কলকাতাফিচার

ঘর ছেড়েছিলেন বিমান বসু, কীসের টানে জানেন?

Biman Basu left home, do you know why?

সৌরভ গুহ: “মাগো তুমি এমন করে কেঁদো না। আমার ক্ষতি হবে। আমি তো নতুন সংসার করব বলে তোমার সংসার ছাড়ছি না। তুমি তো জানো, কি কারণে আমি বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছি। আমি কথা দিচ্ছি, কোনও দিন নিজের সংসার করব না।” -বালিগঞ্জের অভিজাত পাড়ার পৈতৃক ভিটে ছাড়ার আগে, মায়ের দুটো হাত ধরে একটা কথাই বলে উঠতে পেরেছিলেন বিমান বসু। মাকে শান্তনা দিতে সেদিন আর কোনও বাক্য মুখে আসেনি তাঁর। ১৯৭১-এর ঝোড়ো সময়। বাড়ি যে তিনি ছাড়বেন তা বেশ কিছুদিন ধরেই একপ্রকার স্থির। লাল ঝাণ্ডার মতাদর্শ, আর বালিগঞ্জের প্রাসাদোপম পৈতৃক ভিটে এক গভীর দ্বন্দ্বের মাঝখানে এনে দাঁড় করাচ্ছিল বিমান বসুকে।

মেহনতি মানুষের জীবন ধারার সঙ্গে তার পারিবারিক অবস্থান যে এক গভীর বৈপরীত্য তৈরি করছে, তা মনে মনে বিলক্ষণ টের পাচ্ছিলেন বিমান। তার ওপর মাঝে মধ্যেই বাড়িতে পুলিশি হানা। ব্যাবসায়ী দাদাদের আর বিব্রত করতে চাইছিলেন না প্রমোদ দাশগুপ্তের মানসপুত্র। ছাত্র রাজনীতির জোয়ার যাঁকে ক্রমাগত বৃহত্তর সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতির সমুদ্রে নিক্ষেপ করছিল। বিমান বসু ভাবছিলেন মাভৈ বলে জীবন তরী ভাসাবেন। কিন্তু বাড়ি ছেড়ে থাকবেন কোথায়? শহর কলকাত বললেই তো আর কম পয়সায় মোটের ওপর মাথা গোঁজার ঠাঁই পাওয়া যায় না। তার ওপর পি সুন্দরাইয়া আগে থাকতেই জানিয়ে দিয়েছেন সেলামি দিতে পারবে না পার্টি।

কিছু টাকা অগ্রিম্ দেওয়া যেতে পারে। হন্যে হয়ে বাড়ি খুঁজেও বারে বারে বিফল হয়ে শেষমেশ স্টেটসম্যান কাগজে বিজ্ঞাপন দিলেন বিমান বসু। একবার নয়, দু-দু’বার। বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ অনেকেই করে। বাড়িও পছন্দ হয়। কিন্তু বাদ সাধে সেলামি। সেলামি দেওয়ার অত পয়সা নেই পার্টির। অতএব দীর্ঘদিন ধরে চেয়েও বাড়ি ছাড়া হচ্ছিল না বিমানের। শেষমেশ মহার্ঘ এক খবর এল, পরিচিত পার্টি কমরেড মারফৎ। ৩৬ নম্বর বেনিয়াপুকুর রোড। কৃষকসভার অফিসে একটি রান্নাঘর বাড়তি পড়ে আছে।

একজন ব্যাচেলার থাকার পক্ষে উপযুক্ত। বিমান বসু যেন নাগালে চাঁদ পেলেন। খবরটা আসার সঙ্গে সঙ্গেই ছুটলেন ঘর দেখতে। গিয়ে দেখেন কে বা কারা যেন তালা দিয়ে চলে গেছেন। চূড়ান্ত হতাশ হলেও হাল ছাড়তে নারাজ বিমান। শুরু হল খোঁজ। কৃষকসভার রান্নাঘর কার দখলে গেল। অনেক খোঁজ করে জানা গেল লক্ষ্মী ঘোষ এই ঘরটায় থাকবেন বলে তালা দিয়ে গেছেন। শেষমেশ অবশ্য অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ঘরটা বিমান বসুর কপালেই জোটে।

