কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা রিপোর্টে যোগী রাজ্যের প্রশাসনের কুকীর্তি ফাঁস
Cambridge University research report exposes the infamy of Yogi's state administration

Truth of Bengal,মৌ বসু: জঙ্গলের পশুদের ওপর নজরদারি চালাতে ব্যবহার করা হয় রিমোট কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত ক্যামেরা, সাউন্ড রেকর্ডার ও ড্রোন ক্যামেরা। কিন্তু সেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিই জঙ্গলের পশুদের নজরদারিতে না ব্যবহার করে দিনের পর দিন গ্রামের নিরীহ মহিলাদের ওপর নজর রাখতে অপব্যবহার হয়ে আসছে। দিনের পর দিন ধরে এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটছে উত্তর প্রদেশের করবেট ন্যাশনাল পার্কে। বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডঃ ত্রিশান্ত সিমলাই ১৪ মাস ধরে করবেট ন্যাশনাল পার্ক লাগোয়া বিভিন্ন গ্রামের ২৭০ জন স্থানীয় বাসিন্দার সাক্ষাৎকার নেন।
তিনি তাঁর গবেষণা রিপোর্টে দাবি করেন, দীর্ঘ সময় ধরে একটানা গবেষণা করে দেখা গেছে শুধু করবেট ন্যাশনাল পার্কই নয় উত্তর ভারতের বহু জঙ্গলে স্থানীয় প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশে ও পূর্ণ মদতে গ্রামের পুরুষদের একাংশ মনের বিকৃত লালসা মেটাতে গ্রামের মহিলাদের গতিবিধি নজরবন্দি করতে ইচ্ছে করে প্রযুক্তির অপব্যবহার করছেন। মহিলাদের অজান্তেই প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। জঙ্গলের পশুদের গতিবিধি নজরবন্দি করতে যে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয় সেই প্রযুক্তির সাহায্যেই মহিলাদের গোপন মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে তাঁদের ব্ল্যাকমেল করা, ভয় দেখানো হচ্ছে।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডঃ ত্রিশান্ত শিমলাইয়ের গবেষণা রিপোর্ট journal environment and planning F এ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, করবেট ন্যাশনাল পার্কের ফরেস্ট রেঞ্জারদের একাংশ বদমায়েশি করে জঙ্গলে কাঠকুটো কুড়োতে যাওয়া গ্রামের মহিলাদের গতিবিধি নজরবন্দি করতে ও ভয় দেখাতে ড্রোন ক্যামেরা, রিমোট কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত ক্যামেরা চালায়।
বাড়িতে অনেক সময়ই পুরুষ সদস্যদের হাতে শারীরিক ও মানসিক ভাবে অত্যাচারিত মহিলারা জঙ্গলের কোর এরিয়ার বাইরে এসে নিজেদের মধ্যে গল্পগুজব করেন। কিন্তু তাঁরা অনেক সময়ই গোপন ক্যামেরায় নজরবন্দি হচ্ছেন। কোন কোন সময় তাঁদের চারপাশে বিকট আওয়াজে ড্রোন চালিয়ে ভয় দেখানো হয়। মহিলারাও ড্রোন ক্যামেরা দ্বারা নজরবন্দি হওয়ার বিষয় জানতে পেরে মানসিক উদ্বেগে ও ভয়ে রয়েছেন।
গ্রামের মহিলারা অনেক সময় ভয়ে পেয়ে জঙ্গলে ঢুকে বন্যপ্রাণীর হামলার শিকার হচ্ছেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিদ্যার গবেষক ত্রিশান্ত শিমলাইয়ের গবেষণা রিপোর্টে উঠে এসেছে, শারীরিক বিশেষ ভাবে সক্ষম এক গ্রামের মহিলার ভিডিও ধরা পড়ে জঙ্গলে পেতে রাখা গোপন ক্যামেরায়। সেই ভিডিও একশ্রেণির জঙ্গলের পার্ক রেঞ্জার ও গ্রামবাসীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে ও হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হয়ে সেই ভিডিও।
এতে মহিলার ব্যাপক সম্মানহানি হয়। ক্যামেরা ট্রাপের অপব্যবহারে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা আগুনও ধরিয়ে দেন। ক্যামেরা ট্রাপের সাহায্যেই করবেট জাতীয় উদ্যানে বাঘের ওপর চোরাশিকারীদের আক্রমণ কমেছে কিন্তু প্রযুক্তির এমন অপব্যবহারে উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা। কারণ প্রযুক্তির অপব্যবহারে স্থানীয় মহিলাদের মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।