১০০ বছরে পা ‘রক্তকরবী’ নাটকের! নস্ট্যালজিয়ার ভিড়েও উজ্জ্বল ছিল দর্শকদের উৎসাহ
Raktokarabi Natok

The Truth of Bengal: মাঝখানে সময়ের ব্যবধান এক শতাব্দী। এই দীর্ঘ সময়ে কত বদল হয়েছে তিলোত্তমায়। আরও আধুনিক হয়েছে। আরও গতিশীল হয়েছে শহর কলকাতা। কিন্তু, কিছু জিনিস আবহমানকাল ধরে একইরকম আছে। তার অমোঘ টান আজও উপেক্ষা করতে পারে না বাঙালি। বলা যায়, এখন যেন সেইসব জিনিসের প্রতি মানুষের টান আরও দুর্নিবার হয়েছে।‘রক্তকরবী’। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক অক্ষয়-অমর সৃষ্টি। যখনই মঞ্চস্থ হয়েছে, তখনই রক্তকরবীর টানে বাঙালি ভিড় করেছে প্রেক্ষাগৃহে। রবীন্দ্রনাথের সেই সৃষ্টি নিয়ে আবার আবেগে উদ্বেলিত নাট্যপ্রিয় মানুষ। ১০০ বছর পরও। ১৯২৩ সালে রবীন্দ্রনাথ প্রথম এই কালজয়ী সৃষ্টির নাম দিয়েছিলেন যক্ষপুরী, তারপর নন্দিনী, অবশেষে রক্তকরবী। সময়ের এত বিবর্তনে কতকিছু বদল হয়েছে। কিন্তু রক্তকরবীর বার্তা বর্তমান সময়েও প্রবলভাবে প্রাসঙ্গিক।
ক্যালকাটা ক্লাসিক ফাউন্ডেশনের নিবেদনে রবীন্দ্রসদনে নতুন করে রক্তকরবী মঞ্চস্থ হচ্ছে নির্দেশক গৌতম হালদারের হাত ধরে।সেই দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে রক্তকরবীর ‘নন্দিনী’ হয়ে মঞ্চে অবতীর্ণ হচ্ছেন অভিনেত্রী চৈতি ঘোষাল। তৃপ্তি মিত্রর তত্ত্বাবধানে আরব্ধ নাট্য বিদ্যালয়ে প্রথম ‘রক্তকরবী’র পাঠ শুরু করেন। তাঁর ‘নন্দিনী’ চরিত্রে এবার ২৫ বছর পূর্তি হল। ক্ষমতা আর দম্ভের যক্ষপুরীর জাল ছিঁড়ে রাজাকে রক্তমাংসের পৃথিবীতে জীবনের জয়গানে শামিল করতে আবার মঞ্চে অবতীর্ণ হলেন ‘নন্দিনী’ চৈতি ঘোষাল। অধ্যাপক চরিত্রে আছেন অশোক মজুমদার। যিনি শহরের একজন বিখ্যাত চিত্রসাংবাদিক। বহু বছর একাধিক সংবাদমাধ্যমে কাজ করা এই চিত্রসাংবাদিকের তোলা অনেক ছবি আর্কাইভ হয়ে আছে। কিন্তু, তাঁর অভিনয়সত্ত্বার কথা জানা ছিল না বাঙালির।
কবিগুরুর বিখ্যাত ‘রক্তকরবী’-তে অধ্যাপকরূপী অশোক মজুমদার দেখিয়েছেন তাঁর অভিনয়ক্ষমতা। রাজার চরিত্রে আছেন দেবাশিস মৈত্র। বিশু চরিত্রে আছেন অমিত আচার্য। সর্দার চরিত্রে সুদীপ্ত। গোঁসাই চরিত্রে আছেন পার্থ উপাধ্যায়। ফাগুলাল চরিত্রে আছেন মিথুন। কিশোর চরিত্রে আছেন রূপম। চন্দ্রা চরিত্রে আছেন মনিকা। অন্যান্য চরিতে প্রত্যেকেই সাবলীল অভিনয় করেছেন।রবীন্দ্রনাথ ‘রক্তকরবী’-তে শাসকের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ছবি এঁকেছেন। সেইসঙ্গে ভালবাসার একটা অদ্ভুত সমীকরণ দেখিয়েছেন। আজ একশো বছর পরেও ‘রক্তকরবী’-র এই বিষয়টি সমান প্রাসঙ্গিক। তাই যখনই এই নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে, দর্শকের মনে আলোড়ন তুলেছে। ‘রক্তকরবী’ মনকে শুধু নাড়া দেয় না, জাগিয়ে তোলে৷