ধর্ষণ-পকসো মামলা বাতিলের জন্য ভুক্তভোগীর আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়: কেরল হাইকোর্ট
Kerala High Court: Victim's plea to quash rape-POCSO case not acceptable

Truth Of Bengal: কেরল হাইকোর্ট তার রায়ে বলেছে, যদি কোনও মামলায় ধর্ষণের গুরুতর অভিযোগ বা পকসো আইনের অধীনে অভিযোগগুলি প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে মামলাটি বন্ধ করার জন্য ভুক্তভোগীর আবেদনকে অগ্রাধিকার দেওয়া যাবে না। একজন ভুক্তভোগী এবং তার মায়ের দায়ের করা একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেখানে তাঁরা ভুক্তভোগীর নৃত্য শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে চলমান মামলা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। তাঁদের দু’জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা এবং পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে যখন তিনি নাবালিকা ছিলেন, তখন তাঁর নৃত্য শিক্ষক চলচ্চিত্র এবং রিয়েলিটি শোতে কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। তিনি আরও জানান যে, নৃত্যশিক্ষক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছিলেন। পরে, ওই নৃত্য শিক্ষক অপর এক মহিলাকে বিয়ে করলে ভুক্তভোগী নৃত্য শিক্ষকের স্ত্রীকে তাঁদের সম্পর্কের কথা জানান। এর পরে, অভিযুক্তের স্ত্রী তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেন, তিনিও ওই শিক্ষককে বিয়ে করতে পারেন এবং শারীরিক সম্পর্ক রাখতে পারেন।
এরপর ২০২০ সালে যখন ভুক্তভোগী প্রাপ্তবয়স্ক হন, তখন তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দেওয়া তাঁর জবানবন্দিতে এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তাঁকে নৃত্য শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ভুক্তভোগীর মা, যিনি আগে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, তিনিও তাঁর অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন এবং মামলাটি বন্ধ করার দাবি জানান। কিন্তু হাইকোর্ট তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেয়। আদালত বলেছে, মামলার রেকর্ড স্পষ্টভাবে দেখায় যে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে একজন নাবালিকার বিরুদ্ধে অপরাধও রয়েছে।
এ ব্যাপারে আদালত বলেছে, এই ধরনের ক্ষেত্রে, শুধুমাত্র ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দেওয়া জবানবন্দি অথবা ভুক্তভোগী ও তাঁর মায়ের হলফনামার ভিত্তিতে মামলা বন্ধ করা যাবে না। যদি প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের অপরাধ (আইপিসি ধারা ৩৭৬) এবং পকসো আইনের অধীনে প্রমাণিত হয়, তাহলে মামলা বন্ধ করার জন্য ভুক্তভোগীর দাবিকে অগ্রাধিকার দেওয়া যাবে না। আদালত মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দেয় এবং অভিযুক্তদের বিচারে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেয়। এর সঙ্গে সঙ্গে, হাইকোর্ট ট্রায়াল কোর্টকে তিন মাসের মধ্যে এই মামলার শুনানি সম্পন্ন করতে বলেছে।