মায়ানমারে ভূমিকম্পে প্রাণহানি বেড়ে ২০০০
Death toll from Myanmar earthquake rises to 2,000

Truth Of Bengal: মায়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রাণহানি ২০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপে জীবিত অথবা মৃত ব্যক্তিদের খোঁজে চলছে উদ্ধার অভিযান। সাগাইং অঞ্চলে ধসে পড়া একটি স্কুল ভবনের নিচ থেকে ভূমিকম্পের প্রায় ৬০ ঘণ্টা পর চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার মায়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং জানিয়েছিলেন, ভূমিকম্পে অন্তত ১ হাজার ৭০০ জনের মৃত্যু ও সাড়ে ৩ হাজার আহত হয়েছেন। নিখোঁজ ৩০০ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে।
শুক্রবার দুপুরে মায়ানমার, থাইল্যান্ড-সহ আট দেশে একসঙ্গে ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয় মায়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে। এ কারণে মান্দালয়েই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডে অন্তত ১৭ জন মারা গিয়েছেন। দুই দেশে হাজারো ভবন ধসে পড়েছে। সড়ক ও সেতু ভেঙেছে অনেক। বিদ্যুৎ সরবরাহেও অচলাবস্থা চলছে।
এদিকে রবিবারও মান্দালয়ে আরেকটি ৫ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। দরিদ্র, গৃহযুদ্ধকবলিত মায়ানমারে গত ২০ বছরের মধ্যে এত তীব্র ও প্রাণঘাতী ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন ভূমিকম্প-বিশেষজ্ঞরা। ভূমিকম্পের পর থেকে মায়ানমারের রাজধানী নেপিদো, মান্দালয় অঞ্চল-সহ ছয়টি এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
শুক্রবারের ভূমিকম্পটি গত শতাব্দীতে দেশটিতে হওয়া ভূমিকম্পগুলির তুলনায়ও বেশি শক্তিশালী ছিল। চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে এই ভূমিকম্পের ধাক্কায় মায়ানমারের স্থবির অর্থনীতি আরও ভঙ্গুর হয়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গৃহযুদ্ধের কারণে আগে থেকেই দেশটির লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে আছেন, এখন ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সঙ্কট আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঘটনার তিনদিন পরও অব্যাহত রয়েছে উদ্ধার অভিযান। মনে করা হচ্ছে এখনও প্রচুর মানুষ আটকে রয়েছেন ধ্বংসস্তূপের নিচে। তাঁদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও ক্রমশ ক্ষীণ হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপে জীবিত অথবা মৃত ব্যক্তিদের খোঁজে চলছে উদ্ধার অভিযান। তবে বেশির ভাগ এলাকায় স্থানীয় লোকজনই দলবেঁধে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। যদিও উদ্ধারকাজের গতি কম।
বিভিন্ন দেশ উদ্ধারকর্মী পাঠালেও যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে যেতে বাধার মুখে পড়ছেন তাঁরা। পাশাপাশি বেশির ভাগ উদ্ধারকর্মীকে খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরাতে হচ্ছে। উদ্ধারকাজের জন্য ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধারকাজ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রাষ্ট্রসংঘ বলছে, এত বড় এক দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ মায়ানমারের নেই।