মানুষে আস্থা নেই, তাই অশান্তির চক্রান্ত বিজেপির
There is no trust in people, that's why BJP is plotting unrest

ইন্দ্রনাথ চট্টোবাাধ্যায় (বিশিষ্ট সাংবাদিক): সোস্যাল মিডিয়ায় ভিনরাজ্যের অশান্তির ছবি বাংলার বলে চালালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ফেক ভিডিও প্রমানিত হয়, ধরাও পড়ল, পরের দিন তা ডিলিট, ঠিক বলছি কি? ছিঃ, বারবার ভোটে হেরে কী আপনারা কান্ডজ্ঞানও হারিয়ে ফেলেছেন? শান্তির পরিবেশ নষ্ট করে, মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করে কখনও ক্ষমতায় আসা যায় না, এহেন সহজ সত্যি কথাটা কি আপনারা বোঝেন না? অশান্তির আগুনের আঁচ কখনও মঙ্গল করে না, এটাও আপনাদের বোধগম্য হয়নি নিশ্চয়ই। যেই-ই অশান্তি করুক মানুষ তার জবাব দেবে ভোটে, বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি। মানুষের মন পেতে হয় ক্ষমতায় আসতে গেলে। তাঁদের সুখে-দুঃখে থাকতে হয়। হুমকি ধমকি দিয়ে, উন্নয়নের টাকা বন্ধ করে নয়।
যার শিল, যার নোড়া, তারই ভাঙবেন দাঁতের গোড়া? বাংলাকে প্রতি পদক্ষেপে অপমান করছে। চোরকে চুরি করতে বলে গৃহস্থকে সতর্ক করছেন। ছলে বলে কৌশলেই বাংলা দখল করবেন নাকি? সেগুড়ে বালি, বাংলার অতন্দ্র প্রহরী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়। একটা সত্যি কথা বলুন তো, দেশের সীমান্ত কার অধীন? এক কথায় উত্তর কেন্দ্রের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে? অমিত শাহ। সীমান্ত পাহারা দেয় কারা? বি এস এফ। আর তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন। সব কথার শেষ কথা হল সীমান্তের ভালমন্দ সব বর্তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপরে। বাংলাদেশে সীমান্ত দিয়ে বাংলায় দাগি জঙ্গীরা ঢুকে পড়ছে।
অমিত শাহ গা ঝেড়ে ফেলতে পারেন? স্বীকার করুন, ‘উধর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাবেন না। না শোধরানোর কোনও লক্ষণ নেই। টার্গেট সেই মমতা, সেই বাংলা। যত দোষ নন্দ ঘোষ, অ-বিজেপি রাজ্য তো। বাগে আনতে হলে এইসব করতে হবে। বিজেপির কালচারটাই মনে হয় এমন। এটুকু বলতে পারি এটা মহারাষ্ট্র, দিল্লি বা হরিয়ানা নয়। এটা বিপ্লবীদের বাংলা, ভারতবর্ষকে বাংলাই পথ দেখাবে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালামের ভাষায়, শিখবো মাথা নত করে, বাঁচব মাথা উঁচু করে। বাংলার বিজেপি নেতাদের গুণে নুন দিতে নেই। ওরা তো যখন তখন মহিলাদেরও অসম্মান করেন, দিলীপ ঘোষের মতো বর্ষীয়ান নেতৃত্বও কারণে-অকারণে মহিলাদের বাপ-মা তুলে কথা বলেন, তাতে অবশ্য তাঁর আক্ষেপ বা অনুশোচনা নেই। আবার শুভেন্দুবাবু হাত-পা ভেঙে দেওয়ার নিদান দিচ্ছেন। দেখে নেব, বুঝে নেব, ছুঁড়ে ফেলে দেব, ঘর থেকে বেরোতে দেব না ইত্যাদি ইত্যাদি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, রাজ্যে ৭৭টি আসনে জিতে তিনি বিরোধী দলনেতা হয়েছেন, কিন্তু হারাধনের দশটি ছেলের মতো উইকেট পড়তে পড়তে এখন ৬৫-তে ঠেকেছে। তবু লাফ-ঝাঁপ সেই আগের মতোই। ২০২১-এর বিধানসভায় ‘কায়দা’ করে জিতেও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সাধ মেটেনি। এই বাংলায় মানুষের ওপর আর আস্থা নেই, তাই অন্য ছক। ফেক ভিডিয়ো ছড়িয়ে, একশ্রেণীর অসাধু মিডিয়াকে সঙ্গে নিয়ে কোমর বেঁরেছেন বাংলা অশান্ত করতে। ২০২৬-এ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই তো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে আন্দোলনের নামে। কিন্তু এই সবের উর্ধ্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আস্থায় গণদেবতা। মানুষের প্রতি বিশ্বাস, সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই। তাইতো মমতার বাংলায় বাংলা নববর্ষে মানুষের মঙ্গল কামনায় রাস্তায় মানুষের ঢল নামে। বের হয় প্রভাতফেরি, শোভাযাত্রা। যেখানে জাতপাত ধর্ম-বর্ণ নয়, সেখানে শুধুই মানুষ।