সম্পাদকীয়

বঙ্গে সম্প্রীতির প্রবাহমান ধারা বিনষ্টের চেষ্টা রুখে দেবে মানুষ

People will stop attempts to destroy the flowing stream of harmony in Bengal

Truth Of Bengal: মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের খুশির ইদ। ক’দিন পরেই হিন্দু ধর্মের রামনবমী। সম্প্রীতির বাংলায় সব ধর্মের উৎসব সম্পন্ন হয় নির্বিঘ্নেই। হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান সব ধর্মের উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন বাঙালি। হিন্দুদের উৎসবে মুসলিমদের অংশগ্রহণ বা মুসলিম ধর্মালম্বীদের অনুষ্ঠানে হিন্দুদের অংশগ্রহণ এটা বাংলার পরম্পরা।

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতি একাত্ম হয়ে রয়েছে যুগ যুগ ধরে। হিন্দু-মুসলমানে ভেদাভেদ নয়, শিখ-ক্রিস্টানে ভেদাভেদ নয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। কোনভাবে বাংলার এই সম্প্রীতি যাতে কেউ বিনষ্ট করতে না পারে তার জন্য সচেষ্ট রাজ্য প্রশাসন।

ইদ ও রামনবমী নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে রাজ্য প্রশাসন সতর্ক। রাজনৈতিক স্বার্থে কেউ এই দুই উৎসবকে সামনে রেখে বাংলায় অশান্তির আবহ ছড়ানোর চেষ্টা করলে কড়া পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে প্রশাসন। পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে জানানো হয়েছে যেন কেউ কোনোরকম প্ররোচনায় পা না দেন।

সাম্প্রদায়িক উস্কানি মূলক কার্যকলাপ কড়া হাতে মোকাবিলা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী লন্ডন সফর শেষ করে কলকাতায় ফিরেছেন। অক্সফোর্ডে ঐতিহাসিক বক্তৃতায় বাংলার সম্প্রীতির কথা তুলে ধরেছেন। বিবিধের মাঝে ঐক্যের কথা তুলে ধরেছেন। যে কথা বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে বারবার বলে থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাংলার এই সম্প্রীতির ছবিটা অক্সফোর্ডের সেই বক্তৃতায় তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী যা পড়ুয়া-গবেষক সহ বিভিন্ন দেশের আমন্ত্রিত প্রতিনিধিদের বাংলার প্রতি সম্মান আরও বাড়িয়ে তোলে। বাংলার দুর্গা পুজো ইউনেস্কোর স্বীকৃতি লাভ করেছে। পুজোর দিন গুলিতে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় হয়। সব ধর্মের মানুষ অংশগ্রহণ করেন উৎসবে।

শ্রীচৈতন্যদেব, স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণদেবের ভাবধারায় বিশ্বাসী বাঙালি উৎসবের মধ্যে কোনদিন খোঁজার চেষ্টা করেন না কে কোন ধর্মের। বাংলার সম্প্রীতির এই প্রবাহমান ধারা যুগ যুগ ধরে বয়ে চলেছে। রাজনৈতিক স্বার্থে কেউ এই সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চাইলেও বাংলার মানুষ তা রুখে দেবে বলেই বিশ্বাস।

Related Articles