দেশ

নালন্দার নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী, নালন্দার ইতিহাস জানেন?

PM Modi inaugurates Nalanda University campus

The Truth of bengal:  বিহারের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস সবার জানা।উচ্চশিক্ষা থেকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা সবেতেই এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বজুড়ে আলাদা ছাপ রাখে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরাই এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলেন বলে জানা যায়। ৪২৭ থেকে ১১৯৭ খ্রিষ্টাব্দ অবধি এই বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর শিক্ষার কাজের বিস্তার ঘটায়।আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেও যথেষ্ট সুনাম আদায় করে নেয় প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয়।সেই নালন্দার নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার  রাজগিরের এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার,রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকার সহ ১৭টি দেশের প্রতিনিধিরা।

কিন্তু আমরা কী জানি নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ? কেন এই উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান তাত্পর্য বহন করে ? কেন ইতিহাসে জায়গা দখল করে রয়েছে ?

নালন্দা সংস্কারের ধারাবাহিক কর্মকাণ্ড

এই বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে আমাদের পুরনো দিনে ফিরে যেতে হবে। ২০০৬সালে তত্কালীন ভারতের রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম  নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে  বিহারের আইনসভার যৌথ পরিষদে তুলে ধরেন।সেই প্রস্তাব মেনে  নিয়ে  বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নালন্দার সংস্কারের কাজে এগিয়ে আসেন। তারপর ২০০৭-এ বিহার বিধানসভায় নালন্দাকে নবরূপ দেওয়ার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।এরপর পূর্ব এশিয়ার সম্মেলনে নালন্দার মতো গৌরবময় বিশ্ববিদ্যালয়কে উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত,সাংস্কৃতিক,ঐতিহাসিক,দর্শনগত বিষয়ে পড়াশোনার রাস্তা খুলে দিতে কেন্দ্রীয় সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে রাজি হয়। এমনকি পূর্ব এশিয়ার সম্মেলনে সমস্ত দেশ আন্তর্জাতিক মাণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গৌরব পুণরুদ্ধারের কাজকে সমর্থনও জানায়। তারপর রাজ্যসভায় ২০১০এর ২১অগাস্ট  এই সংক্রান্ত বিল পাস করা হয়।লোকসভাতেও ২৬ অগাস্ট এই বিষয়ে বিল পাস করা হয়। ২০১০-এর ২৫ নভেম্বর সরকারিভাবে নালন্দাকে পুণরায় সাজিয়ে তোলা ও নতুন রূপ দেওয়ার বিষয়ে কাজ শুরু হয়।

কেন নালন্দাকে পুণরায় শিক্ষাদানের কেন্দ্র করে তোলা হল ?

২০১৪-র সেপ্টেম্বরে     নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের  প্রথম  নাম নথিভূক্ত করা হয়।রাজগিরের ইন্টারন্যাশানাল সেন্টার থেকেই অস্থায়ীভাবে এই শিক্ষাকেন্দ্রের কর্মকাণ্ড চালু হয়। পরিচালনা করা হয় কিভাবে পঠনপাঠন চলবে। তারপর ২০১৭সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় আত্মপ্রকাশ করে। অষ্ট্রেলিয়া,বাংলাদেশ,ভুটান,কাম্বোডিয়া,নেপাল,চিন,লাওস,ইন্দোনেশিয়া সহ ১৭টি দেশ এই উচ্চশিক্ষার প্রসারের কেন্দ্রকে পুণরুজ্জীবিত করার প্রস্তাব সমর্থন করে।বলা যায়,ধ্বংসপ্রাপ্ত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০কিলোমিটারের কাছে নতুন ক্যাম্পাস তৈরি করা হয়েছে।

ইউনেস্কোর হেরিটেজ সাইট নালন্দার ধ্বংসপ্রাপ্ত ক্যাম্পাস

ধ্বংসপ্রাপ্ত ক্যাম্পাসকে ২০১৬তে হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করা হয়েছিল। ইউনেস্কো এই গৌরবময় প্রতিষ্ঠানকে ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেয়। সর্পিল আকারে ছড়িয়ে থাকা এই ক্যাম্পাস প্রায় ৪৫০ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। পদ্মবিভূষণে সম্মানিত বিভি দোশি এই নবগঠিত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাইন করেন। বাস্তু মেনেই তিনি এই নব –নালন্দা নির্মাণের নকশা করেন বলেও জানা যায়।

Related Articles