অনুজ কমরেডকে ঘর ছেড়ে দেন লক্ষ্মী ঘোষ। তালা খুলে বিমান বসু দেখলেন আট বাই দশের ছোটো রান্নাঘর। পি সুন্দরাইয়া জিজ্ঞাসা করলেন, “এ ঘরে কি থাকতে পারবে?” উত্তরে বিমান বসু জানিয়েছিলেন “দারুন, এতো আমার কাছে স্বর্গ”। আর বাড়ি ছাড়তে বাধা নেই। সামান্য কয়েকটা ব্যক্তিগত জিনিস বাক্সবন্দি করে বালিগঞ্জের তিনতলা বাড়ির সদর দরজার দিকে পা বাড়ালেন বিমান বসু। মায়ের আকুল কান্না তাঁকে বারে বারে থামিয়ে দিচ্ছিল, আপ্রাণ শান্তনা দিচ্ছিলেন বিমান। তবু শত শান্তনায় কাজ না হওয়ায় শেষমেশ মায়ের দুটো হাত ধরে বিমান বসু বললেন “মা তুমি কেঁদো না, আমার ক্ষতি হবে। তুমি তো জানো…..।”

সদর দরজা পেরিয়ে রাস্তায় নামলেন বিমান বসু। পেছনে পড়ে রইল বালিগঞ্জের পৈতৃক অট্টালিকা। দুধে-ভাতের জীবন ছেড়ে মাড় মেশানো ডাল আর ফুটপাতের হোটেলের রুটি তাকে ডাকছিল অন্য একজীবনে। অনেকদিন ধরেই বাড়ির পরিবেশের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান, বিশ্বাস ক্রমেই যেন সহাবস্থানের প্রতিকূল হয়ে উঠেছিল। দ্বন্দ শুরু হয়েছিল বহু আগেই। বড়দা প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী, বাবা চিকিৎসক। অন্য দাদারাও ব্যবসায়। এর মধ্যে বড়দার সঙ্গে বিধানচন্দ্র রায়ের ব্যক্তিগত আলাপ। নিছক আলাপ-ই না। বিধান রায়ের নির্বাচনে একজন বিশ্বস্ত সৈনিকও বটে বিমান বসুর বড়োভাই। নির্বাচন এলেই ফোন বেজে উঠত বসু পরিবারে। ফোনের ও প্রান্তে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। “কি হে ব্যাবসার কাজ গুছিয়ে নিয়েছো তো? এবার চলো নির্বাচন করতে হবে।”

গলদ গম্ভীর গলায় বড়দা’কে এভাবেই নির্দেশ দিতেন বিধান রায়। এহেন বাড়িতে তেড়িয়া ছাত্রনেতার খোঁজে পুলিশ আসছে। তা কি কেউ স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারবে। মানতে পারেন নি দাদারা। বাড়ি ছাড়া ভাইকে মিছিল থেকে ধরে নিয়ে এসেছেন বারে বারে। বিমান বসু আবার পালিয়েছেন। মিছিল, সংগঠন, পার্টি তাঁকে বারে বারে পলাতক করেছে। সত্যনারায়ণ থেকে দুর্গাপূজা, লক্ষ্মী থেকে কালী। সব দেবতারাই সারাবছর পূজিত হতেন বসু পরিবারে। ‘পথভ্রষ্ট’ ছেলের মতি ফেরাতে কম মানত করেনি, গোটা পরিবার। তবু বিমান বসুর মতি ফেরেনি। বরং মন আরও নিবিড় হয়েছে গরিব খেটে খাওয়া মানুষের জীবন সংগ্রামের প্রতি। তবে সে পথে নেমেও মানসিক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছেন বারে বারে। মিছিল-এ পুলিশের লাঠিতে একবার পা রক্তাক্ত হয়ে প্যান্ট ভিজে উঠল।

