সংসদ তুলে দেওয়ার নিদান! নিশিকান্তের বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা
Opposition voices opposition to Nishikant's decision to dissolve Parliament

Truth Of Bengal: দেশের বিচারব্যবস্থাকে সরাসরি আক্রমণ করেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে ও দীনেশ শর্মা। তাদের মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। গেরুয়া শিবিরের দুই জনপ্রতিনিধির বিতর্কিত মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে দল। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যে শেষপর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। আর এই বিতর্কের সূচনা করেন বিজেপির গোড্ডার সাংসদ নিশিকান্ত দুবে।
ওয়াকফ আইন ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টকে নিশানা করে তিনি বলেন, “যদি আইন তৈরি করাই সুপ্রিম কোর্টের কাজ হয়, তবে সংসদ বন্ধ করে দিন।” আরও একধাপ এগিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আপনাদের (বিচারপতিদের) নিয়োগ করেছেন যাঁরা, তাঁদের কীভাবে নির্দেশ দিতে পারেন আপনারা? এটা নৈরাজ্যের দিকে দেশকে ঠেলে দেওয়ার শামিল।সংসদ অধিবেশন বসলে এই নিয়ে আলোচনা হবে। “ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক হিংসার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে দুষেছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে।
এরপর বিজেপির আর এক সাংসদ দীনেশ শর্মা বলেন, ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী লোকসভা, রাজ্যসভা ও রাষ্ট্রপতিকে কেউ নির্দেশ দিতে পারে না।তাঁকে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। তাঁর এই মন্তব্য আরও ক্ষোভ উসকে দেয়। এই মন্তব্যের প্রতিবাদে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা মানিকম ঠাকুর বলেন, এটি সরাসরি সুপ্রিম কোর্টকে অবমাননা করা।
নিশিকান্ত দুবে লাগাতার সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে আক্রমণ করছেন। এবার সুপ্রিম কোর্টের উপর কটাক্ষ চালালেন। বিচারপতিরা নিশ্চয়ই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। পাশাপাশি সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশও। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ভারতীয় সংবিধানের উপর বারবার আক্রমণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্রমাগত নীরব। কেন এই দুই সাংসদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? নাড্ডাজি কী এই দুই সাংসদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছেন?’
অন্যদিকে আপ মুখপাত্র প্রিয়াঙ্কা কক্কর বলেন, “তিনি খুবই খারাপ বক্তব্য দিয়েছেন। আমি আশা করি আগামীকালই সুপ্রিম কোর্ট বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে অবমাননার মামলা শুরু করবে এবং তাকে জেলে পাঠাবে। এই চাপের মধ্যেই পরিস্থিতি সামাল দিতে বিবৃতি দেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা।
তিনি জানান, দীনেশ শর্মা এবং নিশিকান্ত দুবের মন্তব্য একান্তই তাঁদের ব্যক্তিগত। দলের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। বিজেপি এই বক্তব্যকে সমর্থন করে না। পাশাপাশি তিনি জানান, দলীয় নেতাদের ভবিষ্যতে এমন মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন ২০২৪-এর পরবর্তী রাজনৈতিক পর্বে বিজেপি যতই আক্রমণাত্মক হতে চাইছে ঠিক তখনই সাংসদদের এমন বিতর্কিত মন্তব্যে দলীয় ভাবমূর্তিতে প্রভাব পড়তে পারে বলেই এমনই আশঙ্কা দলীয় শীর্ষ মহলের।