়ত। তাদের নিজের কিছু হারানোর ভয় তাড়া করে। দ্রুত বদলে যাওয়া সমাজের ঘটনাগুলো সুস্থ মানুষকেও ভাবায়, সেখানে স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এর মারাত্মক প্রভাব পড়ে।” অভিযুক্তের সাইকোলজিক্যাল অটোপ্সি করা প্রয়োজন, তবেই ঘটনা পরিষ্কার হবে।”
এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে এবং পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। এই ঘটনায় স্থানীয় সমাজের মনোভাব এবং মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলিও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।