আন্তর্জাতিক

সূর্যগ্রহণের সময় শারীরিক সম্পর্ক করা কি উচিৎ? জেনে নিন কি করবেন কি করবেন না

Should you have sex during a solar eclipse? Know what to do and what not to do

Truth Of Bengal: সূর্যগ্রহণ একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, যা প্রাচীনকাল থেকে মানবসভ্যতাকে বিস্মিত ও কৌতূহলী করেছে। এটি ঘটে যখন চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে এসে পড়ে এবং সূর্যের আলো পৃথিবীর নির্দিষ্ট অংশে বাধাগ্রস্ত হয়। তবে এই মহাজাগতিক ঘটনার সঙ্গে নানা সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিশ্বাস জড়িয়ে আছে, যা একে কেবল বৈজ্ঞানিক নয়, আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

বহু সংস্কৃতিতে সূর্যগ্রহণকে একটি বিশেষ শক্তিশালী সময় হিসেবে গণ্য করা হয়, যখন মহাজাগতিক শক্তির ভারসাম্য পরিবর্তিত হয়। বিশেষ করে হিন্দু পুরাণে বলা হয়, এই সময় রাহু সূর্যকে গ্রাস করে, যা বিশ্বজগতের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলে। এই কারণে অনেক ধর্মীয় গোষ্ঠী সূর্যগ্রহণের সময় উপবাস, প্রার্থনা ও পবিত্র নদীতে স্নানের পরামর্শ দেয়। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এই সময় খাওয়া, ঘুমানো, এমনকি শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা উচিত নয়, কারণ এতে নেতিবাচক শক্তির প্রভাব পড়তে পারে।

ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, সূর্যগ্রহণের সময় শারীরিক ঘনিষ্ঠতা বা যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে তার প্রতিকূল ফলাফল হতে পারে, বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য। এমনকি অনেকে মনে করেন, এই সময় সন্তান ধারণ করলে তা সন্তানের বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যদিও বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে এ ধরনের ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। সূর্যগ্রহণ শুধুমাত্র চাঁদের ছায়ার কারণে ঘটে এবং এটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কোনো শারীরিক প্রভাব ফেলে না।

তবে সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের কারণে অনেক মানুষ সূর্যগ্রহণকে ভিন্নভাবে অনুভব করেন। যারা গ্রহণকালীন ধর্মীয় বিধিনিষেধ মেনে চলেন, তারা এই সময়ে মানসিক শান্তি লাভের জন্য ধ্যান, উপবাস ও অন্যান্য আচার পালন করে থাকেন। অন্যদিকে, যারা আধুনিক বিজ্ঞানের যুক্তিতে বিশ্বাসী, তারা সূর্যগ্রহণকে শুধুমাত্র একটি মহাজাগতিক ঘটনা হিসেবে দেখে এবং তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে যান।

সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক বিশ্বাসের মধ্যে পার্থক্য থাকলেও, এটি মানুষের কৌতূহল ও ভাবনার জগতে চিরকালই গুরুত্বপূর্ণ থাকবে। ব্যক্তি বিশেষের বিশ্বাস অনুযায়ী, গ্রহণকালীন আচরণ নির্ধারিত হতে পারে। তবে বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে, সূর্যগ্রহণ মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। তাই এই বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা ও যুক্তিনির্ভর দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করাই হতে পারে সেরা পথ।