আন্তর্জাতিক

Bangladesh Media Attack: উত্তপ্ত বাংলাদেশ! আজ প্রকাশিত হচ্ছে না ‘প্রথম আলো’ ও ‘ডেইলি স্টার’

বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ে ভস্মীভূত হয়েছে দেশের অন্যতম দুই শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ্য ডেইলি স্টার’-এর কার্যালয়।

Truth of Bengal: অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের ওপর নেমে এল এক ভয়াবহ আঘাত। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজার এলাকা। বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ে ভস্মীভূত হয়েছে দেশের অন্যতম দুই শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ্য ডেইলি স্টার’-এর কার্যালয়।

বৃহস্পতিবার রাত ১২টা নাগাদ কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা চালায় এক বিশাল ‘মব’ বা উত্তেজিত জনতা। ভাঙচুরের পাশাপাশি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই হামলাকারীরা পাশের ডেইলি স্টার ভবনের দিকে এগোতে থাকে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, প্রাণ বাঁচাতে ডেইলি স্টারের প্রায় ২৮ জন সংবাদকর্মী ভবনের ১০ তলার ছাদে আশ্রয় নেন। আতঙ্কে এক ক্যান্টিন বয় ফায়ার এক্সিটের মই বেয়ে নামার চেষ্টা করলে নিচে তাঁকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। পরবর্তীকালে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরুদ্ধ সাংবাদিকদের উদ্ধার করেন।

এই বর্বরোচিত হামলার জেরে শুক্রবার ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ্য ডেইলি স্টার’ পত্রিকার কোনো মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হতে পারেনি। ব্যাহত হয়েছে ডিজিটাল কার্যক্রমও। এমনকি পরিস্থিতি শান্ত করতে আসা সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ‘নিউ এজ’ সম্পাদক নূরুল কবীরকেও হামলাকারীদের হাতে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। শুক্রবার সকালেও প্রথম আলোর চারতলা অফিস থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গেছে, যেখানে পুড়ছে গুরুত্বপূর্ণ নথি ও প্রকাশনা সামগ্রী।

গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন শরিফ ওসমান হাদি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হলেও বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এই খবর প্রচারিত হওয়ার পরপরই ঢাকার শাহবাগ মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা দ্রুত সহিংস রূপ নেয়। শুক্রবার সকালেও শাহবাগ মোড়ে অবস্থান বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল।

পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনিক সক্ষমতা নিয়ে জনমনে তীব্র প্রশ্ন উঠেছে। কেন আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি, তা নিয়ে সমালোচনা চলছে। শুক্রবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মরহুম হাদির স্ত্রী ও সন্তানের যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করবে সরকার।