এই অবস্থায় আর যাইহোক বাড়ি ফেরা যায় না। রাজনৈতিক ভাবে ‘ডি-ক্লাস্ড’ হওয়ার বাসনা তখন তীব্র। বাড়ি না ফিরে বিমান গিয়ে উঠলেন এক শ্রমিক মহল্লার বস্তিতে। ছোট্ট একটা বেড়ার ঘরে অতিথিকে থাকতে দেওয়া হল। গোটা ঘরে অদ্ভুত এক বোঁটকা গন্ধ। তার ওপর যে বালিশটা’য় মাথা দিয়েছেন বিমান বসু তা তেল চিটচিটে। গোটা বিছানায় চিটচিটে তেল। রাতে হলুদ বাল্বটা নিভিয়ে দিলেন গৃহকর্তা। বালিশ, বিছানা, চাদর, সব কিছু যেন গিলে খেতে আসছে বিমান বসুকে। মাথা থেকে গন্ধময় তেল চিটচিটে বালিশটা সরিয়ে রেখে রাতটা কোনও মতে কাটিয়ে দিলেন বিমান।

সকালে উঠে প্রবল চাপ। টয়লেটের খোঁজ করতেই, গৃহকর্তা দেখিয়ে দিলেন বেড়া দিয়ে ঘেরা ছাদ বিহীন কুঠুরি। জীবনের প্রথম ‘খাটা পায়খানা’ দেখে বিমান বসুর নিজের কথায় ‘চাপ ঠেলে সব যেন মাথার ওপর উঠে আসছিল’। এহেন বিমান বসুর, স্বর্গ বলেই মনে হল কৃষকসভার ছোট্ট রান্নাঘরটি’কে। ঘরের এক দেয়ালে ছোটো একটা বই রাখার তাক বানিয়ে নিলেন। টুকিটাকি রান্নার জন্য কিনে নিলেন স্টোভও। তবে রাতের খাবার-এ বরাদ্দ যে মাত্র ২০ পয়সার রুটি। পঞ্চাশ পয়সার তড়কা। আর সঙ্গে মাড় দেওয়া ডাল ফ্রি। মাড় দেওয়া ডালে স্বাদ আর কি থাকবে? তবু বিমান বোস রোজ রাতে চোঁ চোঁ করে ওই ডালই খেতেন। রাজ হোটেলের মাড় দেওয়া ডাল শরীরের পক্ষে ভালো। এই ছিল বিমান বসুর বিশ্বাস। যাই হোক একঘেয়ে রুটি তরকা, ডাল আর কাহাতক ভালো লাগে। আহা মায়ের হাতের কি সব রান্না।

আহ্ কতদিন একটু পায়েশ খাওয়া হয়নি। ভাবনাটা মাথায় আসতেই তরাক করে পাশের দোকানে ছুটলেন বিমান বসু। একটা গুড়ো দুধের প্যাকেট, চিনি আর অল্প কিসমিস। আর অল্প বাসমতি চাল। সসপ্যানে দুধটাকে ভালো করে গুলে ফুটিয়ে নিলেন বিমান। পরিমাণটা মায়ের কাছে শেখা। এক লিটার দুধে এক চেটো বাসমতি। চিনি পরিমাণ মতো। জীবনের প্রথম নিজের হাতে পায়েশ রান্না করে, ডিনার সারলেন বিমান বসু। তারপর ঢক ঢক করে জল। বাকি পায়েস রেখে দিলেন সকালের জন্য।

