বরেলির দাঙ্গার ছয় মাস পর পুলিশের দৌলতে বাড়ি ফিরল ঘরছাড়ারা
Six months after the Bareilly riots, displaced people return home with police assistance

Truth Of Bengal: উত্তরপ্রদেশের বরেলির একটি গ্রামে মহরম উপলক্ষে দাঙ্গা হওয়ার পর সেখানকার অনেক মুসলিম এলাকা ছেড়ে চলে যান। এখন সেই মুসলিম পরিবারের লোকদের পুলিশি সুরক্ষায় বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁরা গত ৬ মাস ধরে রাস্তার ধারে তাঁবু খাটিয়ে বসবাস করছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
মহরমের সময় যাঁরা উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিলেন, তাঁদের বাড়িঘর প্রশাসন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। তারপর থেকেই তাঁরা এলাকাছাড়া হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ওই গ্রামের অনেক লোক এখনও পলাতক। তবে, ৬ মাস পর, প্রশাসন এখন তাঁদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক মুসলিম বেরেলি পুলিশের সুরক্ষায় নিজেদের বাড়িতে ফিরে এসেছেন। এই তালিকায় রয়েছে, বেরিলির শাহীর গৌসগঞ্জের ১১টি মুসলিম পরিবার। পুলিশ কর্তারা কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পরিবারগুলিকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে ঘটনাস্থলে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। বাড়ি ফিরে আসার পর খুশির ঢেউ উঠেছে পরিবারগুলির মধ্যে।
৬ মাস আগে এখানে মহরমের মিছিলের সময় দাঙ্গা হয়েছিল। এলাকায় সাম্প্রদায়িক হিংসার পর অনেক মুসলিম পরিবার ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। অনেক মানুষ এখনও গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে রয়েছে। দাঙ্গার পর হিংসায় লিপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছিল। প্রশাসন প্রায় ১৪টি বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়। এই পদক্ষেপের পর, বেশিরভাগ পুরুষ গ্রাম ছেড়ে চলে যান, অন্যদিকে মহিলাদের গ্রামে তাঁবুতে থাকতে বাধ্য করা হয়। দাঙ্গার মামলায় এখন পর্যন্ত পুলিশ ৫০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে জেলে পাঠিয়েছে।
১৯ জুলাই শাহীর গৌসগঞ্জে, হীরালালের একমাত্র ছেলে তেজপালকে তাঁর বাড়ি থেকে টেনে বের করে মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছিল। তারপর মসজিদের ভেতরেই তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই পরিবারের উপর নেমে আসে বিপর্যয়। এই ঘটনার পর, পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে, বেশ কয়েকজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গুরুতর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। এই ঘটনার পর গ্রামটিতে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েকটি থানার পুলিশ এবং পিএসি ঘটনাস্থলে মোতায়েন করতে হয়েছিল। শান্তি পুনরুদ্ধারের পর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে, বেশ কয়েকজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গুরুতর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। শান্তি ফিরে আসার পর পুলিশ ৫১ জন দাঙ্গাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। বুলডোজার দিয়ে মোট ১৪টি অবৈধ বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। বর্তমানে, এসএসপি অনুরাগ আর্যের নির্দেশে, যাঁরা গ্রামে অশান্তি সৃষ্টি করেছিলেন এবং পালিয়ে গিয়েছিলেন, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তাঁদের বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সিও সিটি পঙ্কজ শ্রীবাস্তব নিশ্চিত করেন যে, ঘরছাড়া মানুষরা কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে নিজেদের বাড়িতে পৌঁছেছেন।