দেশ

পুত্রের আশায় কন্যাভ্রূণ হত্যা! ৩০০ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের লাইসেন্স বাতিল হরিয়ানায়

Killing a baby in the hope of a son! Haryana cancels licences of 300 health centres

Truth Of Bengal:  ভারতে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ আইনত অপরাধ, কিন্তু সেই আইন শুধু খাতায়-কলমেই থেকে গেছে। হরিয়ানার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে লিঙ্গ নির্ধারণ ও কন্যাভ্রূণ হত্যার মতো ভয়ঙ্কর অপরাধ দিনের পর দিন ঘটে চলেছে। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমের তদন্তে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।

বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় সরকার গঠন করেছে বিশেষ টাস্কফোর্স। ইতিমধ্যেই ৩০০টিরও বেশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। নোটিস জারি করা হয়েছে ২৩টি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে, যেখানে বেআইনি গর্ভপাত করা হত। অনলাইনে এমটিপি কিট বিক্রির জন্য দায়ী ১৭টি সংস্থার বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে।

২০১৫ সালে হরিয়ানার পানিপথ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুরু করেছিলেন ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্প। কিন্তু হরিয়ানায় ছেলে-মেয়ের জন্ম অনুপাতে ক্রমাগত পার্থক্য বেড়েই চলেছে। ২০১৯ সালে প্রতি ১০০০ ছেলের পাশে মেয়ের সংখ্যা ছিল ৯২৩, যা ২০২৪ সালে কমে হয়েছে মাত্র ৯১০।

ডাঃ বীরেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, তদন্তের অংশ হিসেবে ১২টি কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং হিসার জেলার নোডাল অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আরও কয়েকজন স্বাস্থ্য আধিকারিকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কয়েকটি আল্ট্রাসাউন্ড এবং আইভিএফ সেন্টারকেও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।

তদন্তে উঠে এসেছে এক মানবিক দৃষ্টান্তও। দুই কন্যার মা পূজা যখন তৃতীয়বার গর্ভবতী হন, তখন তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা গর্ভস্থ সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ করে গর্ভপাতের জন্য চাপ দেয়। পূজা সাহস করে নিজের বাপের বাড়ি চলে গিয়ে সন্তানের জন্ম দেন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসকসহ পুরো চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

এখন সরকার আশা কর্মীদের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ শুরু করেছে। যারা কন্যাসন্তান গর্ভে ধারণ করছেন, তাঁদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখার পাশাপাশি সন্তান জন্মের পর মা’কে ১,০০০ টাকা উপহারও দিচ্ছে সরকার। এই পদক্ষেপগুলি কন্যাভ্রূণ হত্যার বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছে—মেয়ে জন্মানো অপরাধ নয়, গর্বের বিষয়।

Related Articles