লোকসভা-রাজ্যসভা-বিধানসভার নির্বাচন, বহুত্তবাদী গণতন্ত্রের ভূষণ
Elections of Lok Sabha-Rajya Sabha-Vidhan Sabha, celebration of pluralistic democracy

The Truth Of Bengal: গণতন্ত্রের আদর্শ ব্যবস্থা হল নির্বাচন।নির্বাচনে জনগণের আসল ক্ষমতার প্রকাশ দেখা যায়।কারণ কোনও প্রার্থীকে জয়ী করা বা পরাজিত করার চাবিকাঠি রয়েছে আমজনতার হাতে। তাই গণতন্ত্রের অন্যতম ভূষণ জনগণের ক্ষমতা বজায় রাখা দরকার।ভোটারদের প্রার্থী নির্বাচনের একাধিক বিচার্য বিষয় রয়েছে
১. আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে জনগণের সম্মতি বাধ্যতামূলক
২. আমজনতাই ঠিক করবে কারা সরকার গড়বে, কারা নীতি নির্ধারণ করবে
৩. মানুষই ঠিক করেন,কোনও রাজনৈতিক দল সরকারের মাথায় বসবে বা আইন প্রণয়ন করবে
ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পদ্ধতি কি ?
ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেকোনও রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা ৫বছর ক্ষমতায় থাকতে পারেন।৫বছর অন্তর ক্ষমতার হাত বদল হয়। দেশের নির্বাচনকে আমরা নানা ভাগে ভাগ করতে পারি।প্রথমতঃ দেশের সরকার গঠনের জন্য হয় সাধারণ নির্বাচন।লোকসভার মতোই হয় বিধানসভা বা বিধানপরিষদের নির্বাচনও।এছাড়াও কোনও আসনে প্রার্থীর পদত্যাগ বা প্রার্থীর মৃত্যু হলে উপ-নির্বাচন হয়।
সংসদীয় সাধারণ নির্বাচন-এই নির্বাচনও ৫বছর অন্তর করা হয়। সংসদের দুটি কক্ষ রয়েছে।নিম্নকক্ষ লোকসভায় রয়েছে ৫৪৩জন সাংসদ। এই ভোটে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের নির্বাচিত করা হয়।প্রত্যেকটা প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিক তাঁদের অধিকার প্রয়োগ করে সাংসদদের নির্বাচিত করেন।সাংসদরা জয়ী হওয়ার পর ৫বছর পদে থাকেন। একমাত্র যদি রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভার পরামর্শ মতো সংসদ ভেঙে দেন বা নতুন করে ভোট ঘোষণা করেন তাহলেই সাংসদরা নতুন করে নির্বাচনের মুখোমুখি হতে বাধ্য। নির্বাচিত সাংসদরা নতুন আইন প্রণয়ন,আইনের পরিবর্তন –পরিমার্জন করতে পারেন।প্রয়োজনে পুরনো আইন বাতিলও করতে পারেন।কখনও কখনও সংশোধিত আইন জনগণের শাসনকে উন্নততর জায়গায় নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন- রাজ্য বিধানসভার সদস্যদেরও একই পদ্ধতিতে নির্বাচিত হতে হয়।যাঁরা রাজ্য বিধানসভায় নির্বাচিত হন তাঁদের বিধায়ক বলা হয়।যতদিন না রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার পরামর্শমতো বিধানসভা ভেঙে না দিচ্ছেন ততদিন তাঁরা বিধায়ক পদে আসীন থাকেন।এর মাঝে কোনও বিধায়ক পদত্যাগ করলে বা দল ছেড়ে দিলে নতুন করে ভোট হয়।এখানেও উপ-নির্বাচন হতে পারে।বিধানসভায় আইন প্রণয়ন থেকে আইনের সংশোধন,উন্নয়ন পরিকল্পনা রূপায়ণ থেকে রাজ্যের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত কার্যকর করা সবই বিধায়করা করেন।নির্বাচিত বিধায়করা নতুন আইন প্রণয়ন,আইনের পরিবর্তন –পরিমার্জন করতে পারেন।প্রয়োজনে পুরনো আইন বাতিলও করতে পারেন বিধায়করা। বিধানসভায় প্রণীত আইন রাজ্যবাসীর জীবন-জীবিকায় প্রভাব ফেলে।
রাজ্যসভা নির্বাচন –
সংসদের উচ্চকক্ষ হল রাজ্যসভা।নাগরিকরা সরাসরি এখানে প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে পারেন না।বিধায়করাই রাজ্যসভার সাংসদদের বেছে নেন। ২৫০আসনের মধ্যে ১২জন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মনোনীত করা হয়।বাকিদের বিধায়কদের দ্বারা নির্বাচিত হতে হয়। ৬বছর কার্যকাল থাকে এই রাজ্যসভার প্রতিনিধিদের।তার মাঝে ২বছর অন্তর এক তৃতীয়ংশ সাংসদদের পরিবর্তন করা হয়।লোকসভায় যেকোনও আইন পাশ হওয়ার পর রাজ্যসভায় সেই আইন পাস করতে হয়। উপ-রাষ্ট্রপতি এই সভায় সভাপতিত্ব করেন।
নির্বাচনী প্রচার-
সাধারণতঃ নির্বাচনী প্রচারে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নীতি,সিদ্ধান্ত ও জনস্বার্থে কী করতে পারে তা তুলে ধরে।রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্তও মেনিফেস্টো দেখেই জনগণ তাঁদের বেছে নেয়।জয়-পরাজয় নির্ভর করে এই প্রচারের বিষয়বস্তু দেখে।আমজনতার সমর্থন পেতে রাজনৈতিক দলগুলো প্রচারে মানুষের প্রয়োজনের দিকে বেশে প্রচারে ফোকাস করে।রাজনৈতিক দলগুলো জানে কোন ইস্যু সবথেকে বেশি মানুষের সমর্থন পাবে।
স্বাধীন গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা
আমাদের দেশের নির্বাচন পরিচালনা করে স্বাধীন একটি সংস্থা। বিচারব্যবস্থার মতোই নির্বাচনের সময় তারা ক্ষমতা ধারণ করে।যেকোনও নির্দেশ কার্যকর করতে কড়া ব্যবস্থাও নেয়। ৩সদস্যের নির্বাচন কমিশনের মধ্যে প্রধান হলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। মুখ্যনির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি।
নির্বাচন কমিশনের মুখ্য দায়িত্ব-
- নির্বাচন পরিচালনা থেকে নির্বাচনের ফল প্রকাশের দায়িত্বে নির্বাচন কমিশন।
- নির্বাচনী আচরণ বিধি লাগু থেকে বিধিভঙ্গের বিষয়েও কমিশন নজর রাখে।
- বিধিভঙ্গের জন্য যেকোনও প্রার্থীকে শাস্তি দান থেকে প্রার্থী পদ খারিজ সবই কমিশনের ক্ষম।
- নির্বাচনের সময় যেকোনও সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য সরকারকে নির্দেশও দিতে পারে কমিশন।
- সরকারি অফিসারদের দায়িত্ব বন্টন থেকে ভোট পরিচালনায় ভূমিকা সবই কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ক।
- যদি কোনও কেন্দ্রে ভোটে বেনিয়ম বা রিগিংয়ের অভিযোগ ওঠে তাহলে ভোট বাতিল বা পুণরায় নির্বাচনও করতে পারে নির্বাচন কমিশন।
FREE ACCESS