মহিলাদের ব্যবহৃত শ্যাম্পু, লোশন-সাবানে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক! কী বলছে গবেষণা
Cancer-causing chemicals in women's shampoos, lotions and soaps! What does research say?

Truth Of Bengal: ব্যক্তিগত পরিচর্যার পণ্যে ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক ফরমালডিহাইড ব্যবহারের প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এনেছে একটি সাম্প্রতিক গবেষণা। গবেষণায় দেখা গেছে, কৃষ্ণাঙ্গ ও ল্যাটিনা নারীদের ব্যবহৃত অর্ধেকেরও বেশি পণ্যে এই ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে।
Environmental Science & Toxicology Letters-এ প্রকাশিত সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ফরমালডিহাইড ও এর মুক্তিকারী সংরক্ষণ উপাদানগুলি শুধু হেয়ার স্ট্রেইটনারেই নয়, বরং শ্যাম্পু, লোশন, বডি সোপ এবং আইল্যাশ গ্লুর মতো বহু সৌন্দর্যচর্চার সামগ্রীতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ৭০ জন কৃষ্ণাঙ্গ ও ল্যাটিনা নারীর ওপর পরিচালিত এই সমীক্ষায় দেখা যায়, ৫৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী অন্তত একটি এমন পণ্য ব্যবহার করেন যার মধ্যে ফরমালডিহাইড মুক্ত করার উপাদান রয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিজেদের ব্যবহৃত পণ্যের উপাদান তালিকার ছবি পাঠান। গবেষকরা দেখেছেন, এসব পণ্যের অনেকগুলোই দৈনন্দিন বা সাপ্তাহিকভাবে ব্যবহার করা হয়।
বিশ্লেষণে আরও জানা যায়, ৫৮ শতাংশ হেয়ারকেয়ার পণ্য-তেও এই ক্যানসারসৃষ্টিকারী রাসায়নিক বিদ্যমান।
মানব স্বাস্থ্যের ওপর ‘অযৌক্তিক ঝুঁকি’
আমেরিকার পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (EPA) আগেই ফরমালডিহাইডকে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ‘অযৌক্তিক ঝুঁকি’ বলে উল্লেখ করেছে। এতদিন পর্যন্ত গবেষণা মূলত হেয়ার স্ট্রেইটেনিং পণ্যে এই রাসায়নিকের উপস্থিতির দিকেই কেন্দ্রীভূত ছিল, যা অধিকাংশ সময় কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণাটি আরও বিস্তৃত মাত্রায় ফরমালডিহাইডের ব্যবহার নির্দেশ করছে।
চিকিৎসকদের সতর্কবার্তা ও আইনগত পদক্ষেপের আহ্বান
গবেষণার প্রধান লেখক ড. রবিন ডডসন বলেন, “এই রাসায়নিকগুলো এমনসব পণ্যে থাকে যেগুলো আমরা বারবার ব্যবহার করি। দীর্ঘমেয়াদে এ ধরনের সংস্পর্শ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ সময় ভোক্তারা বুঝতেই পারেন না কোন পণ্যে ফরমালডিহাইড রয়েছে, কারণ এটি জটিল নামের সংরক্ষণ উপাদান হিসেবে লুকিয়ে থাকে। যেমন, DMDM হাইড্যানটোইন একটি পরিচিত ফরমালডিহাইড-রিলিজিং প্রিজারভেটিভ।
যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের কিছু রাজ্য ফরমালডিহাইড নিষিদ্ধ করেছে বা নিষিদ্ধের পথে রয়েছে, FDA ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এ উপাদান নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিলেও এখনো তা কার্যকর হয়নি।
ড. ডডসন আরও বলেন, “এ ধরনের ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার না করাটাই হওয়া উচিত কোম্পানিগুলোর দায়িত্ব।”