দ্বিতীয় দফায়ও হাতকড়া ও পায়ে শিকল পরেই ফিরলেন ১১৯ ভারতীয় অভিবাসী
119 Indian migrants return in handcuffs and shackles in second round

Truth Of Bengal: যুক্তরাষ্ট্র থেকে দ্বিতীয় দফায় ১১৯ ভারতীয় অভিবাসীকে নিয়ে অমৃতসর বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে মার্কিন উড়োজাহাজ সি-১৭ গ্লোব মাস্টার। শনিবার উড়োজাহাজটি অমৃতসর বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ১০ দিন আগে প্রথম দফায় ১০৪ ভারতীয় অভিবাসীকে নিয়ে একই বিমানবন্দরে একটি মার্কিন সামরিক উড়োজাহাজ অবতরণ করেছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে।
রোববার আরেকটি উড়োজাহাজে ১৫৭ জন ভারতীয় অভিবাসীকে নিয়ে অবতরণ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা অবৈধ অভিবাসীদের সবচেয়ে বড় উৎস মেক্সিকো ও এল সালভাদর। এরপরই ভারতের অবস্থান। শনিবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে মার্কিন বিমানবাহিনীর সি-১৭ গ্লোবমাস্টার উড়োজাহাজটি অমৃতসর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ওই উড়োজাহাজে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো ১১৯ ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে ৬৭ জন পঞ্জাবের, ৩৩ জন হরিয়ানার, ৮ জন গুজরাটের, ৩ জন উত্তর প্রদেশের, ২ জন করে গোয়া, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানের এবং ১ জন করে হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা ছিলেন।
এর আগে ফেরত পাঠানো ১০৪ জনের মধ্যে ৩৩ জন হরিয়ানার, ৩৩ জন গুজরাটের, ৩০ জন পঞ্জাবের, ৩ জন মহারাষ্ট্রের, ৩ জন উত্তর প্রদেশের ও ৩ জন ছত্তিশগড়ের ছিলেন। তাঁদের একই উড়োজাহাজে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের অন্টারিও থেকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে, ফেরত পাঠানো ভারতীয়দের সঙ্গে যাতে দুর্ব্যবহার না করা হয়, তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্র সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। উড়োজাহাজে পুরোটা সময় ভারতীয় অভিবাসীদের হাতকড়া ও পায়ে শিকল পরিয়ে রাখা হয়েছিল। ভারতে পৌঁছনোর পরই তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। বিষয়টি ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গণে ব্যাপক ঝড় তুলেছে। এ নিয়ে ভারতীয় পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে বাজেট অধিবেশন চলাকালে গোলমালের ঘটনাও ঘটেছে।
সমালোচনার মাঝে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ফেরত পাঠানো ভারতীয়দের সঙ্গে যাতে দুর্ব্যবহার না করা হয়, তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্র সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তিনি আরও বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করা নতুন কোনও ঘটনা নয়। বছরের পর বছর ধরে এটি চলছে।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারত যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী যে কোনও নাগরিককে ফিরিয়ে নেবে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, মানব পাচার বন্ধে প্রচেষ্টা চালানো দরকার।
মোদি বলেন, ‘আমাদের বৃহত্তর লড়াই এই পুরো বাস্তুতন্ত্রের বিরুদ্ধে। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই বাস্তুতন্ত্রের অবসান ঘটাতে ভারতকে পুরোপুরি সহযোগিতা করবেন।’ ভারতে মার্কিন দূতাবাস বলেছে, ‘আমাদের দেশের অভিবাসন আইন প্রয়োগ করা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এবং জননিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ দূতাবাসের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সমস্ত অগ্রহণযোগ্য এবং অপসারণযোগ্য বিদেশিদের বিরুদ্ধে বিশ্বস্ততার সঙ্গে অভিবাসন আইন কার্যকর করা।’
এদিকে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান শনিবার দিনের শুরুতে অমৃতসর বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন এবং বলেন, তাঁর সরকার দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানোদের মধ্য থেকে পঞ্জাবের বাসিন্দাদের তাঁদের নিজ শহরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। অন্য রাজ্যের লোকদের রবিবার সকালে একটি উড়োজাহাজে অমৃতসর থেকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর তাঁদের নিজ নিজ প্রদেশে পাঠানো হবে।