আন্তর্জাতিক

মার্কিন মুলুকে সরস্বতীর আরাধনায় মাতলেন অনাবাসীরা

Non-residents in the US are intoxicated by the worship of Saraswati

Truth Of Bengal: সরস্বতীর কৃপায় বিদ্যালাভ হয়েছে ওঁদের। বর্তমানে দেশের মায়া ভুলে রয়েছেন সুদূর আমেরিকাতে।বিদেশে থাকলেও শিকড়ের সম্পর্ককে ভুলতে পারেননি প্রবাসীরা। তাই বসন্ত পঞ্চমীতে মার্কিন মুলুকের সিয়াটেলে বসবাসকারী বাঙালিররা নিজেরাই পুজোর আয়োজন করেন। মহিলা পুরোহিত প্রিয়াঙ্কা গাঙ্গুলি ও অন্বেষা চক্রবর্তী পুজোপাঠ করেন নিষ্ঠাভরে। পুজোপাঠের মাধ্যমে গুণী মানুষ থেকে বিভূঁইয়ে বসবাসকারী মধ্যবিত্তরা মাতৃবন্দনায় এক অন্য অনূভূতি বোধ করেন।

জ্ঞানের আলোয় জীবন ভরিয়ে ওঁরা সাগরপারে পাড়ি দিয়েছেন। বিদ্যার দেবীর আর্শীবাদে সবাই ওঁরা প্রতিষ্ঠিত।স্বদেশী মাটির মায়া ভুলে বিদেশেই রোজগারের সুযোগ করতে হয়েছে।তবু তাঁরা বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবীর প্রতি নিষ্ঠাভরে পুজোপাঠ ছাড়েননি। বলা যায়,সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে দেবী সরস্বতী হলেন জ্ঞান-বিদ্যা-সংস্কৃতি ও শুভ্রতার দেবী।দেবীর সৌম্য অবয়ব, শুভ্র বসন, হংস সম্বলিত পুস্তককে সামনে রেখেই পুজোপাঠ করা হয়। অনন্তকাল ধরে শিক্ষাকে শীর্ষে রাখা হয়েছে।

কথায় বলে, স্বদেশে পুজ্যতে রাজা, বিদ্যান সর্বত্র পুজ্যতে।তাই বিদ্যালাভের মাধ্যমে যেসব অনাবাসী বাঙালিরা আমেরিকায় রয়েছেন তাঁরাও করজোড়ে দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন। তাঁরা বলে ওঠেন, শ্বেতপদ্মাসনাদেবী শ্বেতপুষ্পোজশোভিতা। শ্বেতাম্বরধরা নিত্যা শ্বেতাগন্ধানুলেপনা। শ্বেতাক্ষসূত্রহস্তা চ শ্বেতচন্দনচর্চিতা। ওয়াশিংটন প্রদেশের সিয়াটেল শহরের প্রবাসী বাঙালিদের সংগঠন ঐক্যতান  সরস্বতীর আরাধনার আয়োজন করে। সংগঠনের পক্ষে অভিজ্ঞান মুখোপাধ্যায় জানান, আমরা  বাংলা ছেড়ে এত দূরে রয়েছি কিন্তু আমাদের যে পরম্পরা সেটা কিন্তু আমরা ভুলিনি, আমাদের প্রত্যেকটি আচার অনুষ্ঠান আমরা বছর ভোর পালন করি ব্যস্ত কর্মজীবনের মধ্যেও, বিশেষ করে সরস্বতী পুজো, যেটা প্রত্যেকটি মানুষের  ছোটবেলার ছাত্র জীবনের অন্যতম মধুর স্মৃতি সেটা আমরা পালন করার চেষ্টা করি।

গত চার বছর ধরে প্রবাসী বাঙালিরা এই বাগদেবীর আরাধনায়  মেতে উঠেছে। আচার আচরণ  মেনে  নিষ্ঠার সঙ্গে পুজোপাঠ করেন দুই মহিলা পুরোহিত প্রিয়াঙ্কা গাঙ্গুলী এবং অন্বেষা চক্রবর্তী। সরস্বতী পুজোর প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয়, নাড়ু কড়াইশুঁটির কচুরি, আলুর দম ,পোলাও, পনির, চাটনি। সংস্কৃতি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। রবীন্দ্র সংগীত সহ বিভিন্ন পুরনো দিনের বাংলা গান যেমন ছিল তার সঙ্গে সঙ্গে ছিল ছোটদের নানা অনুষ্ঠান। শুধুমাত্র এখানকার প্রবাসী বাঙালিরা  নয় সিয়াটেল শহরের বহু মার্কিন এবং অন্যান্য দেশের মানুষরাও আমাদের এই পুজো দেখতে আসেন। তারা উপভোগ করেন এই পুজো।ভক্তিভরে সবাই মায়ের কাছে বলে ওঠেন, ওম জয় জয় দেবী চরাচর সারে,কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।

Related Articles