অফবিটফিচার

নেশায় বুঁদ রাজহাঁসের দল সাবাড় করল আফিম ক্ষেত

Swan Eathing Whole Opium Field

The Truth of Bengal, Mou Basu: স্লোভাকিয়ার আফিম চাষিরা এখন এক অভূতপূর্ব সমস্যায় পড়েছেন। তাঁদের সমস্যায় ফেলেছে একদল রাজহাঁস। স্লোভাকিয়ায় শীতের সময় সাধারণত পরিযায়ী পাখিরা এসে বাসা বাঁধে। গত শীতেও তেমনই স্লোভাকিয়ায় এসে বাসা বেঁধে ছিল একদল রাজহাঁস। তাতেই ঘটেছে বিপত্তি। মাথায় হাত স্লোভাকিয়ার আফিম চাষিদের। কারণ, নেশায় বুঁদ রাজহাঁসের দল বাসা বেঁধেছে আফিম ক্ষেতেই। রীতিমতো ড্রাগের নেশায় বুঁদ রাজহাঁসের দল একেবারে নেশাড়ু হয়ে গেছে। একদল রাজহাঁসের দৌলতে আজ এক উদ্ভট সঙ্কটের মুখে পড়েছেন স্লোভাকিয়ার কোমারনো গ্রামের আফিম চাষিরা। বহু বছর ধরেই ওই কোমারনো গ্রামে আফিম চাষ হয়ে আসছে। প্রতিবছরই শীতে এই গ্রামে বাসা বাঁধে পরিযায়ী পাখির দল। এবছরও শীতে ফেব্রুয়ারিতে কোমারনো গ্রামে এসে বাসা বাঁধে প্রায় ২০০টি রাজহাঁসের দল। সাধারণত শীতে ফলন হওয়া রেপসিড নামক শস্য খেত এই রাজহাঁসেরা।

কিন্তু এবছর তাদের মুখে চিরাচরিত খাবার রেপসিড রোচেনি। তাই স্বাদ বদল করতে তারা পোস্ত খেতে শুরু করে। পোস্ত খেয়ে এতটাই ভালো লাগে রাজহাঁসদের যে তারা আফিম ক্ষেত খেয়ে সাবাড় করতে শুরু করে। রাজহাঁসরা সারাদিন প্রচুর পরিমাণে খায়। আফিমের নেশায় বুঁদ নেশাগ্রস্ত রাজহাঁসের দল শীত চলে যেতেও অন্য কোথাও উড়ে যায়নি। আফিম ক্ষেতকেই নিজেদের ঘরবাড়ি বানিয়ে ফেলেছে তারা। পরিযায়ী রাজহাঁসদের এহেন কীর্তিতে মাথায় হাত পড়েছে স্লোভাকিয়ান আফিম চাষিদের। বিপুল ফসল নষ্ট হয়েছে। ২০০ রাজহাঁসের দৌলতে ভারতীয় মুদ্রায় ৮.৮৯ লাখ টাকা মূল্যের আফিম নষ্ট হয়েছে। অন্যদিকে, এত বেশি পরিমাণে পোস্ত সাবাড় করে সারাক্ষণ নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে শুরু করে রাজহাঁসরা। ওড়া তো দূরে থাক নড়াচড়ার ক্ষমতাও ছিল না তাদের। সারাক্ষণ ঝিমিয়ে থাকা রাজহাঁসদের একদিকে অন্য প্রাণীরা খুব সহজেই শিকার করতে শুরু করে।

অন্যদিকেই, আফিমের নেশায় বুঁদ রাজহাঁসরা এত বেশি পরিমাণে খাবার সাবাড় করে অজান্তেই নিজেদের বিপদ ডেকে এনেছে। কারণ, আফিম গাছের ফল পোস্ত ছাড়া গোটা গাছের সব অংশই ক্ষতিকর। সেটা রাজহাঁসের দল জানত না। তাই বিষাক্ত আফিম গাছ খেয়ে বেঘোরে মারা পড়তে শুরু করে তারা। একটুখানি আফিম খেয়েই যেখানে বিপুল নেশা হয় সেখানে রোজ এত বেশি পরিমাণে আফিম খাওয়ায় নেশাগ্রস্ত রাজহাঁসদের ড্রাগ ওভারডোজ হয়েও মৃত্যু হয়েছে। রোজই চাষিরা নিজেদের ক্ষেতে রাজহাঁসের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন৷ ফসল নষ্ট হওয়ায় বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয় স্লোভাকিয়ার আফিম চাষিদের৷ রাজহাঁস স্লোভাকিয়ায় সংরক্ষিত পাখির তালিকাভুক্ত। তাই তাদের প্রাণে মারা যায় না। রাজহাঁসের দল ফসল নষ্ট করলেও তাই সরকার ও বিমা সংস্থার থেকে কোনো আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাননি চাষিরা। তবুও তাঁরাই উদ্যোগী হন অবলা পাখিদের প্রাণ বাঁচাতে। যে ক’টা রাজহাঁস বেঁচে আছে তাদের অনত্র সরানো হয়েছে।