বন রুটি দিয়ে হবে ব্রেকফাস্ট। জীবনের প্রথম প্রিয় খাদ্য রান্না করে নিজেই শুধু খেলেন না, পায়েস রান্নার জন্য পার্টির পরিচিতদের কাছে রীতিমতো বিখ্যাত হয়ে উঠলেন বিমান। পি সুন্দরাইয়া থেকে প্রমোদ দাশগুপ্ত – কে না খেয়েছেন বিমান বসুর রান্না করা পায়েস। বিমান বসুর পায়েসের গুণমান এমনই যে, পুরুলিয়ার পার্টি সম্মেলনে একবার গেছেন বিমান বসু। জেলার পরিচিত নেতারা ছেঁকে ধরলেন ‘বিমান দা, পায়েস করে খাওয়াতে হবে’। রাত দশটা, জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। তাতে কী? অনুজদের আবদারে অকৃতদার বিমানদা তখনই রাজি। দাদার ফরমায়েশ মেনে একে একে এল দুধ, বাসমতী, চিনি, কাজু, কিসমিস। গভীর রাতে রান্না হল পায়েস। গরম গরমই হই হই করে সবাই মিলে খাওয়া হল বিমান বসুর স্পেশাল পায়েস রান্না। পায়েস রান্নার পর বিমান বসুর দ্বিতীয় পছন্দের রান্না ‘খিচুড়ি’। সে রান্না রেঁধে এক সময় গোটা আলিমুদ্দিনকেও খাইয়েছেন বিমান।

রান্নার মতোই বিমান বসুর আরেক নেশা গাছ। রাজনৈতিক জীবনে যেখানেই থেকেছেন, বিমান বসুর হাতের ছোঁয়ায় সেখানেই গড়ে উঠেছে বাগান। একসময় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে পার্টির সদর দপ্তরে পাকাপাকি বাসিন্দা হওয়ার পর আলিমুদ্দিনের ছাদে বিমান বসু গড়ে তুললেন তার সাধের বাগান। রীতি মতো মালি জুটিয়ে দিনরাতের তদারকিতে গড়ে উঠল বাগান।

প্রথমে এল পঁচিশটা টব। ফুল-এর পাশাপাশি বড়ো বড়ো টবে বসল পেয়ারা, সবেদা, বাতাবি লেবুর ঝাকড়া গাছ। তারপর বাগান ছড়াল গোটা ছাদ জুড়ে ধাপে ধাপে। আসলে সংসার ছেড়েছিলেন বিমান বসু, কিন্তু মাকে ছাড়তে পারেননি। রান্না থেকে বাগান সারাজীবন ধরে মায়ের ছায়াই বয়ে বেড়িয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান। এই ফুলের, ফলের বাগান করাটাও তো মায়ের হাতেই শেখা। বালিগঞ্জের বাড়ির গাড়ি বারান্দায় মা-ইতো শিখিয়েছিল কীভাবে বাগান করতে হয়। এই নিয়ে মায়েপো-এ খুনসুটিও তো কম হতো না।

একবার বালিগঞ্জের বাড়িতে, ডালিয়া গাছ করবেন বলে বেশ কয়েকটা টবে মাটি তৈরি করলেন বিমান বসু। টবে মাটি তৈরি করে পার্টির কাজে বাইরে চলে গেছেন। বেশ কয়েকদিন পর বাড়িতে ফিরে দেখেন, ডালিয়ার জন্য বরাদ্দ টবে মা যথারীতি লঙ্কা গাছ লাগিয়ে বসে আছেন। উর্বর সার পেয়ে লঙ্কা গাছ ঝাঁকরা দিয়ে বাড়ছে। লঙ্কা গাছ দেখে মায়ের তো খুশি ধরে না। এদিকে ডালিয়া গাছ লাগানোর সিজন প্রায় যেতে বসেছে, অগত্যা একদিন সকালে, বাড়ির কেউ ঘুম থেকে ওঠার আগেই চুপ করে একটা কাণ্ড করলেন বিমান। একটা ব্লেড নিয়ে লঙ্কা গাছের গোড়া কেটে দিয়ে তুতে লাগিয়ে দিলেন। ব্যাস, ঝাঁকড়া লঙ্কা গাছ কিছুদিনেই শুকিয়ে গেল।

মা খুব দুঃখ পেয়েছিলেন, তবে কাণ্ডটা ঠাহর করতে পারেননি। আর সেই টবগুলোই পুনর্দখল করে এবার ডালিয়া লাগালেন বিমান। পাঁচিল ছাড়িয়ে সে গাছের ফুল রাস্তা থেকেও দেখা যেত। ডালিয়া দেখে বেজায় খুশি মাও। তবে ঘুণাক্ষরেও জানতেন না তার সাধের লঙ্কা গাছ কে ধ্বংস করল। জানলে অবশ্য বাড়ির পরিবেশ অন্যরকম হতো। নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা বিমানের চরিত্র নয়। বাড়ির আর পাঁচজনের জীবন সংস্কৃতির ঠিক বিপরীত পথে হাঁটতে গিয়ে শত বাধাতেও নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরেননি। এই যেমন বাড়িতে সকালের কাগজ প্রথম পড়ার অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া।

শত বলেও সকালের কাগজের নাগাল পাচ্ছেন না বিমান। কাগজের হেডলাইনগুলো না দেখে কি চা খাওয়া যায়? বাড়িতে সব কাগজ আসে অথচ, বাবা, দাদাদের দখলে। সকালের কাগজের নাগাল মেলে বেলা দশটায়। ততক্ষণে সব বাসি। এর একটা বিহিত করা উচিত। অনেক ভেবে একটা পথ ভাবলেন বিমান। এমনিতেই বাড়ির পোষ্য টাইগার-এর সঙ্গে তার জমাটি ভাব। মা, পাতে একের জায়গায় দুটি মাছ দিলে একটি মাছ সটান মাটিতে ফেলে দিতেন বিমান, যেখানে ওত পেতে থাকতো টাইগার। প্রাপ্তির আকর্ষণ অস্বীকার করবে কে? দেখতে দেখতে বিমান বসুর রীতিমতো ন্যাওটা ইয়ে উঠল টাইগার। বিমান বসু ঠিক করে ফেললেন টাইগারকে দিয়েই কার্যসিদ্ধি করাবেন তিনি।

ব্যাস পরদিন থেকেই শুরু হয়ে গেল তালিম। সকাল সাতটায় উঠে টাইগারকে নিয়ে গাড়ি বারান্দায় চলে গেলেন বিমান বসু। ভাবটা এমন কুকুর নিয়ে ঘুরছেন। আসলে অন্যবুদ্ধি মাথায় ভাঁজছেন। সকালে কাগজের তাড়া গাড়ি বারান্দার মেঝেতে পড়তেই টাইগারকে মুখ দিয়ে তা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিলেন বাড়ির ছোটো মনিব। মুখে গোটা কাগজের তাড়া নিয়ে টাইগার তাকালো মনিবের দিকে। এবার, টাইগারকে ইশারা করে মনিব ছুটতে লাগল তিনতলার দিকে।

মনিবের নিজের ঘরে। এই রুটিন, প্র্যাকটিস চলল টানা তিনদিন। তারপর আর ভাবতে হয়নি। কাগজ বাড়িতে এলেই, টাইগার এর গ্রাস থেকে সে কাগজ নেয় কার সাধ্যি! আর কাগজ মুখে নিয়েই সোজা তিনতলায় বিমান বসুর ঘরে। বাবা, দাদা, সবাইকে টপকে পাট ভাঙা কাগজ আর সকালের চা, তিনতলার ঘরের জানলা দিয়ে আসা ঝকঝকে রোদ আহঃ, এসব স্মৃতি যেন মুছেও মোছে না। বয়েসে শুধু চুলের রঙ-ই সাদা হয়েছে। মন তো পড়ে আছে সেই কবেকার ফেলে আসা দিনগুলোতেই।

Related Articles